ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে যেকোনো সময় মন্ত্রিসভায় আলোচনা হবে বলে আশা ব্যক্ত করেছেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু।এই আইনে নিয়ে মন্ত্রিসভায় আলোচনা না হওয়ায় ‘তিন মন্ত্রী কথা রাখেননি’ বলে সম্পাদক পরিষদ যে মন্তব্য করেছে তাকে হৃদয়বিদারক ও দুঃখজনক বলেছেন তিনি।
সচিবালয়ে রোববার (১৪ অক্টোবর) সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, “আমরা আশা করছি যেকোনো সময় (মন্ত্রিসভায়) আলোচনাটা হবে এবং আলোচনা করলে আবারো এডিটর্স কাউন্সিল ও সাংবাদিক নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে মিলিত হব। আলোচনাটা চালু আছে, বন্ধ হয়ে যায়নি।
আশ্বাস দেওয়ার পরেও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে মন্ত্রিসভায় আলোচনা না হওয়ায় এই আইনের বিতর্কিত নয়টি ধারা সংশোধনের দাবিতে আগামী ১৫ অক্টোবর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে সম্পাদক পরিষদ।
সম্পাদক পরিষদ এর আগে একই কর্মসূচি দিলেও তথ্যমন্ত্রীর অনুরোধে তা স্থগিত করা হয়। পরে সম্পাদকরা তথ্যমন্ত্রী, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার এবং প্রধানমন্ত্রীর তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরীর সঙ্গে বৈঠক করেন।
ওই বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছিল ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে সম্পাদক পরিষদের আপত্তির বিষয়টি মন্ত্রিসভায় আলোচনার জন্য তোলা হবে এবং মন্ত্রিসভায় আলোচনার পর আবারও তিন মন্ত্রী সম্পাদক পরিষদের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন।
ওই সিদ্ধান্তের পর মন্ত্রিসভার দুটি বৈঠক হলেও কোনোটিতেই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে আলোচনা হয়নি। এরমধ্যে গত ৮ অক্টোবর ডিজিটাল নিরাপত্তা বিলে সই করেছেন রাষ্ট্রপতি।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে সম্পাদক পরিষদের আপত্তির বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীকে ‘পরিস্থিতিটা’ অবহিত করা হয়েছে জানিয়ে ইনু বলেন, “কিন্তু মন্ত্রিসভায় আলোচনার পরিবেশটা ছিল না বলে হয়নি।”
সম্পাদক পরিষদের মানববন্ধন কর্মসূচি ঘোষণার বিষয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, “আমরা তো গণতান্ত্রিক পরিধির ভেতর কাজ করছি। সাংবাদিকরা মানববন্ধন করবেন, কোনো দাবি লিখিতভাবে করতে পারেন, সাংবাদিক সম্মেলন করে বলতে পারেন, মিছিল, মানববন্ধন করে করতে পারেন- এগুলো সব দাবি তোলার পন্থা।
“এগুলো গণতান্ত্রিক পন্থা, সেই পন্থা অবলম্বন করলে আমাদের তো এ ব্যাপারে কোনো মন্তব্য নেই। আমরা শুধু বলব যে আপনি মানববন্ধ করুন, আর মানববন্ধন না করুন আমরা আলোচনায়ে আছি, আলোচনার ভেতরে থাকব।”
ডিজিটাল নিরাপত্তা বিলে সই করা রাষ্ট্রপতির রুটিন কাজ জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, “আমাদের কাজ যদি সংশোধন করতে হয় করব, সংসদ তো আছে। সরকার তো আছে, সুতরাং আলোচনাটা হচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ।”
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ৮, ২১, ২৫, ২৮, ২৯, ৩১, ৩২, ৪৩ ও ৫৩ ধারা নিয়ে সম্পাদক পরিষদ আপত্তি জানিয়েছে আসছে।