দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলা, পৌরসভা এবং ইউনিয়ন থেকে যেসব মেম্বার ও চেয়ারম্যান ত্রাণের চাল চুরির দায়ে অভিযুক্ত হচ্ছেন তাদের বিষয়ে কঠোর হচ্ছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। এরই মধ্যে তাদের ব্যাপারে বিস্তারিত তথ্য জানার পাশাপাশি ত্রাণের চাল বিতরণে ইউএনওদের নজরদারি বাড়াতে বলেছেন স্থানীয় সরকারমন্ত্রী।
সংশ্লিষ্টরা বলেন, দেশে করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের প্রেক্ষাপটে কর্মহীনদের সরকারি খাদ্য সহায়তা প্রকল্পের ত্রাণ বিতরণে প্রতিদিনই নানা অনিয়মের অভিযোগ আসছে। এর মধ্যে নাটোরের সিংড়ায় ত্রাণের ১৩ বস্তা চাল এবং এক ইউপি সদস্যসহ ৩ জনকে আটক করেছে উপজেলা প্রশাসন। কিশোরগঞ্জের ভৈরবে ত্রাণের তালিকা তৈরিতে টাকা নেয়ায় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যসহ দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে ত্রাণের খাদ্যসামগ্রী কেড়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে ৩ নং মির্জাপুর ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল আবছারের বিরুদ্ধে। যশোরের একটি গুদামে অভিযান চালিয়ে সরকারি ৮০ বস্তা চাল জব্দ করেছে গোয়েন্দা পুলিশ। নওগাঁয় একটি বাড়ি থেকে ১৪ বস্তা সরকারি খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ১০ টাকা কেজির চাল উদ্ধার করা হয়েছে। গাইবান্ধাতে সরকারের ১০ টাকা কেজি দরের বিক্রির চাল উদ্ধার করেছে পুলিশ। বগুড়ায় ১০ টাকা কেজি দরের চাল নিয়ে মহিষাবান ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. ওয়াজেদ হোসেন এবং কুতুবপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি গাজিউল হকের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।
করোনার প্রকোপের সময় সরকার ত্রাণ দিলেও দেশজুড়ে লুটপাটের মহোৎসবের বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ব্যাপকভাবে আলোচিত হচ্ছে। গতকাল অনেকেই ফেসবুকে লেখেন, করোনা রোগীর চেয়ে ত্রাণের চাল চুরির দায়ে অভিযুক্ত মেম্বার, চেয়ারম্যানের সংখ্যা বেশি। তবে এর বিপরীতে অন্য চিত্রও রয়েছে। দেশজুড়ে কিছু মেম্বার, চেয়ারম্যান রয়েছেন যারা সত্যি সত্যি এই সংকটে তালিকা করে ত্রাণ দিয়ে যাচ্ছেন।
জানতে চাইলে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেন, যেসব মেম্বার, চেয়ারম্যান চাল চুরির দায়ে দোষী সাব্যস্ত হবেন, তারা রক্ষা পাবেন না। মন্ত্রণালয় থেকে আগেই মেসেজ দেয়া আছে। নতুন করে সব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের দিয়ে বলা হচ্ছে, কোথাও যেন ত্রাণের চাল লুটপাট না হয় সে বিষয়ে কড়া নজরদারি রাখতে। যারা গরিবের খাবার চুরি করবে তাদের বিষয়ে মন্ত্রণালয়ে লেখে পাঠানো হলে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে নিশ্চিত করেন তিনি। মন্ত্রী সিলেটের একটি উদাহরণ দিয়ে বলেন, সেখানকার একজন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি চাল চুরিতে ধরা খাওয়ার পর বিষয়টি মন্ত্রীর নজরে এসেছে। এরপরই সিলেটের প্রশাসনকে মন্ত্রী নির্দেশ দিয়ে বলেছেন, ওই জনপ্রতিনিধির বিষয়ে দ্রুত মন্ত্রণালয়ে লিখে পাঠাতে। যারা অভিযুক্ত হবে তারা কোনোদিনই মাফ পাবে না।