বরগুনার আমতলীতে স্কুল ফিডিংয়ের বিস্কুট না দিয়ে দপ্তরি মাহবুব আলমের বিরুদ্ধে শিশু শ্রেণির ছাত্র সৃজন হোসেন (৬) ও তার ভাই সিয়ামকে (৯) মারধরের অভিযোগ উঠেছে। গতকাল বুধবার উপজেলার খাকদান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় স্বজনরা আহত দুই ছাত্রকে উদ্ধার করে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছে।
আজ বৃহস্পতিবার (১৪ মে) ছাত্রের বাবা আ. ছালাম ঘটনার সাথে জড়িত দপ্তরি মাহবুব আলমসহ তিন জনের নামে আমতলী থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন।
জানা গেছে, আহত সৃজন হোসেন ও সিয়াম হোসেন খাকদান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিশু শ্রেণি ও ৩য় শ্রেণির ছাত্র। বুধবার ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের স্কুল ফিডিংয়ের বিস্কুট বিতরণ করা হয়। ওই বিস্কুট আনতে সৃজন ও সিয়াম বিদ্যালয়ে যায়। এ সময় বিদ্যালয় দপ্তরি মো. মাহবুব আলম ওই দুই ভাইকে বিস্কুট না দিয়ে তাড়িয়ে দেয়। পরে ছাত্র সিয়াম এর প্রতিবাদ করলে ওই দপ্তরি দুই ভাইকে কিল ঘুষি দেয়। এতে শিশু সৃজনের চোখে জখম হয়।
খবর পেয়ে ওই দুই ছাত্রের মা মাহফুজা খানম মীম ঘটনাস্থলে গেলে তাকেও অকথ্য ভাষায় গালাগাল করে মাহবুব। পরে ওই দুই ছাত্রের মা এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক মো. আনোয়ার হোসেন মন্টুর নিকট গেলে তিনি এর কোনো প্রতিকার করেনি। ঘটনার পরপরই স্বজনরা আহত সৃজনকে উদ্ধার করে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসে। ওই হাসপাতালে সৃজনকে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার ছাত্রের বাবা আবদুস ছালাম বাদি হয়ে দপ্তরি মাহবুব আলমকে প্রধান করে তিন জনের নামে আমতলী থানায় লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন।
আহত স্কুল ছাত্র সৃজনের বাবা আবদুস সালাম দৈনিক শিক্ষা ডটকমকে বলেন, বিস্কুট না দিয়ে বিদ্যালয়ের দপ্তরি মাহবুব আলম আমার দুই শিশুপুত্রকে মারধর করেছে। আমি এ ঘটনার বিচার চাই।
দপ্তরি মাহবুব আলম দুই শিশু ছাত্রকে মারধরের কথা অস্বীকার করে দৈনিক শিক্ষা ডটকমকে বলেন, আমি গতকাল বিদ্যালয়ে ছিলাম না। আমার পরিবর্তে আমার ভাই সরোয়ার হোসেন বিস্কুট বিতরণ করেছে।
বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক মো. আনোয়ার হোসেন মন্টুর মুঠোফোনে বারবার যোগযোগ করা হলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে।
আমতলী থানার ডিউটি অফিসার এসআই শহীদুল ইসলাম দৈনিক শিক্ষা ডটকমকে বলেন, এ বিষয়ে একটি অভিযোগ পেয়েছি। ওসি স্যারের সাথে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার নিখিল চন্দ্র দৈনিক শিক্ষা ডটকমকে বলেন, ওই শিশুর চোখে ফুলা ও জখমের চিহ্ন রয়েছে। শিশুটিকে যথাযথ চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
আমতলী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. মজিবুর রহমান দৈনিক শিক্ষা ডটকমকে বলেন, এ বিষয়টি আমি শুনেছি। ওই ছাত্রের বাবাকে এ বিষয়ে থানায় অভিযোগ দিতে বলেছি।
আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মনিরা পারভীন দৈনিক শিক্ষা ডটকমকে বলেন, এ বিষয়টি লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।