ভারতীয় সংসদে পাস হওয়া বিতর্কিত সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের জেরে দিল্লিতে পুলিশের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে জনতাও যোগ দিলে পুরো এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। একপর্যায়ে বিক্ষোভকারীরা বাস ভাঙচুর করে ও আগুন দেয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ ও লাঠিচার্জ করে।
রোববার (১৫ ডিসেম্বর) বিকেলে দিল্লির দক্ষিণে এ ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো।
জামিয়া মিল্লিয়া ইসলামিয়া (জেএমআই) নামে একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এক শিক্ষার্থী জানায়, তারা শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করলে পুলিশ তাদের উপর চড়াও হয়। এতে পুলিশের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষে পুরো এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ টিয়ার গ্যাস ও লাঠিচার্জ করলে বিক্ষোভকারীরা বেশ কয়েকটি বাসে ভাঙচুর চালায় ও অন্তত তিনটি গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়।
সংঘর্ষের কারণে দিল্লির দক্ষিণের নিউ ফ্রেন্ডস কলোনিসহ আশপাশের এলাকায় যান চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে ট্রাফিক পুলিশ। বিক্ষোভকারীরা দিল্লি-মাথুরা সড়ক বন্ধ করে দিয়েছেন।
দিল্লি পুলিশ জানিয়েছে, তারা ধারণা করেছিলো সর্বোচ্চ দুই শতাধিক বিক্ষোভকারী অবস্থান নিয়েছেন। কিন্তু শিক্ষার্থী-জনতা মিলে তা হাজারের বেশি।
এদিকে ভারতের পূর্বাঞ্চলের রাজ্য ঝাড়খণ্ড সফরে এক বক্তব্যে দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেছেন, ভারতীয় সংসদে পাস হওয়া সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন ১০০০ শতাংশ সঠিক। তিনি বলেন, মোদী ও ভারতীয় সংসদ এ আইনের মাধ্যমে দেশ বাঁচিয়ে দিলো।
সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন পাস হওয়ায় গত কয়েকদিন ধরে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় বিভিন্ন রাজ্যে বিক্ষোভ চলে আসছে। এসব বিক্ষোভে বেশ কয়েকজন নিহত হওয়ার খবরও জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ কারফিউ জারি করে। বন্ধ করে দেওয়া হয় ইন্টারনেট সেবা।
সম্প্রতি ভারতীয় সংসদে পাস হয়েছে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন। নতুন পাস হওয়া আইনে ১৯৫৫ সালের ভারতীয় নাগরিকত্ব আইন সংশোধন করে বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে যাওয়া হিন্দু, বৌদ্ধ, শিখ, জৈন, পারসিসহ অমুসলিম অবৈধ অভিবাসীদের নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। এ আইনটিকে ‘বৈষম্যমূলক’ ও ‘অসাংবিধানিক’ আখ্যা দিয়েছেন বিশ্লেষকরা।