আর্থিক অনিয়ম দুর্নীতি, দায়িত্ব পালনে উদাসীনতা ও প্রশাসনিক কাজে অদক্ষতার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় গোপালগঞ্জ পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মহানন্দ মজুমদারকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। একইসাথে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। রোববার (২১ আগস্ট) কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে বরখাস্ত সংক্রান্ত চিঠি পাঠানো হয়েছে।
চিঠিতে বলা হয়, ২০১৭-২০১৮ শিক্ষাবর্ষে ক্রয়খাতে বরাদ্দকৃত ৩০ লাখ টাকা ব্যয় করা হয়েছে। পিপিআর-২০০৮ অনুযায়ী প্রতিবছর সর্বোচ্চ ১৫ লাখ টাকা কোটেশন প্রক্রিয়ায় ব্যয় বিধান রয়েছে। এক্ষেত্রে অধ্যক্ষ পিপিআর অনুসরণ করেননি বলে অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে।
ক্রয় পরিকল্পনা ৫টি ক্রয় কোটেশন প্রক্রিয়ায় কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের মঞ্জুরি থাকলেও ৭টি ক্রয় কোটেশনে প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছেন অধ্যক্ষ মহানন্দ মজুমদার। পিপিআর ২০০৮ অনুযায়ী প্রতিবছর ১০ লাখ টাকা সরাসরি প্রক্রিয়ায় ক্রয়ের কথা থাকলেও ১৪ লাখ টাকা ব্যয় করা হয়েছে। এছাড়া ক্রয় পরিকল্পনা অনুযায়ী একটি ক্রয় ওটিএম এ সম্পন্ন করা হয়নি। এর ফলে পিপিআর এর বিধি বিধান লঙ্ঘিত হয়েছে বলে আসা অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে অধ্যক্ষ মহানন্দ মজুমদারের বিরুদ্ধে।
চিঠিতে আরও বলা হয়, অধ্যক্ষ মহানন্দ মজুমদার সরকারি দায়িত্ব পালনে উদাসীনতা, প্রশাসনিক কাজে অদক্ষতা, আর্থিক অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে সরকারের ভবমূর্তি ক্ষুন্নের নজির সৃষ্টি করেছেন।
জানা গেছে, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগের উপসচিব মো. আব্দুর রহিম এবং কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. সামসাদ খলিল গত ১১ আগস্ট গোপালগঞ্জ পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট পরিদর্শনে যান। পরিদর্শনকালে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মহানন্দ মজুমদারের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়।
অধ্যক্ষ মহানন্দ মজুমদারের বিরুদ্ধে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা ২০১৮ এর বিধি ৩ এর উপবিধি (খ) অনুয়ায়ী অসদাচরণ ও বিধি ৩ এর উপবিধি (ঘ) অনুয়ায়ী দুর্নীতির অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় জনস্বার্থে তাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করে বিভাগীয় মামলা রুজু করা বিধিসম্মত ও আবশ্যক বলে মন্তব্য করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
তাই সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা ২০১৮ এর বিধি ১২ এর উপবিধি (১) অনুয়ায়ী গোপালগঞ্জ পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মহানন্দ মজুমদারকে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা রুজু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগ।
এদিকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগ থেকে ১৮ অক্টোবর জারি করা প্রজ্ঞাপনে বরগুনা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. মইনুল আহসানকে গোপালগঞ্জ পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের উপাধ্যক্ষ করে বদলি করে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বলেও জানা গেছে।