লামা উপজেলার ১৫টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে চলছে পাঠদান ও শ্রেণি শিক্ষা কার্যক্রম। অতিরিক্ত ঝুঁকিপূর্ণ এ সকল প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নতুন ভবন নির্মাণ করার জন্য প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগে অসংখ্য আবেদন জানানো হয়েছে মর্মে প্রধান শিক্ষকরা জানিয়েছেন। প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগের লামা উপজেলা অফিস জানিয়েছে, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে অধিকতর ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের তালিকা গত দুই/তিনবছর ধরে বার বার প্রেরণ করার পরও অজ্ঞাত কারণে পুনঃনির্মাণের বা নতুন ভবন নির্মাণের কোনো ব্যবস্থা হয়নি। ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলো মেরামত করে ব্যবহার করার উপযোগিতাও হারিয়েছে বলে জানা গেছে। ইত্তেফাকের এক প্রতিবেদনে এই সব তথ্য দেয়া হয়েছে।
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, লামা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের দেওয়া তথ্যমতে, লামা উপজেলায় বর্তমানে ১৫টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় অধিকতর ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। এসকল বিদ্যালয়ের ঝুঁকিপূর্ণ ভবন ছাড়া পাঠদান ও শ্রেণি শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করার জন্য বিকল্প কোনো ভবন নেই। বিদ্যালয়গুলো হলো: রোয়াজা পাড়া, ত্রিডেবা, ইয়াংছামুখ, দরদরী, দরদরী পাড়া, রাজবাড়ী, ফাইতং নয়াপাড়া, বটতলী পাড়া, ২নং চাম্বি, ফাঁসিয়াখালী হেডম্যান পাড়া, ঠান্ডাঝিরি, লেমুপালং, কলিঙ্গাবিল, লামা আদর্শ ও শিলেরতুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।
ইয়াংছামুখ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী উচিনু মার্মা ও হালিমা জান্নাত জানান, তাদের বিদ্যালয় ভবনের শ্রেণিকক্ষের বিমে ফাটল ধরে ধসে পড়ছে। কিছুদিন পূর্বে দুপুরের বিরতির সময় ছাদ ও বিম ভেঙে সুরকিসহ পলেস্তারা খসে পড়েছে। অল্পের জন্য বড় ধরনের দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পেয়েছে শিক্ষার্থীরা। এই উপজেলার ঝুঁকিপূর্ণ অন্য বিদ্যালয় ভবনগুলোর একই অবস্থা। রোয়াজা পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুর রহমান জানান, গত কয়েক বছর ধরে বিদ্যালয় ভবনের ঝুঁকিপূর্ণের বিষয়টি শিক্ষা অফিসে বার বার জানানোর পরও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। যে কোনো মুহূর্তে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। দরদরী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি শীতা রঞ্জন বড়ুয়া জানান, বিদ্যালয়ের ঝুঁকিপূর্ণের করুণ চিত্র শিক্ষা অফিসে অসংখ্যবার জানানো হয়েছে। চাহিদা ও প্রয়োজনীয়তার আলোকে এই উপজেলায় বিদ্যালয় ভবন নির্মাণ না করার অভিযোগও আছে।
লামা উপজেলা প্রকৌশলী নাজেমউদ্দিন জানান, ঝুঁকিপূর্ণ কোনো বিদ্যালয়ের তালিকা তাদের কাছে নেই। বর্তমানে লামা এলজিইডিতে সাতটি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবনের কাজ চলমান ও ৯টি টেন্ডারের প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। লামা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা তপন কুমার চৌধুরী জানান, ত্রিডেবা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় যে কোনো মুহূর্তে ধসে পড়তে পারে। তারপরও বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় ঝুঁকিপূর্ণ এই ভবনে পাঠদান চলছে। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর ঝুঁকিপূর্ণ বিদ্যালয়ের তালিকা চেয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ বিদ্যালয়ের তালিকা জরুরিভিত্তিতে অধিদপ্তরে জানানো হয়েছে।
লামা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নূর-এ-জান্নাত রুমি জানান, লামা উপজেলার প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর ভবনের চাহিদা ও ঝুঁকিপূর্ণের অবস্থা নিরূপণ করে যথাসময়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে প্রেরণ করা হয়। বরাদ্দ প্রাপ্তি সাপেক্ষে এলজিইডি নির্ধারিত নিয়মে ভবন নির্মাণ করে থাকেন। প্রশাসনের পক্ষ থেকে যথাযথ তদারকি অব্যাহত রয়েছে।