আইন যা-ই হোক, সরকারি দুর্নীতিবাজ কর্মচারীদের উচ্ছ্বসিত হওয়ার কিছু নেই বলে মন্তব্য করেছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ। স্বাধীন সংস্থা হিসেবে দুর্নীতি দমন কমিশন কারও অনুমতি নিয়ে কাজ করবে না বলেও জানান তিনি। সোমবার(২৭ আগস্ট) সকালে সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ের সামনে সরকারি চাকরি আইন- ২০১৮ সম্পর্কে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
ওই আইন ২০ আগস্ট মন্ত্রিসভার বৈঠকে অনুমোদন দেওয়া হয়। সেখানে ফৌজদারি অপরাধে অভিযুক্ত সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের গ্রেপ্তারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমোদনের বিধান রাখা হয়েছে।
এ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ইকবাল মাহমুদ বলেন, স্বাধীন কমিশন যত দিন আছে, তত দিন দুর্নীতি করে পার পাওয়া এত সহজ না।
নতুন আইনের কারণে দুদকের দায়িত্ব পালনে কোনো সমস্যা হবে কি না, তা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘কেউ বলে দুদক নখদন্তহীন বাঘ, ওই জমানা আর ফিরে আসবে না। দুদক একটি স্বাধীন সংস্থা, দুদকের আইন আছে। যতক্ষণ পর্যন্ত দুদককে পরাধীন সংস্থা করা না হচ্ছে, তত দিন কিন্তু স্বাধীন থাকবে। দুদক কারও অনুমতি নিয়ে কাজ করবে না, এটা আমি স্পষ্টভাবে বলতে চাই।’
ইকবাল মাহমুদ বলেন, ‘আমি পত্রিকায় দেখেছি, আইনটা পাস হতে এখনো সময় লাগবে। পার্লামেন্টে যাবে, বিতর্ক হবে। তবে আমার প্রতিক্রিয়া হলো কোনো আইনই দুর্নীতিবাজদের রক্ষা করার জন্য হয় না। সৎ কর্মচারীদের সুরক্ষা দেওয়ায় আইনের প্রয়োজন আছে, এতে কোনো সন্দেহ নেই। আমরাও চাই, সৎ যেসব কর্মকর্তা-কর্মচারী আছেন, তাঁদের সুরক্ষার প্রয়োজন। যে আইনই হোক না কেন, জনগণের ইচ্ছা ও কল্যাণেই আইন হয়, জনকল্যাণেই আইন হবে—আমি এটা প্রত্যাশা করি।’
ইকবাল মাহমুদ বলেন, ‘আইনটা যেভাবেই পাস হোক না কেন, যেসব অসৎ ও দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা রয়েছেন, তাঁদের কিন্তু উচ্ছ্বসিত হওয়ার কোনো কারণ নেই। তাঁদের আইনের আওতায় আনতে দুর্নীতি দমন কমিশনের কোনো অসুবিধা হবে না। আমার বিশ্বাস, দুর্নীতিবাজদের সুরক্ষার জন্য আইন হবে না। কমিশন যত দিন আছে, তত দিন দুর্নীতি করে পার পাওয়া এত সহজ না।’
আইন চূড়ান্তভাবে পাস হয়ে গেলে দুদকের কোনো সমস্যা হবে কি না, তা জানতে চাইলে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমরা এ ব্যাপারে সরকারের সঙ্গে কোনো কথা বলতে রাজি না। কথা বলার প্রয়োজনও নেই। আমরা মনে করি, সরকার দুর্নীতিবাজদের সুরক্ষার জন্য কোনো আইন তৈরি করবে না। প্রস্তাবিত আইনটা দুর্নীতিবাজদের সুরক্ষার জন্য আইন না, বরং এটাকে আমি দেখি সৎ কর্মচারীদের সুরক্ষার আইন। তবে গ্রেপ্তারের বিষয়টি সম্পর্কে এই আইনের কী আছে আমি জানি না। একেক পত্রিকায় একেক রকম দেখেছি।’