দূর্যোগে অনলাইন স্কুল ও বেসরকারি শিক্ষকরা - দৈনিকশিক্ষা

দূর্যোগে অনলাইন স্কুল ও বেসরকারি শিক্ষকরা

অধ্যক্ষ মুজম্মিল আলী |

শতাব্দীর ভয়াবহতম বৈশ্বিক মহামারি করোনা দূর্যোগে কেবল আমাদের দেশে নয়, গোটা পৃথিবীর স্বাস্থ্য ও শিক্ষাখাত বেশি পরিমাণে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এখনো ক্রমাগত ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। করোনা চলে যাবার পর এ দু'টি জায়গা ঠিকঠাক হতে কতো দিন সময় লাগে, কে জানে ? মহামারির শুরুতেই এ দু'টি খাত যেভাবে বিপর্যস্ত হয়েছে, তাতে  স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসতে বহুদিন লাগবে। অবশ্য, করোনা মোকাবেলায় স্বাস্থ্য খাতে শুরু থেকেই  রাষ্ট্রীয় তৎপরতা ও অতিরিক্ত দৃষ্টি থাকায় ক্ষয়ক্ষতি কিছুটা কাটিয়ে ওঠা গেলেও শিক্ষার ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে অনেক সময় লেগে যেতে পারে। শিক্ষায় যেসব ক্ষত সৃষ্টি হবে, সেসব সহজে দূর হবে না। আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে দীর্ঘ নয়মাস শিক্ষা কার্যক্রম স্তব্ধ থাকায় অটোপাস ও নামমাত্র পরীক্ষা নেবার কারণে শিক্ষায় এক রকম বিশৃঙ্খলা দেয়। সেই থেকে ক্রমশ পরীক্ষায় নকল প্রবণতা শুরু হয়। নোট গাইডের অনুপ্রবেশ ঘটে। কোচিং বাণিজ্যের প্রসার ঘটে। পাশের হার বৃদ্ধি পায়। শিক্ষার মান নিম্নগামী হতে শুরু করে। এখন তো প্রায় তলানিতে এসে নেমেছে । সেই থেকে নানা অপবাদের ভেতর দিয়ে আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা চলমান আছে।

করোনাকাল আর কতো দিন চলবে, কেউ বলতে পারে না। তবে, শুরুর মতো করোনা নিয়ে এখন  তেমন আতংক নেই। আস্তে আস্তে অনেক দেশ থেকে লকডাউন উঠিয়ে নেয়া হয়েছে। অর্থনৈতিক কার্যক্রম সচল হতে শুরু করেছে। মানুষ কিছুটা হলেও আগের চেয়ে স্বাস্থ্য সচেতন হয়ে উঠছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার অনুশীলন চলছে। করোনাকে মানিয়ে জীবনকে এগিয়ে নেবার প্রয়াস সবার মাঝে। জীবন থেমে থাকার কোন বিষয় নয়। জীবনের জন্য জীবিকা অপরিহার্য। জীবনকে সচল রাখতে জীবিকা চালিয়ে নিতে হয়। তাই এখন শুধু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছাড়া সবকিছু খুলে দেয়া হয়েছে। আমাদের দেশে স্বাস্থ্যবিধি আর সীমিত পরিসরের কথা বলা হলেও খুব কম জায়গায় তা মানা হচ্ছে। আগের মতো সবকিছু চলতে শুরু করেছে। কেবল দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমুহ সেই যে মার্চ মাসের মাঝামাঝি বন্ধ হয়েছে, আজ পর্যন্ত খুলেনি। কবে খুলবে, সেও কেউ বলতে পারে না। এক অনিশ্চয়তার মধ্যে আমাদের শিক্ষা কার্যক্রম মুখ থুবড়ে পড়ে আছে। এইচএসসি পরীক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকগণ চরম উৎকন্ঠায় আছেন। গত এপ্রিলে সেটি অনুষ্ঠিত হবার কথা ছিল। পিইসিই ও জেএসসি পরীক্ষা কেন্দ্রীয়ভাবে হবে না তা বলা হয়েছে। বার্ষিক পরীক্ষা কী সময় মতো হতে পারবে? সব মিলিয়ে করোনার দূর্দিনে শিক্ষায় হ-য-ব-র-ল অবস্থা। মনে হয়, যত দিন যাবে অবস্থা আরো খারাপের দিকে ধাবিত হবে।

আমাদের দেশে শিক্ষা নিয়ে কারো খুব মাথা ব্যথা  আছে বলে মনে হয় না। গত ডিসেম্বর মাসে চীনের উহানে করোনা ভাইরাস ধরা পড়ে। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) পূর্বাহ্নেই সেটি বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ার আশংকা প্রকাশ করলেও আমাদের কোন পূর্ব প্রস্তুতি ছিল না। শিক্ষা নিয়ে কোন পরিকল্পনা নেই। শিক্ষার সাথে যারা সংশ্লিষ্ট, তাদের কোন মাথা ব্যথা আছে বলে মনে হয় না । শিক্ষা নিয়ে যুগোপযোগি ও সময়োপযোগি সিদ্ধান্ত নিতে না পারলে তা থেকে কাঙ্খিত ফল কী করে আশা করা যায় ? করোনাকালে আমাদের শিক্ষার যে বেহাল চিত্র ফুটে উঠেছে, তা সত্যি উদ্বেগ ও উৎকন্ঠার কারণ।

দেশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা না খোলা নিয়ে আজ নানা জনে নানা কথা বলছেন। এ নিয়ে রীতিমত বিতর্ক শুরু হয়ে গেছে। কেউ স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত আকারে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেবার পক্ষে। কেউ এর বিপক্ষে। কেউ বলছেন-জীবনের জন্য শিক্ষা অপরিহার্য। কেউ বলছেন- শিক্ষার চেয়ে জীবন বড়। কেউ মনে করেন- আগে জীবন, পরে শিক্ষা। শিক্ষার জন্য জীবন নয়, জীবনের জন্য শিক্ষা। 

করোনার মতো ভয়াবহ ও দীর্ঘস্থায়ী দূর্যোগের সময় স্বাভাবিক শিক্ষাদান কার্যক্রমের বিকল্প একটি ব্যবস্থা আগে থেকেই ঠিক করে রাখা উচিত ছিল। তাহলে দূর্যোগ আরম্ভ হবার অব্যবহিত পরেই বিকল্প ব্যবস্থায় পাঠদান কার্যক্রম শুরু করা যেতো। দূর্যোগ কিংবা মহামারি কোনদিন বলে কয়ে আসে না। তাই, শিক্ষা বিশেষজ্ঞ ব্যক্তিবর্গের সম্ভাব্য যে কোন দীর্ঘস্থায়ী দূর্যোগ বা মহামারি বিবেচনায় নিয়ে কমপক্ষে এক বছরের জন্য একটি বিকল্প পন্থা নির্ধারণ করে রাখা উচিত ছিল।  আমাদের দেশে বর্তমান করোনাকালীন সময়ে বিকল্প পাঠদান হিসেবে 'অনলাইন স্কুল' দিনে দিনে জনপ্রিয় হয়ে উঠলেও এর পেছনে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা তেমন দৃশ্যমান নয়। কেবল সংসদ বাংলাদেশ টেলিভিশনে 'আমার ঘরে আমার স্কুল' পরিচালনা না করে বিটিভিতে তা নিয়মিত প্রচার করার ব্যবস্থা নিলে সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা আরো দৃশ্যমান হতো। অনলাইন স্কুল কার্যক্রমের জন্য কম্পিউটার, ল্যাপটপ ও স্মার্টফোন ব্যবহারের জন্য শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের নেটওয়ার্ক ফ্রি করে দিলে আরো বেশি সংখ্যক শিক্ষার্থীদের এই পাঠদান কার্যক্রমের আওতায় নিয়ে আসা যেত।

শিক্ষার সর্বস্তরে শ্রেণি কার্যক্রম দূর্যোগকালীন কিংবা দূর্যোগ পূর্ব ও পরবর্তি পরিস্থিতে অনলাইনে পরিচালনার বিষয়ে এখন থেকে ভাবতে হবে। পরিবর্তিত বিশ্ব পরিস্থিতে ট্র্যাডিশনাল পাঠদান কার্যক্রম এক সময় গুরুত্ব হারিয়ে বসলে অনলাইন শিক্ষাদান কার্যক্রম দিনে দিনে আরো গ্রহণযোগ্যতা অর্জন করবে। দূর্যোগকালীন সময়ে তো বটে, কোচিং ও নোট গাইড বাণিজ্য চিরতরে উচ্ছেদ করতে হলে অনলাইন শিক্ষাদান কার্ক্রম একেবারে প্রান্তিক শিক্ষার্থীদের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে দিতে হবে। বিশ্বমানের যুগোপযোগি শিক্ষাব্যবস্থা গড়ে তুলতে ই-বুক, ই-লার্নিং এবং সর্বোপরি অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রমের সাথে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের পরিচয় করিয়ে দিতে হবে। অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রমের বহু সুবিধা আছে। অনলাইন ক্লাসগুলো সংশ্লিষ্ট চ্যানেল সাবসক্রাইভ করে যে কোন সময ঘুরিয়ে ফিরিয়ে দেখা যায়। এতে পাঠটি শিক্ষার্থীরা সহজে আয়ত্ব করতে পারে। এ জাতীয় পাঠদানে সময়ের সীমাবদ্ধতার কোন প্রয়োজন হয়না।

সকাল বিকাল যেকোন সময় অনলাইন ক্লাস সম্প্রচার করা যায়। স্মার্টফোন ও নেটওয়ার্ক সহজলভ্য করে দিলে শতভাগ শিক্ষক ও শিক্ষার্থী অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রমের আওতায় আসতে তেমন একটা সময় লাগবে না। অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রমের প্রত্যক্ষ সুফল এই যে, এতে শিক্ষকদের পারফরম্যান্স অনেক উন্নত হয়। শ্রেণিকক্ষে পাঠদানের চেয়ে অনলাইনে পাঠ দেবার সময়  শিক্ষক অধিকতর সচেতন ও পূর্ব প্রস্তুতি নিয়ে থাকেন। শিক্ষার্থীরাও অধিকতর মনযোগী হবার সুযোগ পায়। আমাদের সৌভাগ্য এই যে, ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের প্রচেষ্ঠা অব্যাহত থাকায় করোনাকালে বিভিন্ন ক্ষেত্রে আমরা এর সুফল পেয়েছি। বিশেষ করে শিক্ষার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে তথ্য প্রযুক্তির জ্ঞান ব্যবহার করে অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করা সম্ভব হচ্ছে। আজ দেশ ডিজিটালাইজেশন না হলে আমাদের কী হতো ? একদিন যারা 'ডিজিটাল বাংলাদেশ' শুনে হাসাহাসি করতো, তারা এখন কী বলবে ?  

অদূর ভবিষ্যতে অনলাইন শ্রেণি কার্যক্রম আরো বেশি জনপ্রিয় হয়ে উঠবে। যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যত বেশি অনলাইন ক্লাস পরিচালনা করতে পারবে, সে প্রতিষ্ঠানের দিকে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের ঝোঁক বাড়বে। যে শিক্ষক যত বেশি ক্লাস অনলাইনে আপলোড দিতে পারবেন, তিনি অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের কাছে তত বেশি জনপ্রিয় হয়ে উঠবেন। শুধু কী তাই ? সেই প্রতিষ্ঠান বছর বছর ভাল রেজাল্ট করবে এবং শিক্ষকের পেশাগত উৎকর্ষতা দিন দিন বৃদ্ধি পাবে। সরকার প্রতি বছর দশম শ্রেণি পর্যন্ত বিনামুল্যে পাঠ্যপুস্তক দিয়ে থাকে। একজন শিক্ষার্থীকে প্রথম শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত পাঠ্য বই দিতে সরকারের যে খরচ হয়, তা দিয়ে একটি করে ট্যাব কিংবা স্মার্টফোন কিনে দেয়া যেতে পারে। সব স্কুল-কলেজে শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব স্থাপন করে তা শিক্ষকদের ব্যবহারের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া যায়। শিক্ষকগণ ল্যাব ব্যবহার করে অনলাইন ক্লাস তৈরি করতে পারেন। অনলাইন ব্যবহার করে শিক্ষার্থীর কাছ থেকে পাঠ আদায় ও পরীক্ষা নেবার ব্যবস্থা করা যেতে পারে। শিক্ষায় অনলাইন কার্যক্রম বেতার ও টেলিভিশনের সব চ্যানেল থেকে ধারাবাহিক প্রতিদিন ভিন্ন ভিন্ন সময়ে এক-আধ ঘন্টা করে সম্প্রচার করা যেতে পারে।

যে যাই বলি না কেন-শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, শ্রেণিকক্ষ আর শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর মুখোমুখি পাঠদান কার্যক্রম আজ অবধি পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি গ্রহণযোগ্য ও জনপ্রিয় শিক্ষা কার্যক্রম। তাই করোনাকালে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার কারণে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকগণ চরম এক উৎকন্ঠার মধ্যে আছেন। শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা শ্রেণিকক্ষে ফিরে যাবার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন। অভিভাবকেরা সন্তানের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে উদ্বেগ-উৎকন্ঠায় আছেন। সরকারও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেবার চেষ্টায় আছে। কেবল স্বাস্থ্য ঝুঁকির কথা চিন্তা করে বার বার বিষয়টি পিছিয়ে দেয়া হচ্ছে। 

কিছু কিছু অভিভাবক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত পরিসরে খুলে দেবার পক্ষে যুক্তি দেখাচ্ছেন। তারা মনে করেন-একেকদিন একেক ক্লাস প্রতিষ্ঠানে নিয়ে যতটি শ্রেণিকক্ষ আছে তত গ্রুপে শিক্ষার্থীদের ভাগ করে প্রত্যেক গ্রুপে একজন করে শিক্ষক দ্বারা পাঠদান কার্যক্রম চালিয়ে নেয়া যায়। এজন্য একটি সমন্বিত পাঠদান কার্যক্রম প্রণয়ন করতে হবে। আরেক শ্রেণির অভিভাবক মনে করেন- বেশিরভাগ শিক্ষার্থী বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলের ছেলে শিক্ষার্থীরা দিনের বেলা বাড়িতে থাকে না। এরা যত্রতত্র ঘুরে বেড়ায়। বই খাতা নিয়ে মোটেও পড়তে বসে না। বাইরে ঘুরাঘুরির কারণে এদের করোনা সংক্রমণের আশংকা থেকে যায়। তাই, এসব শিক্ষার্থীদের অভিভাবকেরা এখনই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেবার পক্ষে। বেশ কিছুদিন থেকে মাদরাসার হিফয শাখা ও ইদানিং সম্ভবত কওমি মাদরাসাগুলো খুলে গেছে। করোনায় দেশে মৃত্যুহার ও আক্রান্তের সংখ্যা সহনীয় মাত্রায় থাকার কারণে এ শ্রেণির অভিভাবকেরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেবার বিষয়ে অতিশয় উৎসাহী বলে মনে হয়।

শিক্ষা ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় অবশ্যই ভেবে চিন্তে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেবার সিদ্ধান্ত নেবেন। আশা করি এ ব্যাপারে তারা স্বাস্থ্য ও শিক্ষা বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেবেন। প্রয়োজনে তারা এ বিষয়ে একটি পরামর্শক কমিটি গঠন করতে পারেন। দেশের সব জায়গা করোনার সমান ঝুঁকিপূর্ণ নয়। এক্ষেত্রে কম ঝুঁকিপূর্ণ ও অপেক্ষাকৃত কম সংক্রমিত এলাকায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত পরিসরে স্কুল-কলেজ খুলে দেবার বিষয়ে অনেকেই মত প্রকাশ করে থাকেন। এ ব্যাপারে স্থানীয় প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগীয় কর্মকর্তাদের পরামর্শ নেবার বিষয়টিকেও তারা খাটো করে দেখছেন না।

সে যাই হোক, পরিবেশ স্বাভাবিক হলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অবশ্যই খুলে দেয়া হবে। আমেরিকা, ফ্রান্স, দক্ষিণ কোরিয়া , চীন ইত্যাদি দেশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দিয়ে সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় আবার বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। আমাদের এখানে একবার খুলে দিয়ে আবার বন্ধ করে দেয়ার চেয়ে আরেকটু অপেক্ষা করা সমীচিন হবে। তবে, পরীক্ষার বিষয়ে আমার একটি ব্যক্তিগত অভিমত আছে। পিইসি ও জেএসসি পরীক্ষা এই সুযোগে একেবারে উঠিয়ে দেয়া দরকার। তবে অটোপাস নয়। যখন সময় সুযোগ তৈরি হবে তখন মুল্যায়ন তথা পরীক্ষার মাধ্যমে ফলের ভিত্তিতে পরবর্তি শ্রেণিতে উন্নীত করতে হবে। এইচ এস সি'র মতো পাবলিক পরীক্ষা সময় সুযোগে সিলেবাস কিছুটা সংক্ষিপ্ত করে সকাল-বিকাল নেয়া যেতে পারে।

করোনার মতো যে কোন মহামারিতে শিক্ষা ও পরীক্ষা যাতে মুখ থুবড়ে না পড়ে, সেজন্য এখন থেকে বিকল্প উপায় বের করে রাখা উচিত। স্বাভাবিক সময়ের ন্যায় যে কোন দূর্যোগ বা মহামারিতে শিক্ষা কার্যক্রম সচল রাখতে না পারলে যে ক্ষয়ক্ষতি হবে, তা কোনদিন পুষিয়ে নেয়া সম্ভব হবে না। এবারের দূর্যোগে দেশের বিভিন্ন স্থানে যেসব অনলাইন স্কুল চলছে, তার প্রায় শতভাগ বেসরকারি স্কুল-কলেজের শিক্ষকরাই চালাচ্ছেন। এরা হাত পা ঘুটিয়ে বসে থাকলে এবার করোনাকালে আমাদের শিক্ষার বারটা বেজে যেতো। আইসিটি-র উপরে বিদেশে যতো শিক্ষক ট্রেনিং নিয়েছেন, তাদের বেশির ভাগ সরকারি স্কুল-কলেজের শিক্ষক। অথচ বেসরকারি শিক্ষকেরাই স্বাভাবিক সময়ের ন্যায় এই করোনাকালেও শিক্ষার হাল ধরে আছেন। তারাই দেশ ও জাতি গঠনের অতন্ত্র কারিগর। তাদের এই দূর্দিনের ভুমিকার কথা চিন্তা করে শিক্ষা থেকে সরকারি-বেসরকারি বৈষম্য উঠিয়ে দেয়া দরকার।

লেখক : অধ্যক্ষ, চরিপাড়া উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ, কানাইঘাট, সিলেট এবং দৈনিক শিক্ষার সংবাদ বিশ্লেষক।

হাইকোর্টের আদেশ পেলে আইনি লড়াইয়ে যাবে বুয়েট: উপ-উপাচার্য - dainik shiksha হাইকোর্টের আদেশ পেলে আইনি লড়াইয়ে যাবে বুয়েট: উপ-উপাচার্য প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ: তৃতীয় ধাপের ফল প্রকাশ হতে পারে আগামী সপ্তাহে - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ: তৃতীয় ধাপের ফল প্রকাশ হতে পারে আগামী সপ্তাহে ভূমির জটিলতা সমাধানে ভূমিকা রাখবেন নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা - dainik shiksha ভূমির জটিলতা সমাধানে ভূমিকা রাখবেন নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা সর্বজনীন শিক্ষক বদলি চালু হোক - dainik shiksha সর্বজনীন শিক্ষক বদলি চালু হোক ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের বিএসসির সমমান দিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কমিটি - dainik shiksha ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের বিএসসির সমমান দিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কমিটি রায় জালিয়াতি করে পদোন্নতি: শিক্ষা কর্মকর্তা গ্রেফতার - dainik shiksha রায় জালিয়াতি করে পদোন্নতি: শিক্ষা কর্মকর্তা গ্রেফতার কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0052790641784668