দৃষ্টি হারাচ্ছেন নির্যাতনের শিকার কলেজছাত্রী, গ্রেফতার ২ - দৈনিকশিক্ষা

দৃষ্টি হারাচ্ছেন নির্যাতনের শিকার কলেজছাত্রী, গ্রেফতার ২

মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি |

মুন্সীগঞ্জে কলেজছাত্রী লাবনী আক্তার আঁখিকে নির্যাতনের অভিযোগে তার শ্বশুর ও দেবরকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সোমবার (২০ জানুয়ারি) সকালে জেলার টংগিবাড়ি উপজেলার হাতিমারা গ্রামের বাড়ি থেকে তাদের গ্রেফতার করে বলে জানিয়েছে মুন্সীগঞ্জ সদর থানার ওসি আনিচুর রহমান।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন জেলার হাতিমারা গ্রামের রুহুল আমিন ভূইয়া (৫৫) ও তার ছেলে রিফাত ভূইয়া (২১)।

অপর আসামি আঁখির স্বামী ও রুহুল আমিন ভূইয়ার ছেলে হৃদয় ভূইয়া (২৪) ও তার স্ত্রী মাহুফজা বেগম (৫০) আত্মগোপনে রয়েছেন। তাদের ধরতে অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ।

অন্য দিকে, ‘এক বছর অবরুদ্ধ রেখে’ স্বামীসহ শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের নির্যাতনের শিকার মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মুন্সীগঞ্জের সুখবাসপুর গ্রামের আব্দুর রহিমেরে মেয়ে লাবনী আক্তার আঁখি (১৯) দেখতে পাচ্ছেন না বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।

আঁখি চোখে দেখতে পাচ্ছে না উল্লেখ করে সিভিল সার্জন ডা. আবুল কালাম আজাদ বলেন, “কেন দেখতে পাচ্ছে না তা এই মুহূর্তে বলা যাচ্ছে না। অনেক সময় মাথায় আঘাতের কারণে এ রকম হতে পারে অথবা চোখেও কোনো আঘাতের কারণে এটা হয়ে থাকতে পারে। এ বিষয়ে চক্ষু বিশেষজ্ঞর মতামত লাগবে।

মুন্সীগঞ্জ সদর থানার ওসি আনিচুর রহমান জানান, আত্মগোপনে থাকা এ মামলার প্রধান আসামি আঁখির স্বামী হৃদয় ভূইয়া (২৪) ও তিন নম্বর আসামি মাহুফজা বেগমকে (৫০) পুলিশ গ্রেফতারে অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে।

তিনি জানান, গত ১৪ জানুয়ারি আঁখির বাবা বাদী হয়ে মুন্সীগঞ্জের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালে মামলা দায়ের করেন। আদালত মামলাটি এফআইআর হিসাবে গ্রহণ করার আদেশ দেয়।

তার সূত্র ধরে এ গ্রেফতারের আগে সোমবার সকালে মুন্সীগঞ্জ সদর থানায় যৌতুকের জন্য মারধর করে গুরুতর আহত এবং এ কাজে সহায়তা করার অভিযোগে চারজনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন আঁখির বাবা বলে জানান তিনি।

এদিকে, ১৪ জানুয়ারি মামলা করার পর ট্রাইবুনাল তা গ্রহণের আদেশ দিলেও তা থানায় না আসা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “কোনো কারণে [আদেশটি] আটকে রাখা হয়েছিল। পরে সোমবার সকালে থানা থেকে এক পুলিশ কর্মকর্তা গিয়ে হাতে হাতে আদেশটি এনে তারপর মামলাটি গ্রহণ করা হয়েছে।”

মুন্সীগঞ্জ কোর্ট ইন্সপেক্টর জামাল উদ্দিন বলেন, গ্রেফতার দুই আসামিকে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মুক্তা মন্ডলের আদালতে তোলা হবে। রিমান্ড শুনানির জন্য পরবর্তী দিন ধার্য করা হবে।

নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালের আদেশ থানায় পৌঁছতে কেন বিলম্ব প্রসঙ্গে কোর্ট ইন্সপেক্টর বলেন, “এ ঘটনায় কোর্ট পুলিশের কোনো অনিয়িম হয়নি। এটি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালের সংশ্লিষ্টদের দায়িত্ব।”

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় নির্যাতনের বিবরণ দেন লাবনী আক্তার আঁখি- ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দের ৮ জানুয়ারি হৃদয় ভুঁইয়াকে প্রেম করে বিয়ে করেন। তবে তার শ্বশুর এ বিয়ে মেনে নেননি। এক পর্যায়ে স্বামী, শ্বশুর, শাশুড়ি ও দেবর একসাথে নির্যাতন চালানো শুরু করে।

“একদিন মারতে মারতে বেহুশ করে ফেলে এবং বাম চোখের উপরে ক্ষত করে ফেলে। সেখানে প্রায় ১০টি সেলাই দেয়া হয়েছিল।”

একদিন জোর করে ফিনাইল খাইয়ে দেয়া হলে তার খাদ্যনালী নষ্ট হয়ে যায় উল্লেখ করে তিনি জানান, এ ঘটনার পর শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাকে সদর হাসপাতালে আনে। সেখানে তারপর অবস্থার অবনতি ঘটলে ঢাকা মেডিকেলে রেফার্ড করা হয়। সেখানেও তার অবস্থার অবনতি ঘটতে থাকলে তাকে সেখানে ফেলে শ্বশুরবাড়ির লোকরা পালিয়ে আসে বলে জানান তিনি।

৭/৮ দিন ঢাকা মেডিকেলে আঁখি আক্তার নিঃসঙ্গভাবে কাটানোর পর পাশের সিটের রোগীর আত্মীয়ের মাধ্যমে আঁখি তার বাবা ও মায়ের সাথে যোগাযোগ করেন। এরপর চিকিৎসকের পরামর্শে তার খাদ্যনালীর অপারেশন হয়।

এরপর আবার মুন্সীগঞ্জ সদর হাসপাতালে আনা হয়। আঁখি মুন্সীগঞ্জ সদর হাসপাতালের ৯নং বেডে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

গ্রামের দরিদ্র ব্যবসায়ীর মেয়ে আঁখির চিকিৎসায় পাশে দাঁড়িয়েছে এ হাসপাতালের সমাজসেবা বিভাগ।

জড়িত মনে হলে চেয়ারম্যানও গ্রেফতার: ডিবির হারুন - dainik shiksha জড়িত মনে হলে চেয়ারম্যানও গ্রেফতার: ডিবির হারুন পছন্দের স্কুলে বদলির জন্য ‘ভুয়া’ বিবাহবিচ্ছেদ - dainik shiksha পছন্দের স্কুলে বদলির জন্য ‘ভুয়া’ বিবাহবিচ্ছেদ হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা - dainik shiksha হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা সনদ বাণিজ্য : কারিগরি শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যানের স্ত্রী কারাগারে - dainik shiksha সনদ বাণিজ্য : কারিগরি শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যানের স্ত্রী কারাগারে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে উপবৃত্তির জন্য সব অ্যাকাউন্ট নগদে রূপান্তরের নির্দেশ - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সব অ্যাকাউন্ট নগদে রূপান্তরের নির্দেশ সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা - dainik shiksha সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা জাতীয়করণ আন্দোলনের শিক্ষক নেতা শেখ কাওছার আলীর বরখাস্ত অনুমোদন - dainik shiksha জাতীয়করণ আন্দোলনের শিক্ষক নেতা শেখ কাওছার আলীর বরখাস্ত অনুমোদন ১৭তম ৩৫-প্লাস শিক্ষক নিবন্ধিতদের বিষয়ে চেম্বার আদালত যা করলো - dainik shiksha ১৭তম ৩৫-প্লাস শিক্ষক নিবন্ধিতদের বিষয়ে চেম্বার আদালত যা করলো দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে তিন স্তরে সনদ বিক্রি করতেন শামসুজ্জামান, দুদকের দুই কর্মকর্তার সম্পৃক্ততা - dainik shiksha তিন স্তরে সনদ বিক্রি করতেন শামসুজ্জামান, দুদকের দুই কর্মকর্তার সম্পৃক্ততা please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0078949928283691