সাতক্ষীরার দেবহাটা উপজেলার সখিপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে এসএসসি পরীক্ষার্থীদের ফরম পূরণে অতিরিক্ত টাকা আদায়ের অভিযোগ এসেছে। কেন্দ্রের বিভিন্ন খরচ, বিদ্যালয়ের বিশেষ কোচিং, সেশন চার্জ, বেতনসহ বিভিন্ন খাতের অজুহাতে পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে এই অতিরিক্ত টাকা আদায় করা হচ্ছে বলে অভিভাবকরা অভিযোগ করেছেন। তবে আদায়কৃত এ টাকা আদায়ের কোন রশিদ দেয়া হয়নি শিক্ষার্থীদের।
সখিপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে কোচিং বাধ্যতামুলক বলে ফরম পূরণসহ তিন হাজার একশ টাকা পর্যন্ত আদায় করা হচ্ছে। এরমধ্যে ফরম পূরণ বাবদ বাণিজ্য ও মানবিক বিভাগের শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে দুই হাজার ২০ টাকা এবং বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে দুই হাজার একশ টাকা আদায় করা হয়েছে। এছাড়াও কোচিং বাধ্যতামূলক বলে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে এক হাজার টাকা করে আদায় করেছেন প্রধান শিক্ষক মো. তহিদুজ্জামান।
একাধিক অভিভাবক জানিয়েছে, ব্যবহারিক পরীক্ষা ও কেন্দ্র ফিসহ সর্বোচ্চ ফি মানবিক বিভাগের জন্য নিয়মিত ১ হাজার ৬৫০ টাকা অনিয়মিত ১ হাজার ৭৫০ টাকা নির্ধারণ করেছে সরকার। বিজ্ঞান বিভাগের জন্য নিয়মিত ১ হাজার ৭৭০ টাকা অনিয়োমিত ১ হাজার ৮৭০ টাকা এবং বাণিজ্য বিভাগের জন্য নিয়মিত ১ হাজার ৬৫০ টাকা অনিয়মিত ১ হাজার ৭৫০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। কিন্তু সরকারের নির্ধারিত ফি আদায় না করে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নিজের ইচ্ছা অনুযায়ী এ টাকা আদায় করেছেন। তবে সে টাকার কোন প্রকার রশিদ প্রদান করছেন না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এ বিদ্যালয়ের পরীক্ষার্থীরা জানায়, কোচিং না করলে ব্যবহারিক পরীক্ষায় নম্বর দেওয়া হবে না বলে হুমকি দিয়ে এক হাজার টাকা আদায় করেছেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. তহিদুজ্জামান।
অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের সত্যতা স্বীকার করে সখিপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. তহিদুজ্জামান বলেন, শুধু আমি না দেবহাটার প্রায় সব বিদ্যালয়েই একই অর্থ আদায় করা হচ্ছে। বোর্ড যে ফি নির্ধারণ করেছে তারপর আবার আমাদের কেন্দ্র আলাদাভাবে ফি নির্ধারণ করে দিয়েছে ২ হাজার ১০০ টাকা। আমরা সেই টাকাই নিচ্ছি। কেন্দ্র বাড়তি টাকা দিয়ে কি করবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কেন্দ্রে কিছু বাড়তি খরচ আছে। সে কারণে এ টাকা আদায় করা হয়। এগুলো কেন্দ্র থেকে আমাদের বলে দেয়। তিনি আরও বলেন, তিন মাস কোচিং এর জন্য এক হাজার করে টাকা নেওয়া হয়েছে। ম্যানেজিং কমিটি সিদ্ধান্ত নিয়ে এ ফি নির্ধারন করেছে।
এ বিষয়ে সাতক্ষীরা জেলা শিক্ষা অফিসার আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, সরকারের নির্ধারিত ফি থেকে অতিরিক্ত টাকা আদায় করা সম্পূর্ণ বেআইনি। ইতোমধ্যে অতিরিক্ত অর্থ আদায় না করতে সব প্রতিষ্ঠানে চিঠি দেওয়া হয়েছে। তারপরও যদি কেউ অতিরিক্ত অর্থ আদায় করে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
জানা গেছে, সখিপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে ৮৫ জন পরীক্ষার্থী এসএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণ করেছেন। এর মধ্যে ৭০ জন পরীক্ষার্থী নিয়মিত এবং ১৫ জন পরীক্ষার্থী অনিয়মিত।