দ্বীপ জেলা ভোলার লালমোহন উপজেলার মেঘনা নদীর তীরবর্তী ধলীগৌরনগর ইউনিয়নের কুন্ডের হাওলা গ্রামের খাদিজা খানম নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠার দেড় যুগের বেশি সময় পেরিয়ে গেছে। তবে আজও এমপিওভুক্ত হয়নি বিদ্যালয়টি। আর এ নিয়ে এলাকাবাসীর মাঝে হতাশা দেখা দিয়েছে।
উপজেলার ধলীগৌরনগরের কুন্ডের হাওলা পাটাওয়ারীর হাট সংলগ্ন মেঘনার উপকূলীয় এলাকার গ্রাম কুন্ডের হাওলা। আশেপাশে প্রায় ৩/৪ কিলোমিটারের মধ্যে কোনো বিদ্যালয় ছিল না। সন্তানদের পড়ালেখা করানোর ইচ্ছা থাকলেও এলাকাবাসীর স্বপ্ন শুধু স্বপ্নই থেকে যেত। কোমলমতি শিশুরা জড়িয়ে পড়তো শিশুশ্রমে। এসব বিবেচনায় করে ২০০১ খ্রিষ্টাব্দে খাদিজা খানম নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করেন মো. ছিদ্দিকুর রহমান মান্না। তার মায়ের নামে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করার পর থেকে দীর্ঘ দেড়যুগের বেশি সময় কেটে গেছে।
জানা গেছে, বিদ্যালয়টি ২০১০ খ্রিষ্টাব্দ থেকে জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) পরীক্ষায় শতভাগ উত্তীর্ণসহ নানা সাফল্য অর্জন করেছে। বর্তমানে বিদ্যালয়টিতে তিন শতাধিক শিক্ষার্থী রয়েছে। ষষ্ঠ শ্রেণিতে ৮৭ জন, সপ্তম শ্রেণিতে ৭৪ জন এবং অষ্টম শ্রেণিতে ৭৫ জন শিক্ষার্থী। প্রতিষ্ঠার পর থেকে এপর্যন্ত প্রধান শিক্ষকসহ ১১ জন শিক্ষক-কর্মচারী তাদের নিজেদের টাকায় স্কুলঘর নির্মাণ এবং প্রায় প্রতিবছর মেরামত করে শিক্ষার্থীদের পাঠদান করাচ্ছেন। বিদ্যালয়টি এমপিওভুক্তির আশায় ছিলেন তারা। কিন্তু গত ২৩ অক্টোবর ঘোষিত এমপিওর তালিকায় প্রতিষ্ঠানের নাম না থাকায় শিক্ষক-কর্মচারীরা হতাশায় পড়েছেন। তাদের পরিবারেও দেখা দিয়েছে অসন্তোষ। মা, বাবা, স্ত্রী, সন্তানদের ভরণ-পোষন ও পড়ালেখার খরচ জোগাড়ের একমাত্র দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিটি বিনা পয়সায় শিক্ষকতা করছেন। সকাল সাড়ে ৯টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত একটানা বিদ্যালয়ে সময় দেয়ায় অন্য কোনো কাজ করতে না পারায় তাদের পরিবারে চলছে দারিদ্র্য আর হতাশা।
খাদিজা খানম নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. শাহাবুদ্দীন বলেন, সব শিক্ষক অপেক্ষার প্রহর গুনে আশায় বুক বেঁধেছিলাম। কিন্তু সদ্য এমপিওর তালিকায় আমাদের এ স্বনামধন্য বিদ্যালয়টির নাম না থাকায় হতাশাগ্রস্থ হয়ে পড়েছি। মা,বাবা, স্ত্রী সন্তান নিয়ে কীভাবে বেঁচে থাকব সে চিন্তা করে কূল পাচ্ছি না।
প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক আলহাজ্ব মো. ইউনুছ মিয়া বলেন, আশা করেছিলাম বিদ্যালয়টি এবছর এমপিওভুক্ত হবে। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস আমাদের প্রতিষ্ঠানটি এমপিওর তালিকায় আসেনি। তার পরেও আমরা আমাদের সাফল্য ধরে রাখব, আশা করি পরবর্তী তালিকায় আমাদের প্রতিষ্ঠানটির নাম আসবেই।