দোষী হলে আমার ছেলেও শাস্তি পাক : বিল্লাহর বাবা - দৈনিকশিক্ষা

দোষী হলে আমার ছেলেও শাস্তি পাক : বিল্লাহর বাবা

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি |

গ্রামের খুব মেধাবী সরল-সুবোধ বালকটিই যে বুয়েটের আবরার ফাহাদ হত্যা মামলার আসামি- একথা ভাবতেই শিউরে উঠছেন সবাই। তাঁরা বলছেন, নিরীহ প্রকৃতির ওই ছেলে তো কোনো দল করেনি। কোনো অসাধু সঙ্গেও দেখা যায়নি তাকে। পরিবারটিও নিরীহ প্রকৃতির। তাহলে কীভাবে সে এতবড় একটি নৃশংস ঘটনায় জড়িয়ে পড়তে পারল?

সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার ভুরুলিয়া ইউনিয়নের ইছাকুড় গ্রামের দরিদ্র ট্রাকচালক আমিনুর রহমান ওরফে বাবলু সরদারের ছেলে বুয়েটের নেভাল অ্যান্ড আর্কিটেকচার বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র শামিম বিল্লাহ। গতকাল শুক্রবার বিকেল ৪টার দিকে খালার বাড়ি দেউলিয়া থেকে শামিম বিল্লাহকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল। শামিম বিল্লাহ আবরার হত্যা মামলার ১৪ নম্বর আসামি। শেরে বাংলা হলের ২০০৪ নম্বর কক্ষের বাসিন্দা।

শামিম গ্রেফতারের পর থেকে গ্রামের মানুষ বারবার একই কথা বলছেন, শামিম বিল্লাহ কীভাবে এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত হতে পারলেন!

শামিম বিল্লাহর বাবা বাবলু সরদার বলেন, ২০১৫ ক্রিষ্টাব্দে এসএসসিতে গোল্ডেন ‘এ’ প্লাস পেয়েছিল সে। ২০১৭ ক্রিষ্টাব্দে ঢাকার সেন্ট জোসেফ কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিকেও গোল্ডেন ‘এ’ প্লাস পায়। এর আগে অষ্টম শ্রেণিতে বৃত্তি এবং পঞ্চম শ্রেণি সমাপনীতেও সে সেরা ফলাফল করেছিল।

শামিম বিল্লাহকে লেখাপড়া করাতে কোনো খরচ হয় না জানিয়ে বাবা বলেন, ছেলে ডাচ-বাংলা ব্যাংক থেকে আর্থিক সহায়তা পেয়ে থাকে। ঢাকায় সে একজন সচিবের সন্তানকে পড়ায়। সেখান থেকে যে টাকা সে পায় তা দিয়ে নিজের খরচ চালিয়েও বাড়িতে পাঠায়। এরই মধ্যে সে ল্যাপটপ, স্মার্টফোন সবই কিনেছে নিজের টাকায়।

বাবলু সরদার জানান, নিজের জমানো আড়াই লাখ টাকা দিয়ে সম্প্রতি একটি এফজেড মোটরসাইকেল কিনেছে শামিম বিল্লাহ। এর রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।

শামিম বিল্লাহর বাবা বলেন, আবরার ফাহাদ খুনের দিন রাত ৯টার দিকে শামিম বিল্লাহ টিউশনি করিয়ে একটি নতুন হেলমেট কিনে হলে ঢুকছিল। সেখানে অনেকটা হাঙ্গামা দেখতে পায় সে। ওই মুহূর্তে তাঁর বন্ধুরা তার হেলমেটেটি মাথায় পরে হাসি-তামাশাও করে। এর কিছুক্ষণ পর হলের বড় ভাইরা ওদের সবাইকে ডাকে। এমন ১০-১৫ জনের মধ্যে শামিম বিল্লাহও একজন। বড় ভাইরা কী সব পরামর্শ নাকি দিয়েছিল তাদের। এরপর শামিম রুমে চলে যায়।

ছেলের বরাত দিয়ে বাবলু সরদার আরো বলেন, আবরার হত্যার পরের দিনও শামিম বিল্লাহ  হলে ছিল। কিন্তু দারোয়ান তাঁকে ডেকে বলে, বাবা তুমি তো পাশের রুমে থাক। এখন এখানে থাকা নিরাপদ নয়। এরপর শামিম একজন সচিবের বাসায় ওঠে। সেখান থেকে সে সরাসরি গ্রামের বাড়ি সাতক্ষীরায় চলে আসে। এরপর কোনোকিছু বুঝে উঠবার আগেই পুলিশ তাকে ধরে নিয়ে যায়।

শামিমের একমাত্র ছোট বোন শ্যামনগর আতরজান মহিলা কলেজের ছাত্রী।

শামিমের মা হালিমা খাতুন বলেন, ‘আমার ছেলে কারো সঙ্গে ঝগড়াও করেনি কোনোদিন। সবাই তাকে ভালো বলে। আমরা ওর উজ্জ্বল ভবিষ্যতের দিকে চেয়ে আছি। কিন্তু এ কোন বিপদের মুখে পড়ল আমার সোনার ছেলেটি।’

বাবা বাবলু সরদার বলেন, ‘আমি কিস্তিতে একটি ট্রাক কিনে সেটা চালাই। আমার ভাই লাভলু ঢাকা পরিবহনের চালক। আমার বাবা আতিয়ার রহমান একটি ইটভাটায় চাকরি করেন। সব মিলে আমার পরিবার স্বচ্ছলতার মুখ দেখছিল। এর মধ্য দিয়ে ছেলেটি লেখাপড়া শিখে বড় হচ্ছিল। কিন্তু মাঝখানে এ কেমন বাধা পড়ে গেল।’

শামিম বিল্লাহর বাবা আরো বলেন, ‘একজন বাবা হিসাবে আমি চাই, যারা আবরারকে হত্যা করেছে তারা যেন শাস্তি পায়। এমনকি  আমার ছেলে দোষী হলে সেও শাস্তি পাক। কিন্তু নিরীহ নিরপরাধ কোনো ছেলে যেন কোনোভাবেই ষড়যন্ত্রের শিকার না হয়।’

নতুন শিক্ষাক্রমের ৩১ পাঠ্যবইয়ে ১৪৭ ভুল - dainik shiksha নতুন শিক্ষাক্রমের ৩১ পাঠ্যবইয়ে ১৪৭ ভুল বজ্রপাতে মাদরাসার ২১ ছাত্র আহত, হাসপাতালে ১১ - dainik shiksha বজ্রপাতে মাদরাসার ২১ ছাত্র আহত, হাসপাতালে ১১ যতো লিখেছি, ছিঁড়েছি তার বেশি - dainik shiksha যতো লিখেছি, ছিঁড়েছি তার বেশি তত্ত্বাবধায়ককে বাধ্য করে ঢাবি শিক্ষকের পিএইচডি - dainik shiksha তত্ত্বাবধায়ককে বাধ্য করে ঢাবি শিক্ষকের পিএইচডি সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দুই কবির জন্মবার্ষিকী পালনের নির্দেশ - dainik shiksha সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দুই কবির জন্মবার্ষিকী পালনের নির্দেশ শিক্ষকদের চাকরির মেয়াদ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেই - dainik shiksha শিক্ষকদের চাকরির মেয়াদ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেই বিদ্যালয়ের ক্লাস থামিয়ে ভোট চাইলেন চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী - dainik shiksha বিদ্যালয়ের ক্লাস থামিয়ে ভোট চাইলেন চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0035700798034668