দেশের নাগরিকের শিক্ষার অধিকার বা শিক্ষকদের সামাজিক মর্যাদা ও অর্থনৈতিক অধিকারের বিষয়ে মূল্যায়নের বৃহত্তর উপলব্ধি এখনও জাগ্রত হয়নি। তাই মানব গড়ার কারিগর শিক্ষকরা এখনও বিভিন্ন ধরনের সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত, বিশেষ করে বেসরকারি শিক্ষকরা। বেসরকারি শিক্ষকরা তাদের ন্যায্য দাবির জন্য আন্দোলন করে আসছেন। এই আন্দোলনের মাধ্যমে বিভিন্ন সময়ে তাদের যৌক্তিক দাবি ও অধিকার আদায় করতে সক্ষম হয়েছেন।
হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের ৫ শতাংশ বার্ষিক প্রবৃদ্ধি, ২০ শতাংশ বৈশাখী ভাতা দেওয়ার ঘোষণা দেন। সেই ঘোষণায় শিক্ষকরা প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতার বাঁধনে আবদ্ধ হন।
ইতোমধ্যে ৫ শতাংশ বার্ষিক প্রবৃদ্ধি ২০১৮-২০১৯ অর্থ বছর হতে এমপিও শিক্ষক-কর্মচারীরা পেয়ে আসছে। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের বিষয় হলো চলতি বছরের বৈশাখী ভাতা এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের ব্যাংক হিসাবে বৈশাখের আগে জমা হয়নি।
গত ২ বছর এই বৈশাখী ভাতা এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা পাননি। এবার পেয়েও ঠিক সময়ে এ ভাতা পাননি তারা। সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা চলতি মাসে গত মার্চের বেতনের সাথে ২০ শতাংশ বৈশাখী ভাতা পেলেও বঞ্চিত হয়েছেন ৫ লক্ষাধিক এমপিও শিক্ষক-কর্মচারীগণ।
এমপিও শিক্ষক-কর্মচারীদের জন্য এ বছরই প্রথম বৈশাখী ভাতা ছাড় করেছে সরকার। গত ৯ এপ্রিল মাউশি হতে এই অর্থ ছাড় করা হয়। মাত্র ৩ দিন সময় দিয়ে ১১ এপ্রিলের মধ্যে তা তুলতে নির্দেশ দেয়া হয় ৫ লক্ষাধিক শিক্ষক-কর্মচারীদের। অথচ এ ৩ দিনের মধ্যে টাকাই পৌঁছায়নি অনেক জেলার শিক্ষক কর্মচারীদের ব্যাংক হিসাবে। ফলে বৈশাখী ভাতা ছাড়াই বৈশাখী উৎসব উদযাপন করেছেন এ শিক্ষকরা।
এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন ভাতা সংশ্লিষ্ট ব্যাংকে পৌঁছাতে বর্তমান অনলাইন ব্যাংকিং যুগে ১০ থেকে ১২ দিন ক্ষেত্র বিশেষ আরও বেশি সময় লাগে। ডিজিটাল যুগে এমন ব্যাংকিং পদ্ধতিতে এমপিও শিক্ষকরা অবাক হচ্ছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় তথা শিক্ষা অধিদপ্তরের এমন খাম-খেয়ালিপনা আচরণে ৫ লক্ষাধিক এমপিও শিক্ষক হতাশ।
এমতাবস্থায় ভবিষ্যতে এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন ও ভাতাসমূহ দ্রুত সংশ্লিষ্ট ব্যাংকে জমাদান ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য শিক্ষা অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের সুদৃষ্টি কামনা করছি।
লেখক: প্রভাষক, হিসাব বিজ্ঞান বিভাগ, তেঁতুলঝোড়া কলেজ, সাভার, ঢাকা।