শিক্ষকদের আত্তীকরণ হলে নতুন সরকারিকৃত স্কুলে পুরনো সরকারি হাইস্কুলের নিয়মেই ভর্তি সম্পন্ন করতে হবে। পুরনো সরকারি স্কুলগুলোর মত এসব স্কুলেও টেলিটকের সফটওয়্যারের মাধ্যমে ভর্তির আবেদন নেয়া হবে। তবে, আত্তীকরণের প্রক্রিয়া সম্পন্ন না হলে বেসরকারি স্কুলের নিয়মেই সরকারিকৃত স্কুলগুলোতে ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে বলে দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা।
জানা গেছে, গত ৩১ অক্টোবর মাধ্যমিক উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরে আয়োজিত ভর্তি পরিচালনার প্রস্তুতিমূলক সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। সভায় ঢাকা ও সারাদেশের সরকারি স্কুলে ভর্তির বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। সভার শেষাংশে সরকারিকৃত স্কুলে শিক্ষার্থী ভর্তির বিষয়েও আলোচনা হয়েছে।
শিক্ষা অধিদপ্তর সূত্র দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানায়, সভায় সরকারিকৃত স্কুলের ভর্তির বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে। যেসব সরকারিকৃত স্কুলের আত্তীকরণ সম্পন্ন হয়েছে সেসব স্কুলে সরকারি স্কুলের ভর্তি প্রক্রিয়ার আদলেই শিক্ষার্থী ভর্তি করা হবে বলে সভায় সিদ্ধান্ত হয়। তবে, যেসব স্কুলের সরকারিকরণের আদেশ জারি হয়েছে কিন্তু আত্তীকরণ হয়নি সেসব স্কুলে বেসরকারি নিয়মেই ভর্তি কার্যক্রম পরিচালিত হবে।
সূত্র আরও জানায়, গতবছরের মত এবারও সরকারি স্কুলগুলোতে ভর্তির আবেদন টেলিটকের সফটওয়্যারের মধ্যেমে নেয়া হবে। পদসৃজন বা আত্তীকরণ সম্পন্ন হওয়া সরকারিকৃত স্কুলগুলোর ভর্তি আবেদনও টেলিটকের সফটওয়্যারের মাধ্যমে গ্রহণ করা হবে।
রাজধানীর ৩৮ সরকারি হাইস্কুলে ভর্তি বিষয়:
রাজধানীর সরকারি হাইস্কুলগুলোতে ভর্তিতে অনলাইন আবেদন আগামী ১ ডিসেম্বর থেকে শুরু হয়ে ১৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলবে। ১৮, ১৯, ২০ ডিসেম্বর যথাক্রমে এ, বি ও সি গ্রুপের স্কুলে ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। আর আগামী ২৪ ডিসেম্বর প্রথম শ্রেণির ভর্তির লটারি অনুষ্ঠিত হবে। লিখিত পরীক্ষার ফল ঘোষণা ২৯ ডিসেম্বর। মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরে আয়োজিত ঢাকা মহানগরের ৩৮ টি স্কুলে ভর্তি কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। সভায় উপস্থিত কর্মকর্তারা দৈনিক শিক্ষাডটকমকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
কর্মকর্তারা দৈনিক শিক্ষাকে জানান, ৩৮ টি স্কুলকে অঞ্চল ভিত্তিতে তিনটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে। এদের পরীক্ষা ১৮, ১৯ ও ২০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হবে। এর আগে ১ থেকে ১৪ ডিসেম্বর মধ্যরাত পর্যন্ত অনলাইনে ভর্তির আবেদন নেয়া হবে।
জানা গেছে, এবছরে ভর্তি প্রক্রিয়ায় তেমন একটা পরিবর্তন আনা হচ্ছে না। গত বছরের নীতিমালা অনুসারেই ভর্তি প্রক্রিয়া পরিচালিত হবে। ঢাকা মহানগরীর স্কুলে পার্শ্ববর্তী শিক্ষার্থীদের জন্য ৪০ শতাংশ এলাকা কোটা সংরক্ষণ করা হবে। এছাড়া ঢাকার সরকারি হাইস্কুলগুলোকে তিনটি ক্যাটাগরিতে ভাগ করে ভর্তি প্রক্রিয়া চলবে।
প্রথম শ্রেণিতে ভর্তির জন্য আবশ্যিকভাবে লটারির মাধমে শিক্ষার্থী নির্বাচন করতে হবে। লটারির মাধ্যমে নির্বাচিত শিক্ষার্থীর তালিকা প্রস্তুত করার পাশাপাশি শূন্য আসনের সমান সংখ্যক অপেক্ষমাণ তালিকাও প্রস্তুত রাখতে হবে। ভর্তি কমিটি কর্তৃক নির্ধারিত তারিখে নির্বাচিত শিক্ষার্থী ভর্তি না হলে অপেক্ষামান তালিকা থেকে পর্যায়ক্রমে ভর্তি করা হবে।
দ্বিতীয়-অষ্টম শ্রেণির শূন্য আসনে লিখিত পরীক্ষার মাধ্যমে মেধাক্রম অনুসারে ভর্তির জন্য শিক্ষার্থী বাছাই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে।
নবম শ্রেণির ক্ষেত্রে জেএসসি-জেডিসি পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট বোর্ডের প্রস্তুত করা মেধাক্রম অনুসারে নিজ বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ভর্তির পর অবশিষ্ট শূন্য আসনে অন্য বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ভর্তির জন্য নির্ধারিত ভর্তি কমিটির বাছাই করতে হবে।
মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর ও টেলিটকের ওয়েবসাইটে ভর্তির আবেদন করা যাবে। আবেদন ফরমের মূল্য ধরা হয়েছে ১৭০ টাকা। সেশন চার্জসহ ভর্তি ফি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্ধারিত থেকে বেশি হবে না।
দ্বিতীয়-তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত পরীক্ষার পূর্ণমান-৫০, এরমধ্যে বাংলা-১৫, ইংরেজি-১৫, গণিত-২০ নম্বর। ভর্তি পরীক্ষার সময় ১ ঘণ্টা। চতুর্থ-অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পূর্ণমান-১০০। এরমধ্যে বাংলা-৩০, ইংরেজি-৩০, গণিত-৪০ নম্বর থাকবে। ভর্তি পরীক্ষার সময় ২ ঘণ্টা। ভর্তি পরিচালনার জন্য বিভিন্ন কমিটিও করে দেয়া হবে।