পিরোজপুরের কাউখালী উপজেলার বাশুরী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নতুন ভবন নির্মাণে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। ভবন নির্মানে নিম্নমানের মালামাল ব্যবহার করার কারনে নির্মানাধীন ভবনটির কাজ শেষ হতে না হতেই পলেস্তরা ও রং উঠে যাচ্ছে এবং মেঝেতে ফাটল দেখা দেয়।
তারপরও জোড়াতালি দিয়ে কোনো মতে নির্মাষ কাজ শেষ করে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটি। স্কুলের প্রধান শিক্ষকের কাছে উপজেলা প্রকৌশলীর অফিসের সহযোগিতায় চাবি বুঝিয়ে দেয়ার সাত দিনের মধ্যে ভবনটির রং ও জানালা খুলে পড়া শুরু করেছে। নতুন ভবনে ওঠার আগেই দরজা জানালা খুলে পড়ায় ক্ষুব্ধ শিক্ষক ও অভিভাবকরা।
উপজেলা এলজিইডি ও ,স্কুল সূত্রে জানা যায়, ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দের প্রথম দিকে বিদ্যালয়ের নতুন ভবন নির্মানের ভিত্তি প্রস্থর স্থাপন করেন সাবেক মন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু এমপি। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর বিদ্যালয় ভবন নির্মানের জন্য দরপত্র আহবান করলে বরিশালের “হক ট্রেডার্স” নামে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কাজ পেয়ে ভবন নির্মানের কাজ শুরু করেন। ভবনটি নির্মানের জন্য ৫৩ লাখ ৬০ হাজার টাকা ব্যয় ধরা হয়।
প্রধান শিক্ষক উমেশ চন্দ্র ঘরামী বলেন, ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কাজের প্রথম থেকেই নিম্নমানের মালামাল দিয়ে কাজ শুরু করেন। এর প্রতিবাদ করলে ঠিকাদার ও উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তরের দায়িত্ব প্রাপ্ত সহকারি ইঞ্জিনিয়ার বিমল চন্দ্র ঘরামির সাথে তার কথা কাটাকাটি হয়।
প্রধান শিক্ষক উমেশ চন্দ্র ঘরামী আরও বলেন, গত বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) ঠিকাদার ভবনের চাবি তার হাতে তুলে দেন। এসময় তিনি কাজের মান ভাল হয়েছে বলে একটি প্রত্যয়ন পত্রে সাক্ষর দিতে বলেন। প্রধান শিক্ষক তাতে সাক্ষর না দিলে সহকারি ইঞ্জিনিয়ার বিমল বাবু ফোনে প্রত্যয়ন পত্রে তাকে সাক্ষর দিতে বলেন।
তখন প্রধান শিক্ষক বলেন, ‘আমি ভবনের কাজের গুনগত মান যাচাই সাপেক্ষে চূড়ান্ত বিল দেয়ার জন্য অনুরোধ করা গেল” লিখে প্রত্যয়ন পত্রে স্বাক্ষর করি। এরপর মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) সকালে ভবনের শ্রেণিকক্ষগুলো বর্নমালা দিয়ে সাজানোর জন্য ভবনের জানালা খুলতে গেলে তা খুলে পড়ে যায়।
এ বিষয়ে ভবন নির্মানের দায়িত্ব প্রাপ্ত সহকারি ইঞ্জিনিয়ার বিমল বাবুকে ফোনে জানালে তিনি বলেন ‘বিষয়টি আমি দেখব’। প্রধান শিক্ষক আরও বলেন ভবনের বিদ্যুতের ওয়্যারিং এর কাজেও নিম্নমানের মালামাল ব্যবহার করা হয়েছে। শ্রেনিকক্ষে লাইট ও ফ্যানের মান ও অত্যন্ত খারাপ।
ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান “হক ট্রেডার্স” এর সত্তাধীকারি মোঃ ফজলুল হক বলেন, ‘প্রধান শিক্ষক জানালা খুলে পড়াসহ কিছু সমস্যার কথা আমাকে ফোনে জানান। এ কাজগুলো আগামী শনি, রবিবারের মধ্যে করে দিব। কাজ করতে গেলে কিছু ভুল ত্রুট হতেই পারে’।
দায়িত্ব প্রাপ্ত সহকারি ইঞ্জিনিয়ার বিমল চন্দ্র বিশ্বাস বলেন,ভবন নির্মানে কাজের মান ভাল হয়েছে। প্রধান শিক্ষক জানালা খুলে পড়া সহ কিছু সমস্যার কথা বলেছেন তা ঠিকাদারের সাথে কখা বলে সমাধান করা হবে।