নদী বাঁচলেই দেশ বাঁচবে। দখল ও দূষণ থেকে নদী রক্ষা করতে সরকারের সঙ্গে সবাইকে সহযোগিতা করতে হবে। দখল দূষণরোধে সবাইকে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে বলে মনে করছেন বিশিষ্টজনরা। এক ইঞ্চি নদীও নষ্ট করে কোন পরিকল্পনা নেয়া থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়ে বিশিষ্টজনরা আরও বলেন, নদী রক্ষায় স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীসহ নাগরিক সমাজকে সম্পৃক্ত করতে হবে। নদী দখলকারীদের মতো দূষণকারীদের তালিকা প্রকাশ করার কথাও বলেন বক্তারা।
বুধবার সকালে ফার্মগেটে আ. কা. মু গিয়াস উদ্দীন মিল্কী অডিটরিয়ামে জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের আয়োজনে ও বাংলাদেশ নদী বাঁচাও আন্দোলনের সহযোগিতায় ‘নদীর উন্নয়নে পরিকল্পনা ও সংশ্লিষ্ট সংস্থার দায়-দায়িত্ব’ শীর্ষক সেমিনারে এসব কথা বলেন বক্তারা।
জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মুজিবুর রহমান হাওলাদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। বিশেষ অতিথি ছিলেন পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য মো. জাকির হোসেন আকন্দ, কলামিস্ট সৈয়দ আবুল মকসুদ, বাংলাদেশ নদী বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি অধ্যাপক মো. আনোয়ার সাদত প্রমুখ। সেমিনারে দুটি প্রবন্ধ উপস্থাপিত হয়- নদীর উন্নয়ন পরিকল্পনা ও সংশ্লিষ্ট সংস্থার দায়-দায়িত্ব এবং নদীর উন্নয়নে পরিকল্পনা ও নাগরিক দায়িত্ব। উপস্থাপন করেন জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের সদস্য মালিক ফিদা আবদুল্লা খান ও কবি-প্রাবন্ধিক মনির মুন্না।
নদীর উন্নয়নে পরিকল্পনা ও নাগরিক দায়িত্ব শীর্ষক প্রবন্ধে মনির মুন্না বলেন, নানা কর্মকা-ের কারণে দেশের নদীগুলো দূষণ দখলসহ নাব্য হারাচ্ছে। সেই সঙ্গে প্রকৃতির জৌলুস হারিয়ে যাচ্ছে। দেশের বেশির ভাগ নদী দখল দূষণ বর্জ্যে এখন মৃতপ্রায়। বিশেষ করে শীতলক্ষ্যা, তুরাগ, ধলেশ্বরী, বালু ও বুড়িগঙ্গায় সর্বত্রই চলছে দখলবাজদের আগ্রাসী রাজত্ব। ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের আগে দেশে নদীপথের দৈর্ঘ্য ছিল ২৪ হাজার ১০০ কি. মি. তা এখন ৫ হাজারের নিচে নেমে এসেছে। নদী রক্ষায় দায় দায়িত্ব নিয়ে প্রবন্ধে বলা হয়, নদী রক্ষায় অঙ্গীকারবদ্ধ হতে হবে। স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধির কর্মসূচি নিতে হবে।
ব্যক্তিগত সচেতনতা বাড়াতে হবে যাতে করে নদীকে ডাস্টবিন মনে করে ময়লা না ফেলা হয়। সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোর মধ্যে ঐক্য গড়ে তুলতে হবে। নদী দখল দূষণকারীদের বিরুদ্ধে সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। কলকারখানার ময়লা পানি তরল বর্জ্য শোধনাগার বা ইটিপি প্ল্যান্ট ব্যবহারের লক্ষ্যে কারখানার মালিকদের সঙ্গে কথা বলতে হবে। নৌযান ইঞ্জিনের পোড়া মবিল যেন নদীতে না ফেলা হয়। এছড়াও সরকারের কার্যক্রম বাস্তবায়নের কার্যকর ভূমিকা রাখতেও নানা পরামর্শ তুলে ধরেন।