ভারতের নাগরিকত্বের প্রতিশ্রুতি দেয়া হলে বাংলাদেশের অর্ধেক মানুষ তাদের দেশ ছেড়ে দেবে। গতকাল রোববার হায়দরাবাদে এক অনুষ্ঠানে ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী জি কিষান রেড্ডি এমন মন্তব্য করেছেন।
এনডিটিভি অনলাইনের খবরে জানানো হয়, রবিদাসজয়ন্তী উদ্যাপন অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী রেড্ডি বলেন, তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাওকে প্রমাণ করতে হবে, কীভাবে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সিএএ) ১৩০ কোটি ভারতীয় জনগণের বিরুদ্ধে যায়।
রেড্ডি আরও বলেন, ‘ভারত সরকার বাংলাদেশিদের নাগরিকত্ব দেওয়ার প্রস্তাব দিলে বাংলাদেশের অর্ধেক শূন্য হয়ে যাবে। নাগরিকত্বের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলে অর্ধেক বাংলাদেশি ভারতে চলে আসবে। সে দায়িত্ব কে নেবে? চন্দ্রশেখর রাও? না রাহুল গান্ধী?’
রেড্ডি বলেন, ভারত সরকার সিএএ পর্যালোচনার জন্য প্রস্তুত। তারা অনুপ্রবেশকারীদের নাগরিকত্ব দেয়ার পথ খুঁজছে।
রেড্ডি এও বলেন, পাকিস্তান, বাংলাদেশ ও আফগানিস্তানের নির্দিষ্ট কিছু সম্প্রদায়ের জন্য মানবিক কারণে সিএএর প্রচলন করা হয়েছে। তিনি বলেন, কিছু রাজনৈতিক দল এসব দেশের মুসলিমদের নাগরিকত্ব দেয়ার দাবি জানিয়েছিল।
স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমি তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রশেখর রাও ও তেলেঙ্গানা রাষ্ট্রীয় সমিতিকে (টিআরএস) চ্যালেঞ্জ করছি, দেখান যে ভারতের ১৩০ কোটি নাগরিকের মধ্যে একজনও সিএএর কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।’
অনুপ্রবেশকারী এবং শরণার্থীদের একভাবে দেখা যাবে না বলে মন্তব্য করেন রেড্ডি। তিনি অভিযোগ করেন, কংগ্রেসের মতো কিছু রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ ও পাকিস্তান থেকে আসা অনুপ্রবেশকারীদের নাগরিকত্ব দিতে চায়।
রেড্ডির মতে, কিছু শরণার্থী ৪০ বছর ধরে ভারতে বসবাস করছে। ভোটার পরিচয়পত্র, আধার অথবা রেশন কার্ডের সুবিধা ছাড়াই তারা এখানে রয়েছেন।
সিএএ পার্লামেন্টে আসার আগে গত বছরের ১২ ডিসেম্বর ভারতে বাংলাদেশের বিদায়ী হাইকমিশনার সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলী (প্রয়াত) বলেছিলেন, ‘ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যে আমাদের নিয়ে সমালোচনা হয়। কিন্তু আমি বলতে পারি, বাংলাদেশের মানুষ সমুদ্র সাঁতরে ইতালিতে যাবে, তবু ভারতে আসবে না। যেসব দেশে বাংলাদেশের মানুষ ভালো আয় করতে পারবে, সেখানে যাবে, কিন্তু ভারতের মতো কম আয়ের দেশে আসবে না।’
ওই অনুষ্ঠানে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের তথ্য উদ্ধৃত করে বিদায়ী হাইকমিশনার সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলী (প্রয়াত) বলেন, এ অঞ্চলে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি অন্যদের তুলনায় ভালো। এ বছর ৮ থেকে ৮ দশমিক ১ শতাংশ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন করবে বাংলাদেশ। ২০২০ খ্রিষ্টাব্দ নাগাদ ভারতকেও ছাড়িয়ে যাবে বাংলাদেশ।