নারায়ণগঞ্জের মিজমিজি কান্দাপাড়া এলাকার সেই অক্সফোর্ড হাইস্কুল ১১ দিন পর আজ মঙ্গলবার (৯ জুলাই) খুলেছে। স্কুলটির একজন শিক্ষক কর্তৃক স্কুলের বাইরে প্রাইভেট টিউশনির সময় ২০ শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের ঘটনায় মামলা হয়েছে। ২৭ জুন গ্রেপ্তারের পর থেকে অভিযুক্ত শিক্ষক আশরাফুল আরিফ ও স্কুলটির প্রতিষ্ঠাতা ও অধ্যক্ষ রফিকুল ইসলাম কারাগারে রয়েছেন। স্থানীয় কতিপয় আওয়ামী লীগ নেতা ও স্কুলটির প্রতিদ্বন্দ্বী কয়েকটি স্কুলের শিক্ষকদের ইন্ধনে ১১ দিন পাঠদান বন্ধ রাখা হয়। প্রশাসনের নির্দেশে আজ মঙ্গলবার (৯ জুলাই) স্বাভাবিকভাবে শ্রেণি কার্যক্রম শুরু করেছেন স্কুলটির শিক্ষকরা। নারায়ণগঞ্জের জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. শরিফুল ইসলাম বিকেলে দৈনিক শিক্ষাডটকমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা বলেন, ২০ জনেরও বেশি ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে অক্সফোর্ড হাইস্কুলের শিক্ষক আশরাফুল আরিফকে গণপিটুনি ও গ্রেপ্তারের পর গত ২৮ জুন থেকে স্কুলটির পাঠদান বন্ধ ছিল। আজ মঙ্গলবার থেকে কিছু শিক্ষার্থী নিয়ে স্কুলটির শিক্ষকরা পাঠদান শুরু করেছেন।
তিনি আরও জানান, শিক্ষার্থী ধর্ষণে শিক্ষক জড়িত থাকার ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছিল। সে প্রেক্ষিতে অনেকটা ভয়ে স্কুলের শিক্ষকরা পাঠদান বন্ধ রেখেছিলেন। তবে, অভিভাবকদের দাবি ও প্রশাসনের আশ্বাসে আজ থেকে শ্রেণির কাজ শুরু করেছেন তারা।
উল্লেখ্য, অক্সফোর্ড হাইস্কুলের সহকারী শিক্ষক আশরাফুল আরিফ স্কুলের বাইরে প্রাইভেট টিউশনির সময় আপত্তিকর ছবি তুলে ২০ জনেরও বেশি ছাত্রীকে ব্ল্যাকমেইল করে পালাক্রমে যৌন হয়রানি করে আসছিলেন। তাকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়। কিন্তু আরিফের বিরুদ্ধে সময়মতো ব্যবস্থা না নেয়ার অভিযোগে স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলাম জুলফিকারকেও গ্রেপ্তার করা হয়।
গত ২৯ জুন অভিযুক্ত শিক্ষক আশরাফুল আরিফকে দুটি মামলায় তিনদিন করে ৬ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত। প্রতিষ্ঠাতাকে একদিনের বিমান্ডে নেয়া হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন অভিভাবক দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, প্রকৃতপক্ষে অক্সফোর্ড স্কুলটি দিনে দিনে খুব ভালো করছিল। কিন্তু অপরাপর স্কুলগুলো ছাত্র সংকটে ভুগছে। এ কারণে স্কুলটির ওপর ক্ষুব্ধ ছিলেন কতিপয় রাজনীতিকসহ অনেকে। তারা স্কুলটিকে সিলগালা করারও চেষ্টা করেছিল। কিন্তু জেলা প্রশাসন ও জেলা শিক্ষা অফিসের হস্তক্ষেপে তা করতে পারেনি বলে জানানা অভিভাকরা।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা) সাফ বলে দিয়েছেন, স্কুলটি খুলতে হবে এবং নিয়মিত চলবে। অন্যান্য প্রশাসন থেকেও বলা হয়েছে স্কুলটি চলবে। বছরের মাঝখানে ৬ শতাধিক শিক্ষার্থীরা বিপদে পড়ুক তা কেউ চান না। তাছাড়া অভিযুক্তরা উপযুক্ত শাস্তি পাক তা সবার কাম্য। স্কুলটি তো কোনও অপরাধ করেনি।