নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে এক স্কুল শিক্ষিকার মামলা দায়েরের চার মাস পর গোপালগঞ্জের মকসুদপুরের উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মুন্সী রুহুল আসলামকে চাকরি থেকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। রোববার (১২ আগস্ট) প্রাধমিক শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে এ সংক্রান্ত আদেশ জারি করা হয়
জানা গেছে. গোপালগঞ্জের মুকসেদপুরের উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মুন্সী রুহুল আসলামের বিরুদ্ধে গোপালগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালে একটি মামলা (নারী ও শিশু-২৪২/১৮) দায়ের করা হয়। এর প্রেক্ষিতে মুন্সী রুহুল আসলাম গত ৫ জুন স্বেচ্ছায় হাজির হয়ে জামিনের আবেদন করেন। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, মামলা দায়ের ও স্বেচ্ছায় হাজির হয়ে জামিন পাওয়ায় বিএসআর ১ম খণ্ডের ৭৩(২) বিধি এবং সংস্থাপন মন্ত্রণালয় থেকে ১৯৭৮ খ্রিস্টাব্দেন ২১ নভেম্বর জারি হওয়া আদেশ অনুযায়ী মুন্সী রুহুল আসলামকে ৫ জুন থেকে সরকারি চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। গত ৫ জুন থেকে বরখাস্তের এ আদেশটি কার্যকর করা হবে বলে প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ছেলের বাবা দাবি করে শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে শিক্ষিকার মামলা
মামলার বিবরণে জানা যায়, গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকার সঙ্গে ২০১০ খ্রিস্টাব্দে একই উপজেলার সহকারী শিক্ষা অফিসার মুন্সি রুহুল আসলামের পরিচয় হয়। এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এরপর রুহুল আসলাম বিয়ের প্রলোভনে ওই শিক্ষিকাকে তার ভাড়া বাসায় নিয়ে শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হতে বাধ্য করেন।পরে ওই শিক্ষিকা বিয়ের জন্য চাপ দিলে রুহুল আসলাম গত ২০১২ সালে মৌলভী ডেকে শরিয়াহ অনুযায়ী তাকে বিয়ে করেন। এরপর থেকে তারা স্বামী-স্ত্রী হিসেবে বসবাস করতে থাকেন। কিন্তু বিবাহ রেজিস্ট্রি করার কথা বললে শিক্ষা কর্মকর্তা নানা অজুহাত দেখিয়ে এড়িয়ে যান বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়।
২০১৪ খিস্টাব্দে ওই শিক্ষিকার একটি ছেলে হয়। এরপর আসলাম কাশিয়ানী উপজেলা থেকে মুকসুদপুর উপজেলায় বদলি হন। ওই শিক্ষিকাও গোপালগঞ্জ সদরে বদলি হয়ে যান। এক পর্যায়ে শিক্ষা কর্মকর্তা আসলাম তার সন্তানকে অস্বীকার করলে শিক্ষিকা তার সন্তানের পিতৃত্বের দাবি নিয়ে আসলামের বিরুদ্ধে গত ৯ এপ্রিল গোপালগঞ্জে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে একটি মামলা করেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গোপালগঞ্জ থানার এসআই বকুল আহমেদ বলেন, পরে শিক্ষিকা আদালতে ডিএনএ টেস্টের আবেদন করলে আদালত তা মঞ্জুর করে।
“আদালতের নির্দেশে গত ১২ জুলাই মুন্সি রুহুল আসলাম, ওই শিক্ষিকা ও তাদের ছেলে মুন্সি আবরার রুহিতকে পুলিশ হেফাজতে ঢাকা নিয়ে গত ১৩ জুলাই ডিএনএ পরীক্ষা করা হয়।”