যে সময় নারী শিক্ষার কথা মানুষ চিন্তাই করতে পারতো না, সেই সময় ১৯১৮ খ্রিষ্ঠাব্দে হবিগঞ্জ জেলার বানিয়াচং শেখের মহল্লার কীর্তিমান পুরুষ মরহুম হাজী শেখ আব্দুল ওয়াহাব প্রতিষ্ঠিত করেন শেখের মহল্লা মহিলা মাদরাসা। তিনি তার মায়ের নামে মেজবানী করার সিদ্ধান্ত নিলে তখনকার এলাকার লোকজন অনুরোধ করেন মেজবানী না করে একটি দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান করার জন্য। পরে হাজী আব্দুল ওয়াহাব তার বাড়ির সামনে ১ কেদার (স্থানীয় পরিমাপ) জমিতে গড়ে তুলেন মাদরাসাটি। দান করেন নিজের ১৬ কেদার জমি।
পর্যায়ক্রমে মাদরাসাটি উন্নতি হয়ে বর্তমানে বিএসডি মহিলা আলিম মাদরাসা হিসেবে প্রতিষ্ঠত হয়েছে। হাজী আব্দুল ওয়াহাব মারা যাওয়ার পর তার পুত্র শেখ গোলাম কদ্দুছ ৪০ বছর মাদরাসাটির দেখবাল করেন। গোলাম কদ্দুছ মারা যাওয়ার পর বর্তমানে তার পুত্র তরুণ শিক্ষানুরাগী শেখ ছাদিক মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা সদস্য হিসেবে দায়িত্বে রয়েছেন। মাদরাসার ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হিসেব দায়িত্বে রয়েছেন শেখের মহল্লার সমাজপতি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মোত্তাক্কিন বিশ্বাস। আর দীর্ঘদিন যাবৎ অধ্যক্ষ হিসেবে সুনামের সহিত দায়িত্ব পালন করছেন মাওলানা মোবাশ্বির আহমদ। মাদরাসায় শিক্ষক শিক্ষিকা রয়েছেন ১৭ জন। শিক্ষার্থীর সংখ্যা সাড়ে ৬ শত।
১৯৯৩ খ্রিষ্টাব্দে মাদরাসা এমপিওভূক্ত হয়। হবিগঞ্জ-২ আসনের সাংসদ এ্যাডভোকেট আব্দুল মজিদ খানের ঐকান্তিক প্রচেষ্ঠায় প্রতিষ্ঠানটি ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দে আলিম স্তরে এমপিওভূক্ত হয় মাদরাসায় একাধিক ভবন নির্মিত হয়েছে। বর্তমানে ৩ কোটি ২৬ লাখ টাকা ব্যয়ে ৪ তলা বিশিষ্ট একটি আধুনিক বহুতল ভবন নির্মিত হচ্ছে এমপি আব্দুল মজিদ খানের প্রচেষ্ঠায়। মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা মোবাশ্বির আহমদ জানান মাদরাসায় দ্বীনি শিক্ষার পাশাপাশি জেনারেল আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চাকুরীর পাশাপাশি কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে সুনামের সহিত পড়াশুনা করছেন অনেক নারী শিক্ষার্থী।
মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা সদস্য শেখ ছাদিক জানান এমপি আব্দুল মজিদ খান মহোদয়ের সুদৃষ্ঠিতে মাদরাসাটি দিন দিন এগিয়ে যাচ্ছে। মাদরাসা প্রতিষ্ঠা হওয়ার বদৌলতে এলাকার নারী শিক্ষার হার বাড়ার পাশাপাশি হয়েছে অবকাঠামো উন্নয়ন। বদলে গেছে এলাকার চিত্র। তিনি জানান মাদরাসা দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালন করেন সাবেক সুপার মরহুম আ খ ম নিজামুদ্দৌলা (অনু মিয়া হাফিজ সাহেব)।