প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নার্সিং খাতে বিরাজমান সমস্যা সমাধানের উপায় খুঁজে বের করতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়কে দায়িত্ব দিয়েছেন। বুধবার (২৩ অক্টোবর) দুপুরে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক ও স্বাস্থ্য সচিব (স্বাস্থ্য শিক্ষা) শেখ ইউসুফ হারুন নার্সিং সেক্টরের বিরাজমান সমস্যা অবহিত করতে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তার কার্যালয়ে সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি এ নির্দেশনা দেন। বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) ইত্তেফাক পত্রিকায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, সাক্ষাৎকালে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও স্বাস্থ্য সচিব প্রধানমন্ত্রীকে জানান, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের রুল অব বিজনেস অনুসরণ না করে এবং বাংলাদেশ নার্সিং ও মিডওয়াইফারি কাউন্সিল আইন ভঙ্গ করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি বোর্ড টেকনোলজিস্ট ডিপ্লোমা ইন নার্সিং সায়েন্স অ্যান্ড মিডওয়াইফারি কোর্স পরিচালনা করছে। তারা জানান, নার্সিংয়ের বিভিন্ন কোর্স স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে পরিচালিত হয়। এক্ষেত্রে নার্সদের ন্যূনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা এইচএসসি পাশ। এর বিভিন্ন কোর্স, কারিকুলাম ও নীতিমালা ভিন্ন। ব্যবহারিক শিক্ষার জন্য কারিগরি বোর্ডের মাধ্যমে পরিচালিত নার্সিং কোর্সের শিক্ষার্থীদের হাতে-কলমে শিক্ষার জন্য কোনো রোগী ও হাসপাতাল নেই। তদুপরি এখন কারিগরি বোর্ড থেকে পাশ করা নার্সিং অ্যান্ড মিডওয়াইফারি কাউন্সিল থেকে রেজিস্ট্রেশন চাইছে। এ নিয়ে আদালতে স্বাস্থ্য ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পালটাপালটি মামলা চলছে। জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মনোযোগ দিয়ে সমস্যার কথা শোনেন এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে পাশ করা শিক্ষার্থীদের সমস্যা সমাধানের জন্য উভয়ের জন্য সম্মানজনক সমাধান খুঁজে বের করতে বলেন। এ সময় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সাথে স্বাস্থ্য ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে বসে সমস্যা সমাধানের উপায় খুঁজে বের করার নির্দেশনা দেন তিনি।
জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রী শিগিগরই জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের সঙ্গে বসে এর গ্রহণযোগ্য সমাধান খুঁজে বের করবেন। জানা গেছে, নার্সিং অ্যান্ড মিডওয়াইফারি বিভিন্ন কোর্স স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এখতিয়ারভুক্ত হলেও শিক্ষা মন্ত্রণালয় কারিগরি বোর্ডের মাধ্যমে ৯৪টি নার্সিং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে কয়েক বছর যাবৎ শিক্ষার্থী ভর্তি করছে। ইতিমধ্যেই সে সব প্রতিষ্ঠান থেকে চার হাজারেরও বেশি নার্স পাশ করে বের হয়েছে। আরো প্রায় ৬ হাজার শিক্ষার্থী পড়াশুনা করছে কিংবা ভর্তির জন্য অপেক্ষা করছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও স্বাস্থ্য সচিবের সঙ্গে আলাপকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ইতিমধ্যেই কারিগরি বোর্ডের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে যে সকল শিক্ষার্থী নার্সিং কোর্স পাশ করে বের হয়েছে তাদেরকে একেবারে অস্বীকার করা যাবে না। তারা একটি মন্ত্রণালয়ের অধীনে পড়াশোনা করে পাশ করেছে এবং সার্টিফিকেট লাভ করেছে। এখন তাদেরকে কীভাবে স্বীকৃতি দেওয়া যায়, কীভাবে তাদেরকে কাজে লাগানো যায় সে উপায় বের করতে হবে।
এদিকে নার্সিং সমস্যা সমাধানের নির্দেশ দেয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন বাংলাদেশ নার্সেস অ্যাসোসিয়েশন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল শাখার সভাপতি মোহাম্মদ কামাল হোসেন পাটওয়ারী ও সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান জুয়েল। গতকাল এক যৌথ প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে তারা এ ধন্যবাদ জানান।