বাগেরহাটের চিতলমারীতে নিখোঁজের ৭ দিন পর কলেজছাত্র সবুজের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। চিতলমারী সদর বাজারের কাছে ওয়াপদা’র ডোবার কচুরিপানার মধ্যে থেকে পা বাঁধা অবস্থায় তার লাশ উদ্ধার করা হয়। ঘটনার সাথে জড়িত দু’জনকে আটক করেছে পুলিশ। লাশ ময়না তদন্দের জন্য হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। এ ঘটনায় চিতলমারী থানায় একটি হত্যা মামলা করা হয়েছে। এলাকাবাসী এ নির্মম হত্যানকাণ্ডের দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবী করে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন
চিতলমারী থানার ওসি অনুকুল সরকার জানান, গত ১৩ আগস্ট বিকাল সাড়ে চারটার দিকে শেরে বাংলা ডিগ্রী কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র ও উপজেলার হিজলা ইউনিয়নের শিবপুর-কাটাখালী গ্রামের কৃষক পরিতোষ বিশ্বাসের একমাত্র ছেলে সবুজ বিশ্বাস বন্ধুদের ডাকে মোটর সাইকেল নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়। এদিন বন্ধুদের সাথে সে ঘুরতে যায়। এর পর রাতে আর বাড়িতে ফেরেনি সে। পরিবারের লোকজন আত্মীয়-স্বজন ও বিভিন্ন লোকের বাড়ি খোঁজ নিয়েও তার সন্ধান না পেয়ে এ বিষয়ে পরদিন ১৪ আগস্ট রাতে চিতলমারী থানায় একটি জিডি করেন । এর পর থেকে পুলিশ তাকে উদ্ধারের জন্য বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালায়।
মোবাইলের সূত্র ধরে গত শনিবার গভীর রাতে গোপালগঞ্জ শহরের মোহাম্মদ পাড়া এলাকার হাসান মৃধার বাড়িতে অভিযান চালিয়ে নিখোাঁজ সবুজের দুই বন্ধু লিমন ও সিব্বিরকে আটক করে পুলিশ। তাদেরকে আটকের পর জিজ্ঞাসাবাদে সবুজকে হত্যার কথা স্বীকার করে তারা। পুলিশের কাছে দেওয়া স্বীকার উক্তি মতে ১৩ আগষ্ট রাতে চিতলমারী থানা থেকে কিছুটা দূরে একটি পরিত্যক্ত ঘরে বসে আড্ডা দেওয়ার সময় ঠান্ডা মাথায় প্রথমে হাতুড়ি দিয়ে মাথায় আঘাত করে মাটিতে ফেলে দেয় সবুজকে। এ পর জ্ঞান হারিয়ে ফেলে সবুজ। এ সময় গলায় রশি দিয়ে শ্বাস রোধ করে তার মৃত্যু নিশ্চিত করে। পরে গভীর রাতে লাশ পাশের একটি ডোবায় কচুরির নিচে গুম করে রেখে সবুজের ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটি নিয়ে সিব্বির ও লিমন গোপালগঞ্জ শহরে তাদের আত্মীয় বাড়িতে গিয়ে আশ্রয় নেয়।
হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত লিমন খান উপজেলার আডুয়াবর্ণি গ্রামের হাসমত আলী খানের ছেলে। সে এসএম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্র ও সিব্বির ওই একই গ্রামের ছালাম খানের ছেলে। সে এসএম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণিতে পড়ে। তাদের আটকের সময় সবুজের মোটরসাইকেলটি উদ্ধার করেছে পুলিশ। এদিকে সবুজের খুনিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করে এলাকাবাসী চিতলমারী সদর বাজারে একটি প্রতিবাদ মিছিল বের করে।
বাগেরহাট জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাহাদাৎ হোসেন জানান, প্রেম ঘটিত কারণে এ হত্যাকাণ্ড ঘটতে পারে বলে প্রাথমিক ভাবে ধারণা করা যাচ্ছে। এ ঘটনার সাথে কোন প্রভাবশালী মহল জড়িত থাকলে তাদেরও দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে।