সন্ত্রাসী হামলার আশঙ্কায় নিরাপত্তা চেয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) নয় শিক্ষক। গতকাল রোববার নগরীর মতিহার থানায় তারা এই জিডি করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন থানার ওসি সিদ্দিকুর রহমান। তিনি বলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
জিডি করা শিক্ষকরা হলেন- ভূতত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক সুলতান-উল ইসলাম, সাবেক প্রক্টর ও মনোবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মজিবুল হক আজাদ খান, প্রাণরসায়ন ও অণুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের ড. জাহাঙ্গীর আলম, সংগীত বিভাগের অধ্যাপক অসিত রায়, ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক মিজানুর রহমান, নাট্যকলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক এসএম ফারুক হোসেন, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক এক্রাম উল্ল্যাহ ও ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক আলী রেজা।
জিডিতে তারা উল্লেখ করেন, গত ১০ সেপ্টেম্বর দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষক ডিনস কমপ্লেক্সের শিক্ষক লাউঞ্জে আলোচনা করছিলেন। এ সময় তাদের কাছে খবর আসে আবদুল্লাহ আল মামুন নামে একজন বহিরাগত ও রাবি স্কুলের সহকারী শিক্ষক হিসেবে সদ্য যোগ দেওয়া সাদ্দাম হোসেনের নেতৃত্বে কিছু সংখ্যক বহিরাগত ডিনস কমপ্লেক্সের বাইরে থাকা শিক্ষকদের গাড়িগুলোর গোপনে ভিডিও ধারণ করছে। পরে শিক্ষকরা সেখানে উপস্থিত হলে তারা শিক্ষকদের ছবি এবং ভিডিও ধারণ করে।
শিক্ষকরা জিডিতে অভিযোগ করেন, ছবি ও ভিডিও ধারণের কারণ জানতে চেয়ে শিক্ষকরা এগিয়ে এলে তারা সেখান থেকে চলে যান। তবে যাওয়ার সময় তারা শিক্ষকদের লক্ষ্য করে অশ্রাব্য ভাষা ও আক্রমণাত্মক অঙ্গভঙ্গি প্রদর্শন করেন। ওই বহিরাগতদের দ্বারা যে কোনো সময় হামলা ও তাদের গাড়ির ক্ষতি সাধন হতে পারে আশঙ্কা করে ডায়েরিতে শিক্ষকরা নিজেদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবি জানান।
তবে এ বিষয়ে উল্লেখকৃত রাবি স্কুলের সহকারী শিক্ষক সাদ্দাম হোসেন ও বহিরাগত আবদুল্লাহ আল মামুনের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
নিরাপত্তা চেয়ে জিডি করা শিক্ষকরা রাবির সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক মুহাম্মদ মিজানউদ্দিনপন্থি। তারা বর্তমান প্রশাসনের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ এনে অপসারণ দাবি করে আসছিলেন। 'দুর্নীতিবিরোধী শিক্ষক সমাজ'-এর ব্যানারে তারা বর্তমান প্রশাসনের 'অনিয়মের' বিচার চেয়ে আন্দোলন করছিলেন। এতে প্রায় অর্ধশতাধিক শিক্ষক অংশ নেন। শিক্ষকদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আগামী ১৯ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনে রাবি উপাচার্য অধ্যাপক এম আবদুস সোবহান ও উপ-উপাচার্য অধ্যাপক চৌধুরী মো. জাকারিয়াকে তলব করা হয়েছে।