নিরাপত্তাহীনতায় ৫ মাস কলেজে যেতে পারেন না অধ্যক্ষ - Dainikshiksha

নিরাপত্তাহীনতায় ৫ মাস কলেজে যেতে পারেন না অধ্যক্ষ

নরসিংদী প্রতিনিধি |

নরসিংদী সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ আনোয়ারুল ইসলাম প্রায় পাঁচ মাস ধরে কলেজে যেতে পারছেন না। ছাত্রলীগের সঙ্গে বিরোধের জেরে কলেজে না গিয়ে রাজধানী থেকে তিনি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির আর্থিক ও নীতিনির্ধারণী বিষয়গুলো দেখছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

কলেজে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অধ্যক্ষ আনোয়ারুলের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ এনে গত বছরের সেপ্টেম্বর থেকে  সাধারণ ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের নামে কিছু শিক্ষার্থী আন্দোলনে নামেন। অধ্যক্ষের পদত্যাগের দাবিতে সেই আন্দোলনের সঙ্গে পরবর্তীকালে যুক্ত হয় কলেজ শাখা ছাত্রলীগ। কলেজে উপস্থিত থাকলে অভিযোগের সুষ্ঠু তদন্ত সম্ভব নয় এই অজুহাতে অধ্যক্ষকে কলেজে যেতে নিষেধ করে তারা। এরপর থেকে অধ্যক্ষ কলেজে যেতে পারছেন না।

কলেজ  শাখা ছাত্রলীগ ও সাধারণ ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ বলছে, সাধারণ শিক্ষার্থীরা ১৮টি সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে অধ্যক্ষের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলনে নেমেছিলেন। তাঁদের দাবিগুলোর সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে পরবর্তী সময়ে যুক্ত হয় কলেজ শাখা ছাত্রলীগ। ২৩ সেপ্টেম্বর অভিযোগগুলোর বিষয়ে জানতে ছাত্রসংগঠন দুটোর নেতারা অধ্যক্ষের কক্ষে যান। সে সময় কলেজের সাবেক ভিপি ও জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল হাসান শামীম নেওয়াজের উপস্থিতিতে সাংবাদিকদের সামনে অধ্যক্ষ তখন বলেছিলেন, বিভিন্ন সময়ে ছাত্রনেতাদের চাহিদা মেটাতে কিছু অনিয়ম হয়েছে এবং সেগুলো ঢাকতে অডিট কর্তৃপক্ষকে ১০ লাখ টাকা ঘুষ দেওয়া হয়। কিন্তু কোন কোন ছাত্রনেতার চাহিদা মেটাতে এসব খরচ করতে হয়েছে এই প্রশ্নের উত্তরে তিনি কিছু বলতে পারেননি। সে সময় তাঁকে অন্য কোনো কলেজে চলে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।

অধ্যক্ষ আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘কলেজটির অধিভুক্ত খাতসহ বিভিন্ন খাত আমি বন্ধ করে দিয়েছিলাম। এসব খাতে এমনিতেই অনেক টাকা জমে আছে। আগামী ১০ বছরেও এসব টাকা শেষ হবে না। টাকার পাহাড় করে তো লাভ নাই। তাই শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে টাকা নেওয়া বন্ধ করে দিয়েছিলাম। ছাত্রলীগের সন্দেহ, এসব খাত বন্ধ করে আমি টাকা আত্মসাৎ করেছি। এমন সন্দেহেই তারা আমার ওপর ক্ষুব্ধ হয়।’

তিনি আরও বলেন, শুধুমাত্র নিরাপত্তার অভাব বোধ করায় মন্ত্রণালয়কে জানিয়ে ঢাকায় থেকে কলেজের প্রয়োজনীয় কাজ করছি। আমার বিরুদ্ধে আর্থিক দুর্নীতির যে অভিযোগ উঠেছিল, তা শুধু ভুল বোঝাবুঝির কারণে। আমি এক পয়সারও দুর্নীতি করিনি। তাদের অভিযোগগুলোর বিষয়ে মন্ত্রণালয় ও পুলিশের তদন্ত হয়েছে। এসব তদন্তে আমাকে অভিযুক্ত করার কোনো ভিত্তি পাওয়া যায়নি।

কলেজ কর্তৃপক্ষ বলছে, তারা মন্ত্রণালয় থেকে একটি চিঠি পেয়েছে। সেখানে নির্দেশনা দেওয়া আছে, ২৪ সেপ্টেম্বরের পর থেকে অধ্যক্ষ ঢাকার বাসায় থেকে কলেজের আর্থিক ও নীতিনির্ধারণী বিষয়গুলো দেখবেন। আর কলেজে থেকে দাপ্তরিক কাজগুলো উপাধ্যক্ষ করবেন। এভাবেই চলছে কলেজ। পরীক্ষা, ক্লাসসহ বিভিন্ন দৈনন্দিন কার্যক্রম অধ্যক্ষের সঙ্গে ফোনে কথা বলে করা হচ্ছে। অন্যদিকে শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতাসহ আর্থিক বিষয়সংশ্লিষ্ট কাগজপত্রগুলো ঢাকায় নিয়ে অধ্যক্ষের স্বাক্ষর আনতে হচ্ছে।

কলেজের শিক্ষক শিক্ষার্থী জানান, আনোয়ারুল ইসলাম যেদিন কলেজটিতে অধ্যক্ষ হয়ে আসেন, সেদিন সারা দিন বসে থেকেও দায়িত্বভার বুঝে নিতে পারেননি। পরবর্তীকালে ছাত্রলীগের সঙ্গে সমঝোতা করে দায়িত্বভার নেন তিনি। প্রথম দিকে ওই ছাত্রসংগঠনের কথা ছাড়া কিছুই করতেন না তিনি। এমন নমনীয় অবস্থানের কারণে ছাত্রলীগেরও চাহিদা দিন দিন বাড়তে থাকে। শেষ দিকে তাদের চাহিদাগুলো পূরণ করতে না পারায় অপ্রিয় হয়ে ওঠেন তিনি।

কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি শিব্বির আহমেদ বলেন, অধ্যক্ষ স্যারের সঙ্গে ছাত্রলীগের কখনোই খারাপ সম্পর্ক ছিল না। উনি যদি দায়মুক্ত হয়ে ফিরে আসতে পারেন, তবে আমরা তাঁকে সম্মাননা দেব। তবে অভিযোগগুলো সম্পর্কে কোনো তদন্ত এখনো শুরু হয়নি। তদন্ত হয়ে গেলেই সমাধানের পথ খুলবে।

কলেজের উপাধ্যক্ষ জাহান আরা বেগম বলেন, ২৪ সেপ্টেম্বরের পর থেকে একা সবকিছু সামলাতে হচ্ছে। এক হাতে এসব সামলাতে গিয়ে উপাধ্যক্ষের কক্ষের ভেতরেই বাসা বানিয়ে দিনরাত থাকছি। এই পরিস্থিতিতে হয় অধ্যক্ষ স্যার আসুক নতুবা নতুন অধ্যক্ষ দেওয়া হোক। দ্রুত বিষয়টির সমাধান দরকার।

হাইকোর্টের আদেশ পেলে আইনি লড়াইয়ে যাবে বুয়েট: উপ-উপাচার্য - dainik shiksha হাইকোর্টের আদেশ পেলে আইনি লড়াইয়ে যাবে বুয়েট: উপ-উপাচার্য প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ: তৃতীয় ধাপের ফল প্রকাশ হতে পারে আগামী সপ্তাহে - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ: তৃতীয় ধাপের ফল প্রকাশ হতে পারে আগামী সপ্তাহে ভূমির জটিলতা সমাধানে ভূমিকা রাখবেন নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা - dainik shiksha ভূমির জটিলতা সমাধানে ভূমিকা রাখবেন নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা সর্বজনীন শিক্ষক বদলি চালু হোক - dainik shiksha সর্বজনীন শিক্ষক বদলি চালু হোক ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের বিএসসির সমমান দিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কমিটি - dainik shiksha ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের বিএসসির সমমান দিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কমিটি রায় জালিয়াতি করে পদোন্নতি: শিক্ষা কর্মকর্তা গ্রেফতার - dainik shiksha রায় জালিয়াতি করে পদোন্নতি: শিক্ষা কর্মকর্তা গ্রেফতার কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0066931247711182