বয়স ৬০ হলে প্রতিষ্ঠান প্রধানের দায়িত্ব হস্তান্তরের সরকারি নির্দেশ থাকলেও তা মানা হচ্ছে না। সম্প্রতি লালমনিরহাটের কালিগঞ্জ উপজেলার উত্তর বাংলা কলেজের ষাটোর্ধ্ব অধ্যক্ষ এ এস এম মনওয়ারুল ইসলামের মেয়াদকাল বৃদ্ধির সুপারিশের অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। এ পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. সোহরাব হোসাইন বরাবর একটি অভিযোগ দেয়া হয়েছে।
অভিযোগে বলা হয়, বয়স ৬০ হলেও সরকারি নীতিমালা লঙ্ঘন করে লালমনিরহাটের কালিগঞ্জ উপজেলার উত্তর বাংলা কলেজের অধ্যক্ষ এ এস এম মনওয়ারুল ইসলামের চাকরির মেয়াদ একবছর বাড়ানো হয়েছে। এছাড়া অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অনার্স, মাস্টার্স শিক্ষকদের স্কেল না মেনে বেতন দেয়া, শিক্ষক-কর্মচারীদের সাথে খারাপ ব্যবহার ও মানসিক নির্যাতন এবং আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ করা হয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে। অভিযোগ আরও বলা হয়, আর্থিক অনিয়ম অব্যাহত রাখতেই প্রতিষ্ঠানটির গভর্নিং বডি অধ্যক্ষের মেয়াদ বাড়াতে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে সুপারিশ করেছে।
এদিকে ২০১১ খ্রিষ্টাব্দের ৬ জুন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জারি করা একটি চিঠিতে বলা হয়, প্রতিষ্ঠান প্রধানের বয়স ৬০ হলে জ্যেষ্ঠতম শিক্ষকের কাছে দায়িত্বভার হস্তান্তর করতে হবে। এর ব্যত্যয় হলে তা বিধি বহির্ভূত হিসেবে গণ্য হবে। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত বছর জারি করা এমপিও নীতিমালা ও জনবল কাঠামোতেও এমনটা বলা হয়েছিল। ঢাকা বোর্ড থেকে একাধিক বার বিজ্ঞপ্তি জারি করে ষাটোর্ধ্ব শিক্ষকদের দায়িত্ব ভার হস্তান্তর করতে বলা হয়েছে। একই ষাটোর্ধ্ব শিক্ষকদের মেয়াদ বাড়ানোর আবেদন গ্রহণ করা হবে না বলেও জানানো হয়।
কিন্তু সরকারি নির্দেশনা না মেনে লালমনিরহাটের কালিগঞ্জ উপজেলার উত্তর বাংলা কলেজের ষাটোর্ধ্ব অধ্যক্ষ এ এস এম মনওয়ারুল ইসলামের মেয়াদকাল বৃদ্ধির সুপারিশটি অনুমোদন করেছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজ পরিদর্শক ড. মো. মনিরুজ্জামান স্বাক্ষরিত চিঠিতে, ষাটোর্ধ্ব অধ্যক্ষকে এক বছরের জন্য পুনর্নিয়োগ দেয়ার সুপারিশটি অনুমোদন দেয়া হয়।
এ বিষয়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজ পরিদর্শক ড. মো. মনিরুজ্জামান দৈনিক শিক্ষাকে বলেন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় আইন অনুযায়ী একজন শিক্ষক ৬৫ বছর পর্যন্ত কর্মরত থাকতে পারেন। সে পরিপ্রেক্ষিতে মেয়াদ বাড়ানোর আবেদনের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত নির্দেশনা আছে তা আমরা জানি। আমরা বিষয়টি নিয়ে তাদের সাথে আলোচনা করেছি। তারা ষাটোর্ধ্ব প্রতিষ্ঠান প্রধানের মেয়াদ বাড়ানোর বিধানটি পর্যালোচনা করতে বলেছেন। সিনেট অধিবেশনে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা হবে। তিনি আরও বলেন, কলেজ র্যাংকিংয়ের প্রেক্ষিতে অধ্যক্ষের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে।