ফেনীর প্রতিবাদী মাদরাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে পুড়িয়ে হত্যা ও হত্যার আগে করা যৌন হয়রানির ঘটনায় ওই মাদরাসার ব্যবস্থাপনা কমিটির চেয়ারম্যান ও ফেনীর অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) পি কে এনামুল করিমের নিষ্ক্রিয়তা বা অবহেলার অভিযোগের সত্যতা পায়নি তদন্ত কমিটি। তদন্ত কমিটির এই প্রতিবেদন গতকাল হাইকোর্টে দাখিল করা হয়েছে।
বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের হাইকোর্ট বেঞ্চে গতকাল সোমবার তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়। হাইকোর্টের নির্দেশে চট্টগ্রাম বিভাগের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (রাজস্ব) হাবিবুর রহমান অভিযোগের তদন্ত করেন। এই তদন্ত প্রতিবেদন জনপ্রশাসন সচিবের পক্ষ থেকে আদালতে দাখিল করা হয়। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ড. ইউনুছ আলী আকন্দের করা এক রিট আবেদনে এ আদেশ দেন আদালত। আদালতে আবেদনকারী নিজেই শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল সাইফুল আলম।
যৌন নির্যাতনের অভিযোগে গত ২৭ মার্চ একই মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলার বিরুদ্ধে মামলা করেন নুসরাতের মা শিরিন আক্তার। এরপর ৪ এপ্রিল নুসরাত ও তার মা অধ্যক্ষ সিরাজের বিচার চাইতে মাদরাসার গভর্নিং বডির সভাপতি এনামুল করিমের অফিসে যান। এ বিষয়ে ‘এডিএম এনামুলের ভূমিকা, পুলিশের তদন্তের এখতিয়ার নিয়ে প্রশ্ন মন্ত্রণালয়ের’ শিরোনামে গত ২১ জুন পত্রিকায় প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, নুসরাতকে ঘটনাটি চেপে যেতে বলেন এনামুল করিম। এই প্রতিবেদন যুক্ত করে রিট আবেদন করা হয়।
গতকাল আদালতে দাখিল করা প্রতিবেদনে বলা হয়, নুসরাতের মায়ের দায়ের করা মামলায় একমাত্র আসামি অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলা জেলহাজতে থাকায় মামলার বিষয়ে তাঁর সরাসরি কিছু করার নেই মর্মে এডিএম পি কে এনামুল করিম যে বক্তব্য দিয়েছেন তা আইনসংগত। প্রতিবেদেন আরও বলা হয়, এনামুল করিমের নিষ্ক্রিয়তা বা অবহেলার কথা বর্ণনা করে কিছু কিছু মিডিয়ায় যে সংবাদ প্রচারিত হয়েছে তার সত্যতা পাওয়া যায়নি। এই প্রতিবেদন গতকাল আদালত নথিভুক্ত করেন। এরপর এ বিষয়ে আগেই জারি করা রুল শুনানির জন্য প্রস্তুত করতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন।