রাজশাহীতে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বায়োমেট্রিক হাজিরা মেশিন কেনায় হরিলুটের অভিযোগ পাওয়া গেছে। বাজার মূল্যে নয় হাজার টাকা হলেও দাম ধরা হয়েছে ১৯ হাজার করে, যা প্রতিটিতে ১০ হাজার টাকা বেশি। অভিযোগ উঠেছে এতে জড়িত রয়েছেন শিক্ষা কর্মকর্তা ও শিক্ষকদের একটি সিন্ডিকেট।
জানা গেছে, গত বছরের ২৩ অক্টোবর প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সব প্রাথমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ডিজিটাল হাজিরা মেশিন লাগানোর জন্য নির্দেশনা দেয়। সে প্রেক্ষিতে রাজশাহীর তানোরে ১২৮টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বায়োমেট্রিক হাজিরা মেশিন কেনা হয়। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানরা এসব বায়োমেট্রিক হাজিরা মেশিন বুঝে নেন। কিন্তু অভিযোগ উঠেছে মেশিনগুলো দ্বিগুণ দামে কেনা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানে প্রধানদের বিরুদ্ধে ক্রয়কৃত ভাউচার ঠিকমতো না দেখানোর অভিযোগও রয়েছে। মেশিনগুলো ‘ডিজিটাল সলিইউশন’ নামে একটি ভুঁইফোর ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে কেনা হয়। প্রতিষ্ঠানটির যে ঠিকানা ব্যবহার করা হয়েছে সেখানে এ নামের কোনো ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি।
তানোর উপজেলার ১২৩ নম্বর দেওতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সেই মেশিন লাগানো হয়েছে। তবে প্রধান শিক্ষক মেশিন কেনার কোনো রশিদ দেখাতে পারেননি। স্কুলটির প্রধান শিক্ষক মাসুদ রানা দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, রশিদ সবাইকে দেয়া হয়েছে। তবে আমারটা নেয়া হয়নি। আমার (প্রধান শিক্ষক) রশিদ বেলঘড়িয়ার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককের কাছে আছে।
এছাড়া একই উপজেলার রাতুল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অবস্থা একই।
বেলঘড়িয়া প্রাথমকি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আতাউর রহমান এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি। তবে এই প্রধান শিক্ষক বায়োমেট্রিক হাজিরা কেনাকাটায় দেখভাল করেছেন বলে অভিযোগে রয়েছে।
তানোর উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার মিজানুর রহমান দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, সহকারী শিক্ষা অফিসার জুবাইদা খানম শিক্ষকদের সঙ্গে লিয়াজোঁ করে। হঠাৎ করে আমাদের নিদের্শনা দেয় বিদ্যালয়ে শিক্ষকদের বায়োমেট্টিক হাজিরা মেশিন লাগাতে হবে।
এ বিষয়ে তানোরের সহকারী শিক্ষা অফিসার জুবাইদা খানম দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, কোথায়ও কেউ কোনোভাবে বলতে পারবে না আমি কারো সঙ্গে বসেছি, এ নিয়ে আলোচনা করেছি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাসরিন বানু দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, এটা শিক্ষা অফিসার জানেন। শিক্ষা অফিসার ওই শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলেই লাগিয়েছে।
রাজশাহী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবদুস সালাম দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, অভিযোগ পেয়েছে। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।