নয়া নীতিমালা প্রধান শিক্ষক ও অধ্যক্ষ নিয়োগে শূন্যতা সৃষ্টি করবে - দৈনিকশিক্ষা

নয়া নীতিমালা প্রধান শিক্ষক ও অধ্যক্ষ নিয়োগে শূন্যতা সৃষ্টি করবে

বিশ্বজিৎ রায় |

সদ্যঘোষিত বেসরকারি শিক্ষকদের এমপিও নীতিমালায় প্রতিষ্ঠান প্রধান নিয়োগে যে শর্ত আরোপ করা হয়েছে, তাতে সারা দেশে শূন্যতা তৈরি হবে। একই সঙ্গে তা জবাবদিহিমূলক পরীক্ষার পথ বন্ধও করবে। মেধাবীদের প্রশাসনিক পদে আসার পথ রুদ্ধ করবে। ডিজিটাল যুগে বাস করে পেছনে ফিরে যাওয়ার  যুক্তি কী? ১২ বছরের অভিজ্ঞতায় সিনিয়র শিক্ষকদের সুযোগ তৈরির ফলে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার ক্ষেত্র তৈরি হয়েছিল।

সামনে এমনও হবে সহকারী প্রধান শিক্ষকরা তাদের মনমত কয়েকজনকে ডেকে একটি সাজানো নাটক ঘটিয়ে প্রতিষ্ঠান প্রধান বনে যাবেন। একই ভাবে এ পদ্ধতিতে সম্ভাবনা থাকে স্বেচ্ছাচারী হওয়ার। ৯৫-এর ম্যানুয়াল অনুযায়ী প্রণীত জনবল কাঠামোতে প্রধান শিক্ষক ও সুপার নিয়োগের যোগ্যতা ছিল স্নাতক ২য় শ্রেণিসহ সহকারী প্রধান শিক্ষক হিসেবে ৩ বছরের অভিজ্ঞতাসহ ১৫  বছরের অভিজ্ঞতা। এর ফলে দেশে তৈরি হলো শূন্যতা। স্কুল কর্তৃপক্ষ কখনও জুনিয়র শিক্ষক, কখনও সিনিয়র শিক্ষক আবার কখনও সহপ্রধান দিয়ে প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করতে লাগলেন। তৈরি হতে লাগল বিশৃঙ্খলা। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠদান কার্যক্রম ব্যাঘাত ঘটতে থাকে।

পরিস্থিতি এড়াতে ২০০৮ খ্রিস্টাব্দের ২ এপ্রিল প্রতিষ্ঠান পদটি জনবল কাঠামোর বাইরে রেখে পদ পূরণ কল্পে একটি প্রজ্ঞাপন জারি হয়। সহপ্রধানের পদ নিয়ে সমস্যা হতে থাকলে আবারও চার মাস পর অর্থাৎ ২০০৮ খ্রিস্টাব্দের ১১ আগস্ট সহপ্রধান ও প্রধান শিক্ষকের পদটি জনবল কাঠামোর বাইওে রেখে পূরণের লক্ষ্যে আরও একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা রহয়। কিন্তু এতেও পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়নি সহ-প্রধান হয়ে প্রধান শিক্ষক হওয়ার কারণে। পরে ৩১ ২০০৯ খ্রিস্টাব্দে প্রধান শিক্ষকের জন্য স্নাতক পাশসহ ১২ এবং সহপ্রধানের জন্য ১০ বছরের অভিজ্ঞতা উল্লেখ করে প্রজ্ঞাপন জারি করলে প্রধান শিক্ষকের শূন্যপদগুলো পূরণ শুরু করে, যা  ২০১০ খ্রিস্টাব্দের ম্যানুয়ালে সন্নিবেশিত করা হয়। সংশোধিত জনবল কাঠামোতে প্রধান শিক্ষকের স্নাতক ২য় বিভাগসহ ১২ বছরের অভিজ্ঞতা এবং সহপ্রধান ও নিম্ম মাধ্যমিকের প্রধান শিক্ষকের স্নাতক ২য় বিভাগ ১০ বছরের অভিজ্ঞতাসহ আরও একটি জনবল কাঠামো জারি করলে আবারও প্রশাসনিক পদে শূন্যতা সৃষ্টি হয়। কারণ স্নাতক ২য় বিভাগসহ উক্ত ক্যাটাগরির প্রতিষ্ঠান প্রধানের অভাব ছিল।

অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানে প্রতিষ্ঠান প্রধানের পদ খালি থেকে যাচ্ছিল এবং প্রশাসনিক কর্মকাণ্ড ব্যাহত হচ্ছিল। ২০১২ খ্রিস্টাব্দের ৩০ সেপ্টেম্বর ৩য় বিভাগপ্রাপ্তদেরও প্রতিষ্ঠান প্রধান পদে আবেদনের যোগ্যতা থাকবে উল্লেখ করে আরও একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। পরবর্তীতে  ২০১৩ খ্রিস্টাব্দের মার্চ মাসে প্রধান শিক্ষক, সুপার ও অধ্যক্ষের জন্য স্নাতকসহ ১২ বছরের ও  নিম্ন মাধ্যমিকের প্রধান শিক্ষক, সহপ্রধানসহ সুপার ও উপাধ্যক্ষের জন্য স্নাতকসহ ১০ বছরের বিধান রেখে জনবল কাঠামো সংশোধন করলে প্রতিষ্ঠান প্রধানের পদগুলো পূরণ হতে থাকে এবং পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে থাকে।

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সরাসরি নিয়োগ হয়ে থাকে। আবার পদোন্নতি পেয়েও থাকে। যারা সরাসরি নিয়োগ লাভ করে তারাও তো প্রাথমিকের সমাপনি পরীক্ষার মত বড় পাবলিক পরীক্ষা সামাল দিয়ে প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করে যাচ্ছে। কিন্তু মাধ্যমিকসহ পরবর্তী পর্যায়ে ব্যতিক্রম।  এখানে অভিজ্ঞতা সংশ্লিষ্ট শিক্ষক রাখতে গিয়ে ১৯৯৫ খ্রিস্টাব্দের অ্যানালগ ম্যানুয়ালকে ডিজিটাল যুগে টেনে আনা হয়েছে। এ নিয়ে দেশব্যাপী শিক্ষক সমাজ প্রতিবাদ মুখর হয়ে উঠেছে। এ ধরনের কালাকানুন জারি করার আগে সমগ্র বিষয়টি পর্যবেক্ষণে আনতে হতো। তাহলে সুন্দর একটি তথ্য বেরিয়ে আসত। নীতিমালা প্রণয়ন কমিটি কোন পর্যবেক্ষণে এ আইন জারি করেছেন তা বোধগম্য নয়। 

লেখক: শিক্ষক, মৃজাপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়, তালা, সাতক্ষীরা

[মতামতের জন্য সম্পাদক দায়ী নন]

ভিকারুননিসায় ৩৬ ছাত্রী ভর্তিতে অভিনব জালিয়াতি - dainik shiksha ভিকারুননিসায় ৩৬ ছাত্রী ভর্তিতে অভিনব জালিয়াতি ‘চার আনা’ উৎসব ভাতা: প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রী সমীপে - dainik shiksha ‘চার আনা’ উৎসব ভাতা: প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রী সমীপে মাকে ভরণপোষণ না দেয়ায় শিক্ষক গ্রেফতার - dainik shiksha মাকে ভরণপোষণ না দেয়ায় শিক্ষক গ্রেফতার ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন - dainik shiksha ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে - dainik shiksha জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা - dainik shiksha রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0036699771881104