পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে অনিয়মে ‘বন্দি’ ৪৫১ কোটি টাকা - দৈনিকশিক্ষা

পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে অনিয়মে ‘বন্দি’ ৪৫১ কোটি টাকা

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে অধিকতর উন্নয়নের ৪৫১ কোটি ৪৭ লাখ টাকার প্রকল্প পাস হয় ২০১৯ সালের ৩ সেপ্টেম্বর। মেয়াদ তিন বছর। অথচ গত এক বছরে একটি টাকাও খরচের খাত তৈরি করতে পারেনি প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা। কোনো কাজ না হলেও থেমে নেই অনিয়ম।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. হারুন অর রশিদ এবং অধিকতর উন্নয়ন পর্যায়-২-এর প্রকল্প পরিচালক ওবায়দুল ইসলামের কারণেই এ প্রকল্প ‘বন্দি’ বলে অভিযোগ উঠেছে।

প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, একনেক সভায় প্রকল্পটি পাস হওয়ার কয়েক মাস পর চলতি বছর ২৩ মার্চ পরিচালক হিসেবে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের অবসরপ্রাপ্ত প্রকৌশলী ওবায়দুল ইসলামকে নিয়োগ দেওয়া হয়। ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট প্রপোজাল (ডিপিপি) নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি আকারে প্রকাশের মাধ্যমে সরাসরি প্রকল্প পরিচালক নিয়োগের বিধান থাকলেও তাঁকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে প্রেষণে (চুক্তিভিক্তিক)। এর প্রায় আড়াই মাস পর চলতি বছরের ৩ জুন পরামর্শক নিয়োগের জন্য পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দেন তিনি। বিজ্ঞপ্তির পর আবার প্রায় সাড়ে চার মাস পেরিয়ে গেলেও এখনো পরামর্শক নিয়োগ করা সম্ভব হয়নি।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, প্রকল্পের পরামর্শক নিয়োগের দরপত্র মূল্যায়ন কমিটিতে পাবলিক প্রকিউরমেন্ট রুল (পিপিআর) অনুযায়ী নিজ মন্ত্রণালয় অর্থাৎ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বাইরে দুজন সদস্য নিয়োগের শর্ত রয়েছে। অথচ নিয়োগ দেওয়া হয়েছে মাত্র একজন।

নির্ভরযোগ্য ও সূত্র জানিয়েছে, দুমকি উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী বিপুল কুমার বিশ্বাসকে প্রথমে ওই সদস্য পদে নিয়োগ করা হয়। কিন্তু কাগজপত্রে ব্যাপক অনিয়ম থাকায় তিনি (উপজেলা প্রকৌশলী) সদস্যপদ গ্রহণ না করে পদত্যাগ করেন। পরে ওই উপজেলার জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী সোহেল  রানাকে নিয়োগ দেওয়া হয়।

ওই সূত্রে আরো জানা গেছে, দরপত্র মূল্যায়ন কমিটিতে পিপিআরের প্রশিক্ষণবিহীন একাধিক সদস্য নিয়োগ করা হয়েছে। তাঁরা হলেন অধ্যাপক মো. মনিরুজ্জামান চৌধুরী, ড. মো. কামরুল ইসলাম ও প্রকৌশলী মো. আমির হোসেন। প্রশিক্ষণবিহীন সদস্য নিয়োগের মাধ্যমে পিপিআর আইন ২০০৮ ভঙ্গ করা হয়েছে।

এ ছাড়াও পিপিআর আইন ২০০৮ ও পবিপ্রবির আইন অনুসারে, ৫০ লাখ টাকার বেশি যেকোনো দরপত্র আহ্বানের আগে প্রাক্কলন (এস্টিমেট) তৈরি করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়ার্কস কমিটি ও রিজেন্ট বোর্ডে অনুমোদনের নিয়ম রয়েছে। কিন্তু প্রকল্প পরিচালক কোনো প্রাক্কলন তৈরি করেননি। প্রাক্কলন তৈরি না করে পরামর্শক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি আহ্বান করা বেআইনি।

এদিকে অ্যানুয়াল প্রকিউরমেন্ট প্ল্যান (এপিপি) তৈরি করে তা সেন্ট্রাল প্রকিউরমেন্ট টেকনিক্যাল ইউনিটে (সিপিটিইউ) পাঠানোর পর দরপত্র আহ্বান করার কথা। তাও মানেননি প্রকল্প পরিচালক।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রকল্প সংশ্লিষ্ট একজন সহকারী রেজিস্ট্রার জানান, সম্প্রতি ডেভেলপমেন্ট ডিজাইন কনসালট্যান্ট (ডিডিসি) নামের একটি কম্পানির প্রতিনিধি প্রধান প্রকৌশলী আমির হোসেনসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্থান ঘুরে গেছেন। ওই প্রতিনিধির বাড়ি দুমকি উপজেলার আংগারিয়াতে।

অথচ দরপত্রের মূল্যায়ন চলাকালে কোনো ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ব্যক্তিগত সাক্ষাৎ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।

বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজের এক ঠিকাদার অভিযোগ করেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক ব্যক্তি প্রকল্প উপদেষ্টা লিমিটেড নামের একটি কম্পানিকে কাজটি দেওয়ার জন্য উঠে-পড়ে লেগেছে।

এ ছাড়াও শহীদুল হক অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটের প্রয়াত মালিক স্থপতি রবিউল হোসাইন এ বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিকল্পনা, উন্নয়ন ও ওয়ার্কস কমিটির ২০১৭-২০১৯ মেয়াদে সদস্য ছিলেন। তাঁর সঙ্গে আগের একটি প্রকল্পের পরিচালক আব্দুল মোতালেব খানের সম্পর্ক ভালো ছিল। আর আব্দুল মোতালেব উপাচার্য এবং প্রকল্প পরিচালকের ঘনিষ্টজন হিসেবে পরিচিত। মোতালেব খান আবার শহীদুল হক অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েট কম্পানির পক্ষে তদবির করছেন। এ ছাড়া কাজটি পেতে স্থপতি সংসদ লিমিটেড নামক একটি কম্পানির প্রতিনিধি হুমায়ুন প্রকল্প পরিচালক ওবায়দুলের সঙ্গে নিয়মিত বিমানে যাতায়াত করেন বলে সূত্র নিশ্চিত করেছে।

পিপিআর ২০০৮-এর তফসিল ৩-অংশ ক বিধি ৮ (১৪) অনুযায়ী, সর্বোচ্চ ছয় সপ্তাহের মধ্যে দরপত্র সম্পন্ন করার নিয়ম থাকলেও এরই মধ্যে ১৮ সপ্তাহ পার হয়েছে? এতে আইন অনুসারে দরপত্রটি এরই মধ্যেই বাতিল হয়ে  গেছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রকল্প পরিচালক ওবায়দুল ইসলাম দাবি করেন, ‘আমরা শতভাগ নিয়মের মধ্যে থেকে অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি।’

দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির সভাপতি অধ্যাপক মো. মনিরুজ্জামান চৌধুরী বলেন, ‘নানা সমস্যার কারণে এস্টিমেট ও এপিপি তৈরি করা হয়নি। সঠিকভাবে কাজ করার জন্য সময় বেশি লাগছে। আমার পিপিআরের প্রশিক্ষণ নাই। তবে বিভিন্ন কমিটিতে অধ্যাপকরা থাকেন সভাপতি হিসেবে। আমাকেও সেই হিসেবে রাখা হয়েছে।’

এ বিষয়ে জানতে উপাচার্য অধ্যাপক মো. হারুন অর রশিদকে মোবাইলে ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি। এসএমএস দিলেও সাড়া দেননি।

দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি - dainik shiksha দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি আকাশে তিনটি ড্রোন ধ্বংস করেছে ইরান, ভিডিয়ো প্রকাশ - dainik shiksha আকাশে তিনটি ড্রোন ধ্বংস করেছে ইরান, ভিডিয়ো প্রকাশ অভিভাবকদের চাপে শিক্ষার্থীরা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছেন - dainik shiksha অভিভাবকদের চাপে শিক্ষার্থীরা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছেন আমি সরকার পরিচালনা করলে কৃষকদের ভর্তুকি দিবই: প্রধানমন্ত্রী - dainik shiksha আমি সরকার পরিচালনা করলে কৃষকদের ভর্তুকি দিবই: প্রধানমন্ত্রী বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মামলা ১২ হাজারের বেশি - dainik shiksha বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মামলা ১২ হাজারের বেশি শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে - dainik shiksha শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে শিক্ষকদের শূন্যপদ দ্রুত পূরণের সুপারিশ - dainik shiksha শিক্ষকদের শূন্যপদ দ্রুত পূরণের সুপারিশ ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো ইসরায়েল - dainik shiksha ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো ইসরায়েল কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0045690536499023