ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) ৩৯ নম্বর ওয়ার্ডে পরিকল্পিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে চান সম্ভাব্য কাউন্সিলর প্রার্থীরা। তারা পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থার উন্নয়ন করে জলাবদ্ধতা নিরসনের অঙ্গীকার করেছেন। সরু রাস্তা প্রশস্ত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন অনেক সম্ভাব্য প্রার্থী। পুরান ঢাকার ওয়ারী থানার আওতাধীন এ ওয়ার্ড। ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের অঞ্চল-৫ এ পড়েছে। শূন্য দশমিক ৬৭২ বর্গকিলোমিটার আয়তনের এ ওয়ার্ডের জনসংখ্যা প্রায় এক লাখ ২৫ হাজার। আর ভোটার রয়েছে ২৪ হাজার ৮৪১। কেএম দাস লেন, অভয়দাস লেন, টয়েনবি সার্কুলার রোড, জয়কালীমন্দির রোড, ভগবতী ব্যানার্জি রোড, ফোল্ডার স্ট্রিট, হাটখোলা রোড, আরকে মিশন রোড নিয়ে এ ওয়ার্ড। মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) যুগান্তর পত্রিকায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়। প্রতিবেদনটি লিখেছেন খোরশেদ আলম শিকদার।
প্রতিবেদনে আরও জানা যায়, এ ওয়ার্ডের সম্ভাব্য কাউন্সিলর প্রার্থীরা হলেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় দপ্তর উপ-কমিটির সদস্য ও শেরেবাংলা বালিকা মহাবিদ্যালয় গভর্নিং বডির সভাপতি শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র (ক্রিকেট) সভাপতি মো, রাসুরুল হক শাহীন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য ও গোপীবাগ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মুজিবুর রহমান, ৩৯ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি বিশিষ্ট ক্রীড়া সংগঠক রোকন উদ্দিন আহমেদ, ৩৯ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি ও বাংলাদেশ বয়েজ ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক হাজী মো. রমজান মিয়া।
ওয়ার্ডের অভয়দাস লেন সড়কের দু’পাশে রয়েছে সেন্ট্রাল উইমেন্স কলেজ, কামরুননেসা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, শহীদ নবী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ জগন্নাথ মন্দির। ড্রেনেজ এবং সুয়ারেজ লাইন সরু ও ময়লায় ভরপুর। এতে সামান্য বৃষ্টিতে হাঁটুপানি জমে যায়।
জমে থাকা পানি সরতে ৮-১০ ঘণ্টা লাগে। এতে শিক্ষার্থীসহ ওই সড়ক দিয়ে যাতায়াতকারী পথচারীদের চরম দুর্ভোগে পড়তে হয়। ওয়ার্ডের অধিকাংশ সড়ক খানাখন্দে ভরা। ম্যানহোল ভেঙে পড়ে আছে। এতে সড়কে প্রায় দুর্ঘটনা ঘটছে।
পথচারীরা ম্যানহোলে পড়ে দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন। ওয়ার্ডের জিয়া মাঠের নাম পরিবর্তন করে এখন বাংলাদেশ বয়েজ ক্লাব নামকরণ করা হয়েছে। বর্তমান বয়েজ ক্লাব মাঠসংলগ্ন রাস্তা ও অভয় দাস লেন সরু হওয়ায় ঠিকমতো রিকশা চলাচল করতে পারে না।
ওয়ার্ডের ল্যাম্পপোস্ট বাতির অধিকাংশ জ্বলে না। সে সুযোগে প্রতিরাতেই কোনো না কোনো বাড়িতে চুরির ঘটনা ঘটছে। ওয়ার্ডে মাদক ব্যবসায়ী ও মাদকাসক্তদের দৌরাত্ম্য রয়েই গেছে। গ্যাসের সংকট থাকায় সময়মতো রান্না করা যাচ্ছে না।
ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর ময়নুল হক মনজু ৩১ অক্টোবর থেকে জেল হাজতে রয়েছেন।
মো. রাসুরুল হক শাহীন বলেন, ওয়ার্ডের প্রধান সমস্যা জলাবদ্ধতা। একদিকে বহু পুরনো সরু সুয়ারেজ ও পয়ঃনিষ্কাশন ড্রেনেজ। অপর দিকে ময়লায় ভরপুর। এতে বাসিন্দাদের পয়ঃনিষ্কাশনের ব্যবহৃত পানিতে সড়ক তলিয়ে যায়। এর মধ্যে বৃষ্টি হলে হাঁটু ও কোমর সমান পানি হয়।
তার মধ্যে আবার মেয়র মোহাম্মদ হানিফ ফ্লাইওভারের বৃষ্টির পানি সায়েদাবাদ দিয়ে ওয়ার্ডে প্রবেশ করে। তিনি আরও বলেন, আমাদের সৌভাগ্য এ ওয়ার্ডে শেরেবাংলার বাড়ি, এ ওয়ার্ডের রোজ গার্ডেনে আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠা হয়।
পরিকল্পিত আধুনিক সুয়ারেজ ও পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থার উন্নয়ন করে জলাবদ্ধতার অবসান, সরু রাস্তাকে প্রশস্ত করাসহ শেরেবাংলা বালিকা মহাবিদ্যালয়কে দেশের সেরা বিদ্যাপীঠ হিসেবে গড়ে তুলতে কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তিনি।
মোহাম্মদ মুজিবুর রহমান বলেন, আমি আশাবাদী প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের নেতারা আমার রাজনৈতিক ক্যারিয়ার বিবেচনা করে দলীয় মনোনয়ন দেবেন। মনোনয়ন পেলে বাসিন্দাদের ভালোবাসায় তাদের ভোটে আমি কাউন্সিল নির্বাচিত হব ইনশাআল্লাহ।
রোকন উদ্দিন আহমেদ বলেন, আমি ওয়ার্ডের রাস্তাঘাটসহ সামাজিক বিভিন্ন উন্নয়ন কাজে সহায়তা করেছি। আমি আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী। দলীয় মনোনয়ন পেলে বাসিন্দাদের স্বতঃস্ফূর্ত ভোটে কাউন্সিলর হব।
নির্বাচিত হলে ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের প্রধান সমস্যা জলাবদ্ধতা দূর করব। বাসিন্দাদের মতামত নিয়ে সব সমস্যা সমাধানে কাজ করব।
হাজী মো. রমজান মিয়া বলেন, ওয়ার্ডের প্রধান সমস্যা ভাঙাচোরা রাস্তা, ম্যানহোল ভাঙা। ড্রেনেজগুলোতে ময়লা জমে থাকে। ওয়ার্ডে ৬৭ জন পরিচ্ছন্ন কর্মী রয়েছেন। তাদের মাসিক বেতন প্রায় ২০ হাজার টাকা।
তারা ঠিকমতো কাজ না করায় ড্রেনগুলো ময়লায় ভরে থাকে। এ কারণে ওয়ার্ডে জলাবদ্ধতা বেশি হয়। এ ছাড়া ওয়ার্ডে মাদকসহ নানা সমস্যায় রয়েছেন বাসিন্দারা।
কাউন্সিলর পদে নির্বাচন করতে আমি দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী। দল থেকে মনোনয়ন পেলে আমি এলাকার বাসিন্দাদের ভোট ও সমর্থন নিয়ে কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়ে ওয়ার্ডের জলাবদ্ধতাসহ মাদক নিয়ন্ত্রণে কাজ করব।