মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের খুলনা বিভাগীয় অফিসের পরিচ্ছন্ন কর্মী হরি রঞ্জন দাসকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তা হারুন অর রশীদের বিরুদ্ধে। হারুন খুলনা বিভাগীয় অফিসের পরিচালক। সেসিপের অর্থায়নে ও পরামর্শে এই পদটি সৃষ্টি করা হয়।
জানা যায়, গত ১১ অক্টোবর পরিচ্ছন্নতা কর্মী হরি রঞ্জন দাসকে পরিচালক হারুন অর রশীদের কক্ষে নিয়ে মারধর করা হয়েছে বলে বৃহস্পতিবার (১১ অক্টোবর) সোনাডাঙ্গা থানায় জিডি করেন নির্যাতিত কর্মচারী। তবে মারধর করেননি দাবি করে আঞ্চলিক পরিচালক অধ্যাপক হারুন অর রশীদও থানায় পাল্টা জিডি করেন।
জানা যায়, পরিচ্ছন্ন কর্মী হরির দাবি কোন কারণ ছাড়াই তার গায়ে হাত তুলেছেন আঞ্চলিক পরিচালক। আর আঞ্চলিক পরিচালকের দাবি পরিচ্ছন্ন কর্মী তার সাথে খারাপ আচরণ করেছে, যার পেছনে সরাসরি ইন্ধন রয়েছে উপ-পরিচালক নিভা রানী পাঠক। উপ-পরিচালক বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারভুক্ত সরকারি স্কুল শিক্ষক। অপরদিকে পরিচালক হারুন শিক্ষা ক্যাডারভুক্ত সরকারি কলেজ শিক্ষক। হারুনের করা জিডিতে হরি রঞ্জন দাসকে মারধর করেননি বলে দাবি করেন।
এদিকে ১৬ অক্টোবর উপ-পরিচালকের বিরুদ্ধে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন হারুন। হারুনের সব অপকর্মের সহযোগী খুলনা বিএল কলেজের প্রধান সহকারী তৌহিদুল ইসলাম। তৌহিদুল সময়ক্ষেপন করছেন বলে অভিযোগ কর্মচারীদের। বিভাগীয় কর্মচারী সমিতির সভাপতি হয়েও তৌহিদ কর্মচারীদের পক্ষে না থেকে রসহস্যজন ভূমিকায় লিপ্ত হয়েছেন বলে জানা যায়।
পরিচ্ছন্ন কর্মী হরি প্রসাদকে মারধরে অভিযোগ এবং পাল্টা অভিযোগে গত ১৪ অক্টোবর (সোমবার)অফিসে তদন্ত করেছেন সোনাডাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ মমতাজুল হক। তিনি বলেন, দুইটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। সে অনুযায়ী অনুসন্ধান করার জন্য আমি নিজে শিক্ষা অফিসে গিয়েছিলাম। পরিচালক ও কয়েকজন কর্মকর্তার সাথে কথা হয়েছে। উপ-পরিচালক সেখানে উপস্থিত ছিলেন না।
এদিকে হরি রঞ্জন দাসকে মারধরের সঙ্গে জড়িত হারুন অর রশীদসহ অন্যদের কঠোর শাস্তির দাবিতে মঙ্গলবার (১৬ অক্টোবর) সকাল ১০টায় খুলনা জেনারেল হাসপাতাল গেটে প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বাংলাদেশ মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা তৃতীয় শ্রেণি সরকারি কর্মচারী কল্যাণ পরিষদ, বাংলাদেশ মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা সরকারি কর্মচারী সম্মিলিত পরিষদ, বাংলাদেশ শিক্ষা বিভাগীয় কর্মকর্তা-কর্মচারী কল্যাণ পরিষদ, বাংলাদেশ পরিচ্ছন্নতা কর্মী সরকারি কল্যাণ পরিষদ খুলনা জেলা শাখা এবং মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তারাধীন খুলনা জেলার সকল তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীর যৌথ উদ্যোগে এ সভার আয়োজন করা হয়। সভায় খুলনা বিভাগীয় শিক্ষা অফিসের পরিচ্ছন্ন কর্মীকে মারধরের ঘটনার তীব্র নিন্দা জানানো হয়। একই সঙ্গে ঘটনার প্রতিবাদে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়।