বরগুনার তালতলীতে চলমান দাখিল পরীক্ষার কেন্দ্র তালতলী ছালেহিয়া ইসলামিয়া আলিম মাদরাসার মাঠ দখল করে বাদশা নামের এক ঠিকাদার রাস্তা নির্মাণ সামগ্রী রেখে ব্যক্তিগত ব্যবসা চালাচ্ছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন শিক্ষক ও পরীক্ষার্থীরা। মাদরাসার অধ্যক্ষের যোগসাজসে এ মাঠে পাথর ও বালুসহ নির্মাণসামগ্রী স্তুপ করে রেখে ব্যক্তিগত ব্যবসা চালিয়ে নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাঠ দখল করে ব্যবসা করছেন ঠিকাদার বাদশা। এরপর থেকেই এই মাদরাসায় কোনোদিনই স্বাভাবিক পাঠদান হয়নি। এ বিষয়ে মাদরাসার অধ্যক্ষ হারুন অর রশিদের কাছে শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকরা অভিযোগ করলেও তা আমলে নেননি তিনি। কারণ ওই মাদরাসার অধ্যক্ষের যোগসাজসেই ঠিকাদার তার রাস্তার কাজের পাথর, বালুসহ নির্মাণসামগ্রী স্তূপ করে রেখে ব্যক্তিগত ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে।
মাদরাসা সূত্রে জানা যায়, প্রতিবছরের মতো এ বছরও মাদরাসাগুলোর দাখিল পরীক্ষা এই প্রতিষ্ঠানে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এ পরীক্ষা কেন্দ্রে উপজেলার ১২টি মাদরাসার ৪১৪ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করছেন।
পরীক্ষার দায়িত্বে নিয়োজিত কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ঠিকাদার তার রাস্তার কাজের পাথর, বালুসহ নির্মাণসামগ্রী স্তূপ করে রাখার ফলে দাখিল পরীক্ষার্থীদের চরম দুর্ভোগের শিকার হতে হচ্ছে। নষ্ট হচ্ছে পরীক্ষা কেন্দ্রের স্বাভাবিক পরিবেশ। এতে পরীক্ষার্থীদের সাথে আসা অভিভাবকরাও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০টায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় তালতলী ছালেহিয়া ইসলামিয়া আলিম মাদরাসায় দাখিল পরীক্ষার কেন্দ্রের মাঠজুড়ে বালু ও পাথর রাখা হয়েছে। এ কারণে পরীক্ষার দায়িত্বে নিয়োজিত কর্মকর্তা, কর্মচারী ও পরীক্ষার্থীরা ঠিকভাবে চলাফেরা করতে পারছেন না।
একাধিক শিক্ষার্থী জানান, ‘পরীক্ষা কেন্দ্রের মাঠে নির্মাণসামগ্রী রাখায় আমরা স্বাচ্ছন্দ্যে চলাফেরাও করতে পারছি না। ’
অনেক অভিভাবক বলেন, ‘মাদরাসা মাঠে পাথর ও বালু রেখে পুরো মাঠ দখল করে ব্যক্তিগত ব্যবসা চালাচ্ছেন ঠিকাদার। এতে অ্যাসেম্বলিসহ খেলাধুলা ও বিনোদন থেকে বঞ্চিত হচ্ছে আমাদের সন্তানরা।’
এ বিষয় ঠিকাদার বাদশা বলেন, ‘রাস্তার কিছু কাজ চলছে সেজন্য মাঠে বালু ও পাথর রাখা হয়েছে। দু’একদিনেই এগুলো সরিয়ে নেয়া হবে।’
বালু ও পাথরের জন্য পরীক্ষার্থীসহ সংশ্লিষ্টদের চলাচলের বিঘ্ন ঘটার বিষয়ে জানতে চাইলে মুঠোফোনের সংযোগ কেটে দেন তিনি।
মাদরাসার অধ্যক্ষ ও দাখিল পরীক্ষার হল সচিব মাওলানা হারুন অর রশিদ বলেন, ‘বিষয়টির জন্য আমি দুঃখিত। ঠিকাদার বাদশাকে ডিসেম্বরের মধ্যে মাঠে রাখা বালু ও পাথরগুলো সরিয়ে নেয়ার বিষয়ে বলা হলেও তিনি নেননি। এজন্য পরীক্ষা কেন্দ্র চালাতে কিছুটা সমস্যা হচ্ছে।’
উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) মো. সেলিম মিঞা বলেন, ‘এই বালু ও পাথরের জন্য সোমবার পরীক্ষা কেন্দ্র পরিদর্শনে গিয়ে সমস্যা হয়েছে। এ বিষয়ে কেন্দ্র সচিরের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেছেন, তার মাদরাসায় সাইক্লোন ভবন হবে, সেজন্য কিছু বলিনি। আজ আপনাদের মাধ্যমে জানতে পারলাম, এগুলো ঠিকাদারের ব্যক্তিগত। এ বিষয়ে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’