সারা দেশের ন্যায় নাটোরের বাগাতিপাড়ায় পিইসি ও ইবতেদায়ি সমাপনি পরীক্ষা শুরু হয়েছে রবিবার থেকে। পরীক্ষা চলাকালীন সময় চোখে পড়ে পেড়াবাড়ীয়া মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের মূল ফটকে স্কুলড্রেস পরিহিত এক শিশুকে দাঁড়িয়ে থাকতে। সামনে যেতেই শিশুটির বাবা কিছু বোঝানোর চেষ্টা করছে তাকে। কিন্তু কিছুতেই বোঝাতে পারছে না।
জানা যায়, উপজেলার নওশেরা মহল্লার কামরুল আহসান খানের একমাত্র সন্তান মাহিবুল। বাবা-মা জানতেন অন্য শিশুদের মতো তাদের সন্তানটি স্বাভাবিক না। তবুও সন্তানের প্রবল আগ্রহে চারদেয়ালে আটকাতে পারেনি শিশু মাহিবুলকে। তাই আর দশটি শিশুর মতো মাহিবুলকেও স্কুলে ভর্তি করেন তারা।
শিশু মন স্বীকার করে না সে পারবে না। তাই অন্য বন্ধুদের মতো সেও নিয়োমিত লেখাপড়া ও পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে থাকে। গত বৃহস্পতিবার উপজেলার ড. এমদাদ খান ও ছেতেরা খান কৃষি ও কারিগরি অর্কা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পিইসি পরীক্ষার্থীদের সাথে মাহিবুলও বিদায় অনুষ্ঠানে অংশ নেয়।
শিশুটির বাবা জানান, রবিবার প্রথম পরীক্ষার দিন সে অনেক ভোরে ঘুম থেকে উঠে পরীক্ষা দিতে যেতে হবে বলে নিজেকে প্রস্তুত করে। তাকে পরীক্ষা কেন্দ্রে নিয়ে যাবার জন্য বাবা মাকে জোর করে। অবশেষে সন্তানের আবদার রাখতে তার বাবা তাকে নিয়ে আসেন পরীক্ষা কেন্দ্রে। কিন্তু তার শারীরিক ও মানসিক প্রতিবন্ধিতার কারণে পরীক্ষার জন্য রেজিস্ট্রেশন করা যায়নি। যার ফলে সে পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারেনি। তাই সে পরীক্ষা কেন্দ্রের মূল ফটকে অশ্রু ভেজা চোখে পরীক্ষার পুরো আড়াই ঘণ্টা সময় দাঁড়িয়ে থাকে এবং যখন সবাই পরীক্ষা শেষ করে বাড়ি যায় তখন সেও বাড়ি ফেরে।
কামরুল আহসান খান আরো জানান, মাহিবুল জন্ম থেকেই প্রতিবন্ধী। তবে তার লেখাপাড়ার আগ্রহ অনেক বেশি। সে আর দশজন স্বাভাবিক ছেলেদের মতোই স্বাভাবিকভাবে লেখাপড়া শিখতে চায়। তার চিকিৎসার ব্যাপারে বলেন, আর্থিক সমস্যার কারণে তার সন্তানের উন্নত চিকিৎসা করাতে পারছেন না।