প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. ফসিউল্লাহ বলেছেন, শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা নিয়ে আমরা এখনই ভাবছি না। করোনা ভাইরাস সংক্রমণ থেকে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের নিরাপদ রাখা এখন আমাদের মূল লক্ষ্য। তাছাড়া মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিত করতে পড়ালেখা চালিয়ে যেতে হবে। পরীক্ষা শুধু শিক্ষার্থীদের মূল্যায়নের একটি পদ্ধতি মাত্র।
প্রাথমিক শিক্ষার্থীদের বার্ষিক পরীক্ষার সিলেবাস কমছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে দৈনিক শিক্ষাডটকমকে এসব কথা বলেন প্রাথমিক শিক্ষার মহাপরিচালক।
তিনি দৈনিক শিক্ষাডটকমকে আরও বলেন, আমরা যতটুকু পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের পড়াতে পেরেছি তার ওপরই তাদের মূল্যায়ন করা হবে। পরীক্ষার থেকে পাঠদান চালিয়ে যাওয়া এবং শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার চর্চা চালিয়ে যাওয়ার জন্য উদ্বুদ্ধ করতে আমরা বেশি আগ্রহী। তাই ডিজিটাল মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের ক্লাস করা নিশ্চিত করতে কাজ করছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। রেডিওর মাধ্যমেও শিক্ষার্থীদের পাঠদান পরিচালনা করা হবে। সে কাজও চলছে। আর মাঠ পর্যায় থেকে শিক্ষার্থীদের পাঠদানের তথ্য জানার জন্য একটি সফটওয়্যার ডেভেলপ করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
মো ফসিউল্লাহ দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, শিক্ষার্থীরা যাতে বিনামূল্যে টেলিফোন করে শিক্ষকদের পরামর্শ পেতে পারেন সে ব্যবস্থাও করা হয়েছে। ৩৩৩৬ নাম্বারে ফোন করে শিক্ষার্থীরা শিক্ষকদের সাথে সরাসরি কথা বলতে পারবেন। আর এজন্য তাদের কোন টাকা খরচ হবে না। এ সেবা চালু হলে শিক্ষার্থীরা ও পড়ালেখায় আগ্রহী হবেন। তারা যখন দেখতে পারবে কোন টাকা খরচ না করেই শিক্ষকের কাছ থেকে যেকোন বিষয় বুঝে নেয়া যাচ্ছে, তখন তারা এ সেবা পেতে আগ্রহী হয়ে উঠবে।
তিনি দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, শিক্ষার মূল লক্ষ্য জ্ঞান অর্জন। পরীক্ষা শিক্ষার্থীদের মূল্যায়নের একটি আনুষ্ঠানিকতা মাত্র। পরীক্ষা নিয়ে আমরা এখনই চিন্তা করছি না। কিছু উপজেলায় আগ্রহী শিক্ষকরা নিজ উদ্যোগে পরীক্ষা নিয়েছেন। তা নিয়ে ইতোমধ্যেই কিছু বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর শিক্ষার্থীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে পরীক্ষা নেয়ার কোনো নির্দেশনা দেয়নি।
মহাপরিচালক বলেন, প্রাথমিক শিক্ষা পরিবারেও করোনা ভাইরাস হানা দিয়েছে। এখন পর্যন্ত ১৪৫ জনের মত শিক্ষক করোনাভাইরাস আক্রান্ত হয়েছেন। ৩০ জনের কর্মকর্তা-কর্মচারী শরীরে ভাইরাস সংক্রমণ দেখা দিয়েছে। আর আমাদের ৭ জন শিক্ষার্থী করোনা ভাইরাস আক্রান্ত হয়েছেন। এখন আমাদের মূল লক্ষ্য প্রাথমিক শিক্ষা পরিবারের সকলকে নিরাপদ রাখা। তাই শিক্ষার্থীরা যাতে নিজ বাসায় অবস্থান করে তা নিশ্চিত করতে শিক্ষক-অভিভাবক সকলকে অনুরোধ করা হয়েছে। আর ঘরে বসেই যাতে শিক্ষার্থীরা মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা পেতে পারেন সে লক্ষ্যে সর্বাত্মকভাবে কাজ করে চলেছে সরকার।