পরীক্ষাকেন্দ্রের সামনে কোচিং সেন্টারের প্রচারণা - দৈনিকশিক্ষা

পরীক্ষাকেন্দ্রের সামনে কোচিং সেন্টারের প্রচারণা

পাবনা প্রতিনিধি |

পাবনার ভাঙ্গুড়ায় এ বছর দুই হাজার ৪৬১ জন খুদে শিক্ষার্থী উপজেলার ৯টি কেন্দ্রে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী (পিইসি) পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে। পরীক্ষায় উত্তীর্ণরা আগামী বছর বিভিন্ন স্কুলে ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি হবে। ভর্তির পর বেশির ভাগ অভিভাবক তাঁদের সন্তানদের শহরের নামকরা কোচিং সেন্টার বা প্রাইভেটে পাঠাবেন। মূলত তাঁদের টার্গেট করেই বেআইনিভাবে পিইসি পরীক্ষার কয়েকটি কেন্দ্রের সামনে প্রচারণা চালাচ্ছে এক ডজনের মতো কোচিং সেন্টার।

গত বৃহস্পতিবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ভাঙ্গুড়া মডেল উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ কেন্দ্রের সামনে অস্থায়ী ক্যাম্প বসিয়ে বিভিন্ন আকৃতির চটকদার ব্যানার টাঙিয়ে প্রচারণা চালাচ্ছে কয়েকটি কোচিং সেন্টার। সেন্টারগুলোর পরিচালকরা সেখানে উপস্থিত অভিভাবকদের তাঁদের সন্তানদের ভর্তি করাতে বিভিন্নভাবে আকৃষ্ট করার চেষ্টা করছেন। উপজেলার পারভাঙ্গুড়া ইউনিয়নের ভেড়ামারা উদয়ন একাডেমি কেন্দ্রেও দেখা গেছে একই চিত্র।  

উপজেলার প্রথম সারির এমপিওভুক্ত কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষকের অভিযোগ, প্রভাবশালী মহলের ছত্রচ্ছায়ায় দীর্ঘদিন ধরে ভাঙ্গুড়া পৌর শহরের এক ডজন কোচিং সেন্টার অবৈধভাবে ব্যবসা করছে। এ নিয়ে গত এক বছরে জেলা প্রশাসক, জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কার্যালয়ে একাধিকবার অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। এ অবস্থায় প্রশাসন সেন্টারগুলো বন্ধ করে দিলেও দুই থেকে তিন সপ্তাহ পরই আবার সেগুলো চালু হয়ে যায়। এ ছাড়া বেশির ভাগ সেন্টারের পরিচালক রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকায় প্রশাসন তাদের ব্যাপারে কঠোর হচ্ছে না বলে প্রধান শিক্ষকদের অভিযোগ।

জানা যায়, ভাঙ্গুড়া পৌর শহরের এসব কোচিং সেন্টারে ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত তিন সহস্রাধিক শিক্ষার্থী পড়ালেখা করে। সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে সকাল ৮টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত এসব প্রতিষ্ঠান তাদের পাঠদান কার্যক্রম চালায়। উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের এমপিওভুক্ত রূপসী, দিলপাশার, পাটুলীপাড়া, ময়দানদীঘি ও আদাবাড়িয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের যোগসাজশে কোচিং সেন্টারের এসব শিক্ষার্থীকে উল্লিখিত স্কুলগুলোতে শুধু কাগজ-কলমে ভর্তি দেখানো হয়। কিন্তু পড়ালেখার সব কার্যক্রম চলে কোচিং সেন্টারে।

শ্রেণিভেদে শিক্ষার্থীদের মাসিক বেতন ধরা হয় ৫০০ থেকে এক হাজার টাকা পর্যন্ত। এভাবে প্রতিবছর ভাঙ্গুড়ায় শিক্ষা নিয়ে কোটি টাকার বাণিজ্য চলে। আরো জানা যায়, সেন্টারের পরিচালকরা বিভিন্ন এমপিওভুক্ত স্কুল এবং কলেজের শিক্ষক হওয়ায় অভিভাবকরা অনেকটা বাধ্য হয়েই তাঁদের সন্তানদের সেখানে ভর্তি করেন। 

এ প্রসঙ্গে ময়দানদীঘি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল মান্নান জানান, উপজেলার অন্য স্কুল কোচিং সেন্টারের শিক্ষার্থী ভর্তি হওয়ায় তিনিও ভর্তি করেছেন। তবে অন্যরা তাদের ভর্তি বন্ধ করলে তিনিও বন্ধ করে দেবেন।

পরীক্ষাকেন্দ্রের সামনে ক্যাম্প স্থাপনের বিষয়ে উপজেলার বাছের মেমোরিয়াল একাডেমি কোচিং সেন্টারের পরিচালক মঞ্জুরুল আলম জানান, প্রশাসন নিষেধ না করায় সবাই ক্যাম্প করেছে। প্রশাসন বললে ক্যাম্প সরিয়ে নেওয়া হবে। তিনি আরো জানান, ভালো ফলাফলের জন্য অভিভাবকরা নিজেদের ইচ্ছাতেই তাঁদের সন্তানদের কোচিং সেন্টারে ভর্তি করেন। অন্য সব কিছু আনুষ্ঠানিকতা মাত্র।

ভাঙ্গুড়া মডেল হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ এবং কেন্দ্রসচিব রফিকুল ইসলাম অভিযোগ করেন, কোচিং সেন্টারগুলোর অবৈধ কার্যক্রম সম্পর্কে প্রশাসনকে অনেকবার জানানো হয়েছে। কিন্তু কোনো কাজ হয়নি।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা খ ম জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘পরীক্ষাকেন্দ্রের সামনে কোচিং সেন্টারের প্রচারণা অবৈধ। ইউএনও স্যার কিছু না বলায় আমরাও তাদের কিছু বলিনি।’

তবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাছুদুর রহমান বলেন, ‘ক্যাম্পের বিষয়টি লক্ষ করা হয়নি। আগামী পরীক্ষার আগেই এগুলো সরিয়ে দেওয়া হবে।’

এ ছাড়া শিক্ষা নিয়ে বাণিজ্য করাও বন্ধ করা হবে বলে তিনি জানান

ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন - dainik shiksha ছুটি না বাড়ালে বাড়ি যেতে হতে পারে ঈদের দিন হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে - dainik shiksha জালিয়াতি করে পদোন্নতি শিক্ষা ক্যাডার গ্যাঁড়াকলে রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা - dainik shiksha রুয়েটের সাবেক উপাচার্য-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে মামলা উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সংখ্যালঘু কোটার তথ্য চেয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী - dainik shiksha হাইস্কুলে কমেছে দশ লাখের বেশি শিক্ষার্থী please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0054361820220947