পরীক্ষামূলক ডিজিটাল শিক্ষার মূল্যায়ন - দৈনিকশিক্ষা

পরীক্ষামূলক ডিজিটাল শিক্ষার মূল্যায়ন

দৈনিক শিক্ষা ডেস্ক |

ডিজিটাল শিক্ষার মূল্যায়ন : ২০১৫ সালের ২৮ ডিসেম্বর নেত্রকোনার পূর্বধলার আরবান একাডেমির প্রথম শ্রেণীর ৩৯ জন শিশুর হাতে আট ইঞ্চি আকারের ৫০০ গ্রাম ওজনের ট্যাব তুলে দেয়া হয়েছিল। ওরা তাদের পাঠ্যবই সেই ট্যাবেই পায়। স্কুলব্যাগটাতে ভারী ওজনের বই তাদের বহন করতে হয় না। এক বছরের শেষ প্রান্তে ২০১৬ সালের নভেম্বরে আমরা স্কুলটির কর্তৃপক্ষ থেকে একটি প্রতিবেদন পেলাম। সেটি থেকে ধারণ নেয়া যেতে পারে যে, আমরা ব্যাগ ও কাগজবিহীন শিক্ষাব্যবস্থা চালু করতে পারছি কিনা। শিক্ষায় এর প্রভাব কেমন সেটিও তারা প্রকাশ করেছেন। মঙ্গলবার (২১ জুলাই) সংবাদ পত্রিকার এক নিবন্ধে এ তথ্য জানা যায়।নিবন্ধনটি লিখেছেন মোস্তাফা জব্বার।

 

নিবন্ধে আরও জানা যায়, “প্রযুক্তিভিত্তিক আধুনিক শিক্ষায় জ্ঞানসমৃদ্ধ সমাজ বিনির্মাণের অঙ্গীকার নিয়ে ২০১১ সালে নেত্রকোনা জেলার পূর্বধলা উপজেলায় সম্পূর্ণ বেসরকারি উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত হয় নতুন ধারার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আরবান একাডেমি। ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণ ও শিক্ষার ডিজিটাল রূপান্তরের অংশ হিসেবে শুরু থেকেই আরবান একাডেমি সরকার নির্ধারিত কারিকুলামের পাশাপাশি প্রযুক্তিভিত্তিক আধুনিক শিক্ষার বিভিন্ন উপকরণ যেমন প্রজেক্টর ও শিক্ষামূলক কনটেন্ট ব্যবহার করে পাঠদান কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে।

প্রাথমিক শিক্ষায় পূর্ণাঙ্গ ডিজিটাল শিক্ষাব্যবস্থা চালুর উদ্যোগ হিসেবে বিজয় ডিজিটালের সার্বিক তত্ত্বাবধান ও কারিগরি সহায়তায় আরবান একাডেমি ২০১৬ শিক্ষা বর্ষের প্রথম শ্রেণীর ৪০ জন শিক্ষার্থীর হাতে তুলে দেয় শিক্ষার অন্যতম আধুনিক উপকরণ মিনি ল্যাপটপ বা ট্যাব। প্রথম শ্রেণীতে বিজয় ডিজিটালের বিষয়ভিত্তিক কনটেন্ট বিজয় প্রাথমিক শিক্ষা-১ এর সহায়তায় ক্লাস পরিচালনা করা হয়ে থাকে। ক্লাসে প্রত্যেক শিক্ষার্থীর হাতে রয়েছে কনটেন্ট সমৃদ্ধ মিনি ল্যাপটপ ও কনটেন্ট উপস্থাপনায় শ্রেণী কক্ষে শিক্ষকের জন্য রয়েছে বৃহৎ আকারের ৪০ ইঞ্চি মনিটর ও ল্যাপটপ। ২০১৭ সালের শুরুতে পুরো এক বছরের অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে আরবান একাডেমি একটি প্রতিবেদন পেশ করেছে। সেই প্রতিবেদনটির দিকে তাকানো যাক।

‘প্রাথমিক শিক্ষায় পূর্ণাঙ্গ ডিজিটাল ক্লাসরুম : আধুনিক শিক্ষাব্যবস্থা প্রচলনের এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। প্রচলিত ও গতানুগতিক শিক্ষাব্যবস্থা থেকে ভিন্ন আঙ্গিকে এটা বাস্তবায়ন যেমন শিক্ষার্থী ও শিক্ষকসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে আন্দোলিত এবং উৎসাহিত করে ঠিক তেমনি এর সফল বাস্তবায়নেও রয়েছে অনেক চ্যালেঞ্জ। আরবান একাডেমির প্রথম শ্রেণীর ডিজিটাল ক্লাস পরিচালনার ফলে সবল দিক ও চ্যালেঞ্জসমূহ পর্যালোচনা করে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়সমূহ নিম্নে উপস্থাপন করা হলো।

ডিজিটাল শিক্ষার ইতিবাচক দিক : আরবান একাডেমি নিজস্ব উদ্যোগে প্রথম শ্রেণীতে পূর্ণাঙ্গ ডিজিটাল ক্লাস চালুর ফলে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে বেশকিছু সুবিধার ক্ষেত্র তৈরি হয়, যা শিক্ষার সার্বিক মান উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। ডিজিটাল ক্লাস পরিচালনার অভিজ্ঞতায় বিভিন্ন পর্যায়ে এর সবল দিকসমূহ নিম্নে উপস্থাপন করা হলো।

ক) শিক্ষার্থী পর্যায়ে : ১) অডিও এবং ভিডিও কার্টুন/অ্যানিমেশন সমৃদ্ধ কনটেন্টের সহায়তায় পাঠ উপস্থাপনের ফলে প্রতিটি ক্লাস শিক্ষার্থীদের কাছে বেশ আকর্ষণীয় হয়, যাতে করে শিক্ষার্থীরা পাঠে অধিকতর মনোযোগী হচ্ছে। ২) নানা ধরনের মজাদার কনটেন্টের সহায়তায় পাঠ উপস্থাপন করায় ডিজিটাল ক্লাসে উপস্থিতি সাধারণ ক্লাসের চেয়ে অনেক বেশি হয়। ৩) শিক্ষার্থীরা সহজেই প্রাথমিক পর্যায়ের সাধারণ উপকরণ বিষয়ে ধারণা ও ব্যবহারে দক্ষতা অর্জন করতে পারছে। ৪) প্রাথমিক স্তরেই শিক্ষার্থীদের প্রযুক্তি ভীতি কমে যাচ্ছে। ৫) সহজেই শিক্ষার্থীরা প্রযুক্তিবিষয়ক নিত্যনতুন ধারণা লাভ করতে পারছে। ৬) সহজবোধ্য কনটেন্টের সহায়তায় শিক্ষার্থীরা অল্প সময়েই পাঠ আয়ত্ত করতে পারে। ৭) শিক্ষক-শিক্ষার্থী মিলে শ্রেণীকক্ষে সব সময় এক আনন্দঘন পরিবেশ বিরাজ করে। ৮) শিক্ষার্থীদের সহজেই বাড়ির কাজ, সুন্দর হাতের লেখা ও অন্যান্য সহপাঠ ক্রমিক কাজে উদ্বুদ্ধ করা যায়। ৯) সহজেই শিক্ষক শ্রেণী কক্ষের শৃঙ্খলা বজায় রাখতে পারেন। ১০) স্বল্প সময়েই শিক্ষার্থীদের বর্ণ ও শব্দের সঠিক উচ্চারণ এবং শুদ্ধ ভাষায় কথা বলানো শেখানো যায়। ১১) শিক্ষার্থীদের মাঝে পারস্পরিক সহযোগিতা ও সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক বৃদ্ধি পায়। ১২) সমভাবে ও অল্পসময়ে পাঠ/বিষয়বস্তু সব শিক্ষার্থীর কাছে পৌঁছে যায়। ১৩) শিক্ষার্থীরা নিজেদের মূল্যায়ন নিজেরাই করতে পারে। ১৪) শিক্ষাথীরা ভিশনারি হচ্ছে। ১৫) সাধারণ ও সুবিধা বঞ্চিত পরিবারের শিক্ষার্থীরা অধিকতর মানসম্পন্ন শিক্ষা লাভের সুযোগ পাচ্ছে। ১৬) সাধারণ শিক্ষার্থীরাও অল্প সময়ে জড়তাহীনভাবে পাঠ গ্রহণে মনোযোগী হচ্ছে। ১৭) সব কারিকুলাম সহজে বহনযোগ্য। ১৮) শ্রেণী উপযোগী প্রয়োজনীয় অতিরিক্ত শিক্ষামূলক কনটেন্ট সংগ্রহে রাখা যাচ্ছে। ১৯) ছোট ছোট ইংরেজি শব্দ বলার অভ্যাস বৃদ্ধি পাচ্ছে। ২০) শিক্ষামূলক গেমসের মাধ্যমে মেধা বিকাশের সুযোগ তৈরি হচ্ছে। ২১) অপ্রয়োজনীয় ও বিপথগামী হতে পারে এমন গেইমস থেকে শিক্ষার্থীদের সঠিক পথে রাখার অভ্যাস গড়ে উঠছে।

খ) শিক্ষক পর্যায়ে : ১) শিক্ষক সহজেই বিষয়বস্তু সব শিক্ষার্থীর নিকট সঠিকভাবে উপস্থাপন করতে পারেন। ২) শিক্ষকরা অধিকহারে প্রাসঙ্গিক উদাহরণ দিয়ে ক্লাস পরিচালনা করতে পারেন। ৩) শিক্ষার্থীর মাঝে প্রতিযোগিতার মনোভাব সৃষ্টি করতে পারেন। ৪) সমভাবে ও অল্পসময়ে পাঠ/বিষয়বস্তু শিক্ষার্থীর মাঝে পৌঁছানো যায়। ৫) শিক্ষকদের পাঠ উপস্থাপনা সহজতর হয়। ৬) মাল্টিমিডিয়া কনটেন্ট শিক্ষকের সহায়ক হিসেবে কাজ করে। ৭) অল্প সময়ে সব শিক্ষার্থীকে সঠিকভাবে মূল্যায়ন করা যায়। ৮) শ্রেণী উপযোগী অতিরিক্ত শিক্ষামূলক কনটেন্ট সংগ্রহে রাখা যায়। ৯) পর্যাপ্ত কো-কারিকুলাম/সহপাঠক্রমিক ব্যবহারের সুযোগ তৈরি হচ্ছে। ১০) শিক্ষক শ্রেণী উপযোগী কনটেন্ট তৈরি করতে পারেন। ১১) সহজেই ক্লাসের শৃঙ্খলা বজায় রাখতে পারেন। ১২) নিত্যনতুন আপডেটেট বিষয়সমূহ সহজেই সংগ্রহ করতে পারেন। ১৩) শিক্ষক প্রতিনিয়ত নিজেকে প্রশিক্ষিত করার সুযোগ পান। ১৪) ই-বুক ও ই-কনটেন্ট ব্যবহারে শিক্ষকদের পারদর্শিতা বৃদ্ধি পায়। নিজেরাও ডিজিটাল কনটেন্ট তৈরি করতে আগ্রহী হন।

গ) প্রতিষ্ঠান পর্যায়ে : ১) প্রতিষ্ঠানের সব শিক্ষার্থী নিজ নিজ পাঠে অধিকতর মনোযোগী হচ্ছে। ২) প্রতিষ্ঠানের সব শিক্ষার্থীর জন্য মানসম্পন্ন শিক্ষা লাভের পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। ৩) প্রযুক্তিভিত্তিক শিক্ষা কার্যক্রমে প্রতিষ্ঠানের দক্ষতা ও সক্ষমতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ৫) বিভিন্ন পর্যায়ের পরিদর্শকের আগমনের ফলে নিত্য-নতুন ধারণা লাভের সুযোগ বৃদ্ধি পাচ্ছে। ৬) সংশ্লিষ্টজনদের প্রতিষ্ঠানের প্রতি অধিকতর আস্থার মনোভাব সৃষ্টি হয়েছে। ৭) প্রতিষ্ঠানের অন্যান্য শিক্ষার্থী ও কমিউনিটিতে প্রযুক্তিভিত্তিক শিক্ষার প্রতি আগ্রহ বাড়ছে। ৮) আরবান একাডেমিকে সার্বিক বিবেচনায় একটি মানসম্পন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তুলবার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। ৯) স্থানীয় কমিউনিটিতে প্রতিষ্ঠানের গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ১০) প্রযুক্তিভিত্তিক শিক্ষা কার্যক্রমে প্রতিষ্ঠানের বৃহত্তর পরিসরে বিভিন্ন নেটওয়ার্কের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।

আরবান একাডেমির ইতিবাচক পর্যবেক্ষণের পাশাপাশি চ্যালেঞ্জগুলোও রয়েছে। আমাদের দেশের শিক্ষাব্যবস্থাকে ডিজিটাল করতে হলে এ চ্যালেঞ্জগুলোকেও মোকাবিলা করতে হবে।

ঘ) ডিজিটাল স্কুল পরিচালনার চ্যালেঞ্জসমূহ : দীর্ঘদিন ধরে বই-খাতানির্ভর শিক্ষাব্যবস্থার বাইরে গিয়ে সম্পূর্ণ ভিন্ন ধারার শিক্ষাব্যবস্থার প্রচলন বাস্তবিক পক্ষেই কষ্টসাধ্য। আরবান একাডেমি একেবারেই বেসরকারি উদ্যোগে প্রথম শ্রেণীতে পূর্ণাঙ্গ ডিজিটাল ক্লাস পরিচালনার অভিজ্ঞতার আলোকে যেসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছে তা নি¤েœ উপস্থাপন করা হলো। ১) সার্বিক কার্যক্রমটি বাস্তবায়ন ব্যয়বহুল। ২) ডিজিটাল ক্লাস উপযোগী দক্ষ ও প্রশিক্ষিত শিক্ষকের সংকট। ৩) ডিজিটাল শিক্ষা বাস্তবায়নে সুনির্দিষ্ট গাইডলাইন না থাকা সমস্যার তৈরি করে। ৪) নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সুবিধা না থাকলে উপকরণ ব্যবহারে বিঘœ সৃষ্টি হতে পারে। ৫) প্রযুক্তিভিত্তিক শিক্ষা কার্যক্রমে অভিভাবক পর্যায়ে সঠিক ধারণার অস্পষ্টতা রয়েছে। ৬) শিক্ষা সংশ্লিষ্ট সব মহলে স্বচ্ছ ধারণা ও দক্ষতার অভাব আছে। ৭) উপকরণ ব্যবহার ও রক্ষণাবেক্ষণে নষ্ট হবার ঝুঁকি বেশি থাকে। ৮) শিক্ষার্থী ও শিক্ষক বান্ধব প্রয়োজনীয় কনটেন্টের অপর্যাপ্ততা রয়েছে। ৯) শিক্ষার্থীদের পারিবারিক পর্যায় থেকে প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে যথাযথ সহযোগিতা করা হয় না। ১০) ডিজিটাল ক্লাস বাস্তবায়নে অবকাঠামোগত সুযোগ-সুবিধার অপর্যাপ্ততা রয়েছে। ১১) সার্বিক বিবেচনায় ডিজিটাল ক্লাস বান্ধব প্রশাসনিক পরিবেশ গড়ে ওঠেনি। ১২) প্রাথমিক শিক্ষায় তেমনভাবে কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ডিজিটাল শিক্ষা কার্যক্রমে যুক্ত না থাকায় অভিজ্ঞতা বিনিময়ের সুযোগ কম।’

আরবান একাডেমির মূল্যায়নটি যথাযথ। তারা যেসব চ্যালেঞ্জের কথা বলেছে তার প্রতিটি বর্ণে বর্ণে সত্য। তাদের পর্যবেক্ষণ বাস্তবসম্মত এজন্য যে তারা একেবারে তৃণমূল থেকে চ্যালেঞ্জগুলোকে দেখেছে। শহরে হয়তো এইসব চ্যালেঞ্জের সবগুলো পাওয়া যাবে না। তবে কম বেশি এমন চ্যালেঞ্জ আমাদের পুরো শিক্ষাব্যবস্থাকেই মোকাবিলা করতে হবে।

আরবান একাডেমির মূল্যায়ন পত্রে তারা অনেকটা আশাবাদের কথাও বলেছে। তাদের মতে, ‘তবে এ কথাটি মনে রাখা দরকার যে বিশ্বায়নের বর্তমান এ সময়ে প্রযুক্তিভিত্তিক শিক্ষা বাস্তবায়নে ডিজিটাল ক্লাস পরিচালনা বাস্তবিক পক্ষেই সময় উপযোগী। দেশে সর্বক্ষেত্রে ডিজিটাল সেবার যে প্রসার ও অগ্রগতি তা শিক্ষা অর্জনের ক্ষেত্রেও অতিব গুরুত্বপূর্ণ। দেশের অবকাঠামোগত সুবিধা ও অন্যান্য প্রস্তুতি বিবেচনায় ডিজিটাল শিক্ষা কার্যক্রম বাস্তবায়নের চ্যালেঞ্জসমূহ মোকাবিলা করে সঠিক পথে অগ্রসর হয়ে আরবান একাডেমি কর্তৃক বাস্তবায়িত প্রথম শ্রেণীর পূর্ণাঙ্গ ডিজিটাল ক্লাসরুম শিক্ষার ডিজিটাল রূপান্তরের মাধ্যমে প্রাথমিক শিক্ষায় এটা নিঃসন্দেহে এক নব দিগন্তের সূচনা করবে।’

পূর্বধলার এই স্কুলটি তাদের ডিজিটাল ডিভাইস কার্যক্রম আরও সম্প্রসারিত করেছে। ১৭ সালে তাদের বিদ্যমান ট্যাবগুলোর সঙ্গে আরও ১৫টি নতুন ট্যাব যোগ করেছে। আর্থিক দৈন্যের জন্য তারা একটি ট্যাবে কখনও কখনও ২ জন শিক্ষার্থীকে লেখাপড়া করাচ্ছে।

পূর্বধলার এই অভিজ্ঞতার আরও প্রতিফলন ঘটানো হচ্ছে। চট্টগ্রামের ন্যাশনাল প্রাইমারি স্কুলের দ্বিতীয় শ্রেণীর ১০০ শিশুর হাতেও ট্যাব দেয়া হয়েছে। রবির সৌজন্যে দেয়া এই ট্যাবগুলো ক্লাশরুমকে বদলে দিয়েছে। শুরুতে শিক্ষকরা এর মাধ্যমে তেমন কোন ভালো অবস্থান তৈরি করতে পারেননি। কিন্তু এরই মাঝে তারা বেশ গুরুত্ব দিয়েই ট্যাব ব্যবহার করা শুরু করেছে। টেলিফোন শিল্প সংস্থার স্বদেশ ট্যাব দিয়ে গড়ে তোলা এই ক্লাসরুমটির অবস্থা এতো ভালো যে এক বছর পরও তাদের কোন ট্যাব নষ্ট হয়নি।

এই কয়েক বছরে দেশব্যাপী আরও একটি বিপ্লব ঘটেছে। এই কয়েক বছরে দেশের প্রায় প্রতিটি জেলা-উপজেলা-বিভাগ পর্যায়ে হাজার হাজার স্কুলে ডিজিটাল কনটেন্ট উপস্থাপন করা হয়েছে। হাজার হাজার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ডিজিটাল উপাত্তের সঙ্গে পরিচিত হয়েছে। প্রাথমিকভাবে সব স্তরেই এই ধরনের শিক্ষাব্যবস্থার প্রতি শিক্ষার্থী ও স্কুল কর্তৃপক্ষের ব্যাপক আগ্রহ দেখা গেছে। কয়েক বছরের নতুন অভিজ্ঞতা হচ্ছে যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যবস্থাপনাকে ডিজিটাল করে শিক্ষার ডিজিটাল রূপান্তরে ব্যাপক আগ্রহ তৈরি করা যায়। দেশের অনেক সফটওয়্যার প্রতিষ্ঠান স্কুল ব্যবস্থাপনা সফটওয়্যার উন্নয়ন করেছে এবং এই সফটওয়্যার প্রয়োগও করতে পেরেছে।

২০২০ সালে আমাদের আশার আলো হচ্ছে যে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সহায়তায় ডাক ও টেলি যোগাযোগ বিভাগ দেশের সুবিধাবঞ্চিত প্রত্যন্ত ও দুর্গম অঞ্চলের ৫১০টি স্কুলে শিক্ষার ডিজিটাল রূপান্তরের পাইলট প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিয়েছে। আশা করা যায় এই প্রকল্পের পথ ধরেই পুরো দেশের পুরো শিক্ষাব্যবস্থা ডিজিটাল হবে।

লেখক : তথ্যপ্রযুক্তিবিদ, কলামিস্ট, দেশের প্রথম ডিজিটাল নিউজ সার্ভিস আবাসের চেয়ারম্যান- সাংবাদিক, বিজয় কীবোর্ড ও সফটওয়্যারের জনক। 

এমপিও কোড পেলো আরো ১৪ স্কুল-কলেজ - dainik shiksha এমপিও কোড পেলো আরো ১৪ স্কুল-কলেজ নারীদের আইসিটিতে দক্ষ হতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha নারীদের আইসিটিতে দক্ষ হতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী হিটস্ট্রোকে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র তূর্যের মৃত্যু - dainik shiksha হিটস্ট্রোকে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র তূর্যের মৃত্যু পরীক্ষার নাম এসএসসিই থাকবে, ওয়েটেজ ৫০ শতাংশ - dainik shiksha পরীক্ষার নাম এসএসসিই থাকবে, ওয়েটেজ ৫০ শতাংশ ফরেনসিক অডিটে ফাঁসছেন দশ হাজার জাল সনদধারী - dainik shiksha ফরেনসিক অডিটে ফাঁসছেন দশ হাজার জাল সনদধারী কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের পিএইচডি ফেলোশিপ - dainik shiksha প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের পিএইচডি ফেলোশিপ সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি - dainik shiksha সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি জড়িত মনে হলে চেয়ারম্যানও গ্রেফতার: ডিবির হারুন - dainik shiksha জড়িত মনে হলে চেয়ারম্যানও গ্রেফতার: ডিবির হারুন সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা - dainik shiksha সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0034830570220947