এবারের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় পাসের হার গতবারের চেয়ে দুই দশমিক ৫৮ শতাংশ কমে ৭৭ দশমিক ৭৭ শতাংশ হয়েছে। গতবারও আগের বছরের চেয়ে ফল খারাপ হয়েছিল। এর কারণ নিয়ে আলোচনা চলছে।
রোববার (৬ মে) ফল প্রকাশ উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে স্বভাবতই শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের কাছে এর কারণ জানতে চান সাংবাদিকেরা।
উত্তরে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, সমমানে মূল্যায়নের প্রভাব এতে পড়তে পারে। পরীক্ষার মূল্যায়ন যাতে সঠিক হয় সে জন্য বাংলাদেশ পরীক্ষা উন্নয়ন ইউনিট গবেষণা করছে। এখন আগের চেয়ে উন্নতমানের মূল্যায়ন হয়। আগে হয়তো শিক্ষকেরা ঠিকমতো মনোযোগ দিয়ে উত্তরপত্র দেখতেন না। এখন সেই সুযোগ কম। এখন পুন: মূল্যায়নে নানা পদ্ধতি রাখা হয়েছে। সব শিক্ষক যেন সমমানে মূল্যায়ন করেন সে জন্য আগে থেকেই দিক নির্দেশনা ঠিক করে পরীক্ষকদের দেওয়া হয়। এর ফলে সারাদেশে সমতা এসেছে। পরীক্ষার খাতাও ভালোভাবে দেখা হয়। তার প্রভাব ফলাফলে পড়তে পারে। তবে তিনি এও বলেন, এটাই একমাত্র কারণ নয়।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন,এ বছর ২৩ টি বিষয়ে সৃজনশীল প্রশ্ন পদ্ধতিতে পরীক্ষা হয়েছে। সকল শিক্ষা বোর্ডে অভিন্ন মূল্যায়ন পদ্ধতিতে উত্তরপত্র মূল্যায়নের ব্যবস্থা করা হয়। গত বছরের ন্যায় এ বছরও উত্তরপত্র মূল্যায়ণে অবমূল্যায়ন বা অতিমূল্যায়ন রোধে বোর্ডসমূহ বেশকিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করে। প্রধান পরীক্ষকগণকে উত্তরমালা প্রনয়ণের জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়। প্রণীত নমুনা উত্তরমালার আলোকে উত্তরপত্র মূল্যায়নের জন্য পরীক্ষকগণকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করা হয়। পরীক্ষকদের উত্তরপত্র মূল্যায়নের গুণগতমান যাচাইয়ের জন্য একটি প্রশ্নমালা সকল প্রধান পরীক্ষকগণকে সরবরাহ করা হয়েছে।
নাহিদ বলেন,বিজ্ঞান শাখায় অংশগ্রহণকারী পরীক্ষার্থীর সংখ্যা বৃদ্ধির পাশাপাশি উত্তীর্ণের সংখ্যাও বৃদ্ধি পেয়েছে। সাধারণ শিক্ষা বোর্ডসমূহে এ বছরের পরীক্ষায় ছাত্রের তুলনায় ছাত্রীদের অংশগ্রহণ ও উত্তীর্ণের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। একইসঙ্গে সকল শিক্ষা বোর্ডে ছাত্রের তুলনায় ছাত্রী ২ দশমিক ১৪ শতাংশ বেশি পাস করেছে।
তিনি আরও বলেন, দৃষ্টি প্রতিবন্ধী, সেরিব্রাল পালসি জনিত প্রতিবন্ধী এবং যাদের হাত নেই এমন প্রতিবন্ধী পরীক্ষার্থী স্ক্রাইব (শ্রুতি লেখক) সঙ্গে নিয়ে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছে । এ ধরনের পরীক্ষার্থীদের এবং শ্রবণ প্রতিবন্ধী পরীক্ষার্থীদের জন্য অতিরিক্ত ২০ মিনিট সময় বেশি দেয়া হয়েছে। বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন (অটিস্টিক এবং ডাউন সিনড্রোম বা সেরিব্রালপালসি আক্রান্ত) পরীক্ষার্থীদের ৩০ মিনিট অতিরিক্ত সময় এবং পরীক্ষার কক্ষে তার অভিভাবক/শিক্ষক/সাহায্যকারী নিয়ে পরীক্ষায় অংশগ্রহণের অনুমতি দেয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, এবার এসএসসি পরীক্ষায় ১৭টি বিষয়ের মধ্যে ১২টিতেই নৈর্ব্যক্তিক (এমসিকিউ) অংশের ‘খ’ সেট প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছে।