পরীক্ষার্থীদের ক্ষতি পুষিয়ে দেয়া হবে: সিনিয়র সচিব - দৈনিকশিক্ষা

৫৩ পরিদর্শক ও কেন্দ্রসচিব প্রত্যাহারপরীক্ষার্থীদের ক্ষতি পুষিয়ে দেয়া হবে: সিনিয়র সচিব

নিজস্ব প্রতিবেদক |

বাংলা ১ম পত্রে ভুল প্রশ্নপত্রের শিকার পরীক্ষার্থীরা কোনোভাবেই কম নম্বর পাবে না, বরং তাদের ক্ষতি পুষিয়ে দেয়া হবে। সব মিলিয়ে তারা লাভবানই হবে। শনিবার নতুন ‍ও পুরনো সিলেবাসের প্রশ্নের তালগোলে পড়া এসএসসির বাংলা ১ম পত্রের পরীক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের উদ্দেশ্যে সরকারের এমন সিদ্ধান্তের কথা জানালেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো: সোহরাব হোসাইন। রোববার (৩ ফেব্রুয়ারি) রাত পৌণে দশটার দিকে দৈনিক শিক্ষাকে টেলিফোনে মন্ত্রণালয়ের এ সিদ্ধান্তের কথা জানান সিনিয়র সচিব।

ভুলের জন্য দায়ী অন্তত ১৬ কেন্দ্র সচিব এবং ৩৭ কক্ষ পরিদর্শককে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।  ভুলের শিকার শিক্ষার্থীদের প্রতিবেদন কেন্দ্রগুলো থেকে সংগ্রহ করেছে বিভিন্ন শিক্ষা বোর্ড। রোববার রাত ১০টা পর্যন্ত এ তথ্য জানিয়ে সচিব বলেন, আরো কয়েকজনের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। 

শনিবার (২ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা, চট্টগ্রাম, জামালপুর, নওগাঁ, শেরপুর, সাতক্ষীরা, মুন্সিগঞ্জ, গাইবান্ধা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, বাগেরহাট ও মাদারীপুরসহ কয়েকটি জেলা ২০টিরও বেশি কেন্দ্রে নিয়মিত শিক্ষার্থীদের পুরনো সিলেবাসের প্রশ্নপত্র দেওয়া হয়। সেদিন ছিল বাংলা প্রথম পত্রের পরীক্ষা। এসব প্রশ্নপত্র ছিল পুরোনো পাঠ্যক্রমের ভিত্তিতে অনিয়মিত শিক্ষার্থীদের জন্য। ভুল ধরা পড়ার পর কোথাও পরীক্ষার্থীদের সময় বাড়িয়ে দিয়ে নতুন প্রশ্নে পরীক্ষা নেয়া হয়েছে আবার কোথাও হয়নি। এতে কম নম্বর পাওয়ার আশঙ্কা করছেন অনেক পরীক্ষার্থী। এমন প্রেক্ষাপটে উদ্বিগ্ন শিক্ষার্থীদেরকে সরকারের সিদ্ধান্তের কথা জানালেন সচিব।

সিনিয়র সচিব দৈনিক শিক্ষাকে বলেন, ‘কেন্দ্রসচিব ও কক্ষ পরিদর্শকদের ভুলে যেসব কেন্দ্রের পরীক্ষার্থীদের নতুনের বদলে পুরনো সিলেবাসের প্রশ্নপত্র দিয়ে পরীক্ষা নেয়া হয়েছে তাদেরকে ক্ষতি পুষিয়ে দেয়া হবে। নতুন ও পুরানের তালগোলে পড়া সব পরীক্ষার্থীর তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। তাদের খাতা আলাদা করা হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘পুড়ে যাওয়া, হারিয়ে যাওয়া বা অন্যকোনো কারণে ক্ষতিগ্রস্থ হওয়া বিষয়ে পরীক্ষার্থীদের নম্বর দেয়ার সুষ্পষ্ট বিধান রয়েছে শিক্ষাবোর্ডগুলোর। আন্ত:বোর্ডের নীতিমালা অনুযায়ী ওই নম্বর দেয়া হয়, যাতে পরীক্ষার্থীরা বেনিফিট অব ডাউট হিসেবে ৫ শতাংশ নম্বর বেশিই পায়।’

উদাহরণ হিসেবে সচিব বলেন, ‘ধরা যাক, একজন ছাত্র বাংলা ১ম পত্রে ৭০ পেয়েছে। কিন্তু কোনো কারণে তার বাংলা ২য় পত্র খাতাটি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে বা হারিয়ে গেছে কর্তৃপক্ষের ভুলে। সেক্ষেত্রে ওই ছাত্রটি বাংলা ১ম পত্রে কত নম্বর পেয়েছে তা দেখা হয়। এরপর তাকে বেনিফিট অব ডাউট হিসেবে ১ম পত্রের চেয়ে ২য় পত্রে ৫ শতাংশ নম্বর বেশি দেয়া হয়। এছাড়া একক বিষয় হলে অতীতের পরীক্ষার রেকর্ড দেখা হয়।’

পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকদের উদ্বিগ্ন না হওয়ার অনুরোধ জানান সিনিয়র সচিব।

প্রথম দিনে ভুল প্রশ্ন বিতরণকারীসহ সংশ্লিষ্ট সব ধরণের অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হচ্ছে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে ঢাকা ও চট্টগ্রামসহ কয়েক জায়গায় অভিযুক্তদের অব্যাহতিসহ বিভিন্ন ধরণের শাস্তি শুরু হয়েছে বলে জানান সিনিয়র সচিব।    

এদিকে ভুল প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা দেওয়া এসএসসি পরীক্ষার্থীদের খাতা আলাদাভাবে মূল্যায়ন করা হবে বলে জাতীয় সংসদকে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা: দীপু মনি। একই সঙ্গে ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি। রোববার (৩ ফেব্রুয়ারি) সংসদে এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এ তথ্য জানান।

সংসদে প্রশ্নোত্তরে জাতীয় পার্টির মুজিবুল হক চুন্নুর সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, “প্রশ্নটি অত্যন্ত যৌক্তিক। গতকাল শনিবার থেকে সারা দেশে যে এসএসসি, দাখিল ও ভোকেশনাল এসএসসি পরীক্ষা শুরু হয়েছে। তাতে কিছু জেলার কয়েকটি কেন্দ্রে এই সমস্যাটি হয়েছে। যেটি হয় পরীক্ষায় অনিয়মিত কিছু পরীক্ষার্থী থাকে। তাদের প্রশ্নপত্র তাদের সময়কার সিলেবাসে করা হয়। যারা নিয়মিত তাদের নতুন সিলেবাস অনুযায়ী হয়। নিয়মিত ও অনিয়মিতদের প্রশ্নপত্র আলাদাই যায়।”

“নির্দেশনা থাকে নিয়মিত ও অনিয়মিতরা ভিন্ন জায়গায় বসবে। যাতে সহজে তাদের মাঝে প্রশ্নপত্র সরবরাহ করা যায়। যেখানের কেন্দ্রগুলোতে এই সমস্যাটা হয়েছে সেখানকার কেন্দ্র সচিবসহ সংশ্লিষ্টদের ভুলের কারণে এই ঘটনাটি ঘটেছে। ওই সব কেন্দ্রে নিয়মিত শিক্ষার্থীদের যারা অনিয়মিতদের প্রশ্নে পরীক্ষা দিয়েছে তাদের চিহ্নিত করা হয়েছে। ওই ক্ষতিগ্রস্ত পরীক্ষার্থীদের খাতা ভিন্নভাবেই দেখা হবে। যাতে কোনভাবেই তারা ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। আর যাদের ভুলের কারণে এই ঘটনা ঘটেছে ইতোমধ্যে তাদের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে। তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন সাপেক্ষে তাদের বিরুদ্ধে যথোপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”

জড়িত মনে হলে চেয়ারম্যানও গ্রেফতার: ডিবির হারুন - dainik shiksha জড়িত মনে হলে চেয়ারম্যানও গ্রেফতার: ডিবির হারুন পছন্দের স্কুলে বদলির জন্য ‘ভুয়া’ বিবাহবিচ্ছেদ - dainik shiksha পছন্দের স্কুলে বদলির জন্য ‘ভুয়া’ বিবাহবিচ্ছেদ হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা - dainik shiksha হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা সনদ বাণিজ্য : কারিগরি শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যানের স্ত্রী কারাগারে - dainik shiksha সনদ বাণিজ্য : কারিগরি শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যানের স্ত্রী কারাগারে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে উপবৃত্তির জন্য সব অ্যাকাউন্ট নগদে রূপান্তরের নির্দেশ - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সব অ্যাকাউন্ট নগদে রূপান্তরের নির্দেশ সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা - dainik shiksha সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা জাতীয়করণ আন্দোলনের শিক্ষক নেতা শেখ কাওছার আলীর বরখাস্ত অনুমোদন - dainik shiksha জাতীয়করণ আন্দোলনের শিক্ষক নেতা শেখ কাওছার আলীর বরখাস্ত অনুমোদন ১৭তম ৩৫-প্লাস শিক্ষক নিবন্ধিতদের বিষয়ে চেম্বার আদালত যা করলো - dainik shiksha ১৭তম ৩৫-প্লাস শিক্ষক নিবন্ধিতদের বিষয়ে চেম্বার আদালত যা করলো দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে তিন স্তরে সনদ বিক্রি করতেন শামসুজ্জামান, দুদকের দুই কর্মকর্তার সম্পৃক্ততা - dainik shiksha তিন স্তরে সনদ বিক্রি করতেন শামসুজ্জামান, দুদকের দুই কর্মকর্তার সম্পৃক্ততা please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.015444040298462