পাবনার ভাঙ্গুড়ায় এক স্কুলছাত্র পরীক্ষায় ফেল করে বাবা-মায়ের বকুনি থেকে বাঁচার জন্য ছেলেধরার গুজব ছড়াতে গিয়ে ধরা পড়েছে। রোববার রাতে এ ঘটনায় পুলিশ তাকে জিজ্ঞাসাবাদের পর পরিবারের কাছে তুলে দিয়েছে। ওই ছাত্রের নাম জামিউল ইসলাম জয় (১৪)। সে সরকারি ভাঙ্গুড়া ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয় অ্যান্ড কলেজের মানবিক বিভাগের নবম শ্রেণীর ছাত্র ও উপজেলার চড়-ভাঙ্গুড়া গ্রামের প্রবাসী খোকন আলীর ছেলে।
পুলিশ জানায়, রোববার স্কুল থেকে ফেরার পথে একদল ছেলেধরা জয়কে সিএনজচালিত অটোরিকশায় তুলে নিয়ে যাচ্ছিল, সন্ধ্যায় কৌশলে সে অপহরণকারীদের ফাঁকি দিয়ে চাটমোহর থানার জার্দিস মোড়ে এক দোকানে আশ্রয়ে নেয়- এমন খবর পেয়ে চাটমোহর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার সজীব শাহরীন সেখানে উপস্থিত হয়ে তাকে নিজ হেফাজতে নেন।
সজিব শাহরীন বলেন, ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে স্থানীয় দোকানদারদের মাধ্যমে জানতে পারি, রোববার সন্ধ্যা ৬টার দিকে স্কুলড্রেস পরা ওই ছেলে একটি দোকানে ঢুকে জানায়, কয়েকজন লোক তাকে ভাঙ্গুড়া থেকে জোর করে সিএনজিতে তুলে নিয়ে যায় এবং মুখে কিছু একটা দেয়ার কারণে সে অচেতন হয়ে পড়ে। হঠাৎ চেতনা ফিরে এলে সিএনজি থামানো অবস্থায় পেয়ে নেমে দৌড়ে ওই দোকানে আশ্রয় নেয় সে। এরপর তারা তাকে ভাঙ্গুড়ায় থানায় নিয়ে আসে। পরে জয়কে তার মা, স্কুলের অধ্যক্ষ রবিউল ইসলাম, এবং পৌর মেয়রকে গোলাম হাসনাইন রাসেলের উপস্থিতিতে দীর্ঘ দেড় ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এর এক পর্যায়ে জয় স্বীকার করে যে, ছেলে ধরার নাটক সাজিয়ে সে নিজেই চাটমোহর গিয়েছিল।
ভাঙ্গুড়া থানার ওসি মাসুদ রানা জানান, ছেলেটি দুষ্টু প্রকৃতির। রোববার তার অর্ধবার্ষিক পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। সে দুই বিষয়ে ফেল করেছে। এ ভয়ে সে সিএনজিতে করে পার্শ্ববর্তী থানাশহরে গিয়ে এই নাটক সাজায়।
জয়ের মা জুলিয়া খাতুন বলেন, কী হয়েছে জানি না। আমি আমার ছেলে পেয়েছি। আমার আর কিছু বলার নেই।
সরকারি ভাঙ্গুড়া ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয় অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ রবিউল ইসলাম বলেন, ছেলেটি অর্ধবার্ষিকী পরীক্ষায় দুই বিষয়ে ফেল করেছে। এ কারণে বাবা-মায়ের শাসনের ভয়ে এমনটা করেছে বলে জানিয়েছে সে।