সড়ক দুর্ঘটনায় নারী পর্বতারোহী স্কুল শিক্ষক মোছা. রেশমা আক্তার রত্না (৩২) নিহতের ঘটনায় জড়িত মাইক্রোবাসকে জব্দ ও চালককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার (১৮ আগস্ট) রাজধানীর কাফরুল থানাধীন ইব্রাহীমপুর থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। এর আগে গত ৭ আগস্ট এ ঘটনায় নিহতের আত্মীয় মো. মনিরুজ্জামান শেরেবাংলা নগর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
গ্রেফতার নাইম (২৭) দুর্ঘটনার সময় মাইক্রোবাসটি চালাচ্ছিল। জানা যায়, মাইক্রোবাসটির মালিক একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কাছে মাইক্রোবাসটি মাসিকভিত্তিতে ভাড়া দিয়েছেন। প্রতিষ্ঠানের নাইট শিফটে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিভিন্ন গন্তব্যে নামিয়ে দেয়ার সময় ঘটনাটি ঘটেছে বলে জানায় পুলিশ।
পুলিশ জানায়, আজ মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর ইব্রাহিমপুর থেকে রেশমাকে ধাক্কা দেয়ার অভিযোগে নাইম নামের একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার বাড়ি কিশোরগঞ্জে। রাজধানীর ইব্রাহিমপুরের ভাড়া বাসা থেকে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। তার সঙ্গে মাইক্রোবাসটিও জব্দ করা হয়েছে। গাড়ির নম্বর ঢাকা মেট্রো চ ১৫৩৬৮৫। চালক ও গাড়ি খুঁজে পেতে ৩৮২টি সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করতে হয়েছে পুলিশের।
গত ৭ আগস্ট রাজধানীর চন্দ্রিমা উদ্যানের পাশে লেক রোডে বাইসাইকেল আরোহী রেশমা নাহারকে একটি মাইক্রোবাস ধাক্কা দিলে তাঁর মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় তাঁর পরিবার মামলা করে। ঘটনার ১১ দিন পর পুলিশ রেশমাকে ধাক্কা দেয়া গাড়ি শনাক্ত ও চালক আটকের কথা জানায়।
রেশমা নাহার রাজধানীর আইয়ুব আলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করতেন। তাঁর বাড়ি নড়াইলে। ঢাকায় মিরপুরে থাকতেন। তিনি পর্বতারোহী ছিলেন এবং নিয়মিত বাইসাইকেল চালাতেন।
রেশমা নিহতের ঘটনায় বিভিন্ন মহল থেকে চাপ ছিল জানিয়ে শেরেবাংলা নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘এই ঘটনার পর থেকে আমরা উদ্বেগের মধ্যে ছিলাম। বিভিন্ন মহল থেকে চাপ ছিল। কারণ, রেশমা নাহার একজন পর্বতারোহী এবং স্কুলশিক্ষক। তাঁর মৃত্যু কেউ মেনে নিতে পারেনি। ৩৮২টি সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করতে হয়েছে। ১০ থেকে ১২টি সিসি ক্যামেরা থেকে এই গাড়ির ছবি পেয়েছি। নম্বর বের করতে আমাদের এত দিন সময় লেগেছে। কোনোভাবেই আমরা নম্বর বুঝতে পারছিলাম না। পরে নিজেরা গ্যারেজে গ্যারেজে গিয়ে নজরদারি করি। একপর্যায়ে আমরা চারটা গাড়িকে চিহ্নিত করি। যার মধ্যে একটি গণমাধ্যমের, একটি সূত্রাপুরের, একটি সাভারের এবং আরেকটি ইব্রাহিমপুরের। পরে বিভিন্ন মাধ্যমে আমরা নিশ্চিত হয়েছি নাইমের চালানো গাড়িই সেই গাড়ি। পরে জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছেন এই গাড়িই তিনি চালাচ্ছিলেন।’
অভিযুক্ত নাইম এখন থানা হাজতে আটক আছেন জানিয়ে আবুল কালাম আজাদ বলেন, আগামীকাল আদালতে তাঁর পাঁচ দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হবে।