পা দিয়ে লিখে সমাপনী পরীক্ষা দিচ্ছে সিয়াম - দৈনিকশিক্ষা

পা দিয়ে লিখে সমাপনী পরীক্ষা দিচ্ছে সিয়াম

জামালপুর প্রতিনিধি |

পা দিয়ে লিখে পিএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে সিয়াম জন্মের পর থেকেই দুই হাত নেই। তারপরেও বাম পা দিয়ে লিখে চলতি বছর প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী (পিইসি) পরীক্ষা দিচ্ছে হতদরিদ্র পরিবারের সন্তান সিয়াম। সে জামালপুরের সরিষাবাড়ির ডোয়াইল ইউনিয়নের উদনাপাড়া ব্র্যাক শিশু নিকেতন স্কুলের শিক্ষার্থী। তবে শারীরিক ও আর্থিক সমস্যা থাকলেও মনের মধ্যে কোনও হতাশা নেই সিয়ামের। ভবিষ্যৎ জীবনে সে হতে চায় সরকারি কর্মকর্তা। কিন্তু আর্থিক সমস্যার কারণে সিয়ামের পড়ালেখা চালিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে উদ্বিগ্ন তার দিনমজুর বাবা-মা।

সরিষাবাড়ী উপজেলার ডোয়াইল ইউনিয়নের উদনাপাড়া গ্রামের জিন্না মিয়া ও জোসনা বেগমের ছেলে সিয়াম। তাদের তিন সন্তানের মধ্যে সিয়াম সবার ছোট। জন্ম থেকেই তার দু’টি হাত নেই। কিন্তু এ কারণে থেমে নেই সিয়ামের পড়ালেখা ও খেলাধুলা। সে এবার ডোয়াইল ইউনিয়নের উদনাপাড়া ব্র্যাক শিশু নিকেতন স্কুল থেকে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে। ১৯ নভেম্বর (সোমবার) সকালে এই এলাকার মহেশ চন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে পা দিয়ে লিখে বাংলা পরীক্ষা দিতে দেখা গেছে তাকে।

পরীক্ষা শেষে সিয়ামের সঙ্গে কথা বলে জানা যায় তার প্রবল ইচ্ছার কথা। পা দিয়ে লিখে পরীক্ষা দেওয়া সম্পর্কে জানতে চাইলে সিয়াম বলে, ‘আমার দুই হাত না থাকলেও তাতে আমার কোনও সমস্যা নাই। পা দিয়ে লিখতে লিখতে আমার অভ্যাস হয়ে গেছে। আমার সব কাজ আমি নিজেই করতে পারি। আমি লেখাপড়া করতে চাই। লেখাপড়া করে সরকারি বড় একজন কর্মকর্তা হতে চাই। বড় কর্মকর্তা হয়ে দেশের সেবা করতে চাই।’

সিয়ামের মা জোসনা বেগম বলেন, ‘লেখাপড়ার জন্য সিয়ামকে কখনও বলতে হয় না। নিজের ইচ্ছায় সিয়াম সবসময় পড়ালেখা করে। কিছু কিছু কাজ ছাড়া সব কাজ নিজেই করতে পারে। সাঁতার কাটা থেকে শুরু করে খেলাধুলাও করতে পারে। অর্থের অভাবে ছেলেকে কখনও ভালো কিছুই খাওয়াতে বা পরাতে পারি না। ওর নামে একটা প্রতিবন্ধী ভাতার কার্ড পাইছি। সেই টাকায় কিছুই হয় না। সরকার যদি আরও ভালো কোনও অর্থিক সহায়তা দিতো তাহলে সিয়ামের পড়ালেখা চালিয়ে যাওয়া অনেক সহজ হতো।’

এ ব্যাপারে উদনাপাড়া ব্র্যাক শিশু নিকেতনের প্রধান শিক্ষিকা জাকিয়া সুলতানা জানান, সিয়াম প্রথম শ্রেণি থেকেই তাদের স্কুলে পড়ালেখা শুরু করে। পরিবারের অর্থনৈতিক সংকটের কারণে মাঝপথে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল তার পড়ালেখা। প্রতি মাসে ২৫০ টাকা বেতনও দিতে পারতো না। পরে পরিবারের সঙ্গে কথা বলে বেতন মওকুফ করে আবার পড়ালেখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। পড়ালেখার পাশাপাশি সে সব ধরনের খেলাধুলায় পারদর্শী। অন্যান্য শিক্ষার্থীর চেয়ে তার মেধা ভালো। সমাজের বিত্তবান ব্যক্তি বা সরকারি কোনও সহায়তা পেলে সে পড়ালেখা চালিয়ে যেতে পারবে।’

এ ব্যাপারে সরিষাবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী পরীক্ষা দিচ্ছে সেটা আমার জানা ছিলো না। আমি খোঁজ নিয়ে তার সহায়তার বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।’

হাইকোর্টের আদেশ পেলে আইনি লড়াইয়ে যাবে বুয়েট: উপ-উপাচার্য - dainik shiksha হাইকোর্টের আদেশ পেলে আইনি লড়াইয়ে যাবে বুয়েট: উপ-উপাচার্য প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ: তৃতীয় ধাপের ফল প্রকাশ হতে পারে আগামী সপ্তাহে - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ: তৃতীয় ধাপের ফল প্রকাশ হতে পারে আগামী সপ্তাহে ভূমির জটিলতা সমাধানে ভূমিকা রাখবেন নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা - dainik shiksha ভূমির জটিলতা সমাধানে ভূমিকা রাখবেন নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা সর্বজনীন শিক্ষক বদলি চালু হোক - dainik shiksha সর্বজনীন শিক্ষক বদলি চালু হোক ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের বিএসসির সমমান দিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কমিটি - dainik shiksha ডিপ্লোমা প্রকৌশলীদের বিএসসির সমমান দিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কমিটি রায় জালিয়াতি করে পদোন্নতি: শিক্ষা কর্মকর্তা গ্রেফতার - dainik shiksha রায় জালিয়াতি করে পদোন্নতি: শিক্ষা কর্মকর্তা গ্রেফতার কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0038540363311768