পাঠ্যক্রম উন্নয়ন নয়, মুদ্রণে ব্যস্ত পাঠ্যপুস্তক বোর্ড! - Dainikshiksha

পাঠ্যক্রম উন্নয়ন নয়, মুদ্রণে ব্যস্ত পাঠ্যপুস্তক বোর্ড!

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

বর্তমান সরকার শিক্ষা নিয়ে বেশ কিছু প্রশংসনীয় কাজ করেছে, যার মধ্যে বছরের প্রথম দিন শিক্ষার্থীদের কাছে বই পৌঁছানোর বিষয়টি উল্লেখযোগ্য। আর এটি নিশ্চিত করতে গিয়ে বছরের অধিকাংশ সময় বইয়ের মুদ্রণ তদারকির কাজেই ব্যয় করছেন জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) কর্মকর্তারা। ফলে বছরের শুরুতে শিক্ষার্থীরা যে বই পাচ্ছে তার মান নিয়ে যেমন প্রশ্ন তৈরি হচ্ছে, তেমনি ভাষার ব্যবহার ও বানানের ক্ষেত্রেও ভুলভ্রান্তি থেকে যাচ্ছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে শিক্ষার্থীরা। বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) ইত্তেফাক পত্রিকায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়। প্রতিবেদনটি লিখেছেন নিজামুল হক।

এনসিটিবির লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হলো শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তকের মান উন্নয়ন, পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণ ও বিতরণের ব্যবস্থা গ্রহণ এবং শিক্ষাক্রম বিস্তরণ প্রশিক্ষণের মাধ্যমে শিক্ষকদের দক্ষতা বৃদ্ধি। বর্তমানে লক্ষ্য থেকে অনেকটাই দূরে সরে গেছে এনসিটিবি। শুধুমাত্র পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণ করাই যেন তাদের প্রধান কাজ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এনসিটিবির মূল কাজ ছিল শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তকের মান উন্নয়ন এবং শিক্ষাক্রম বিস্তরণ প্রশিক্ষণের মাধ্যমে শিক্ষকদের দক্ষতা বৃদ্ধি। ২০১০ খ্রিষ্টাব্দ থেকে সরকার বিনা মূল্যে শিক্ষার্থীদের হাতে বই তুলে দেয়ার কর্মসূচি নেয়। এ কারণে এনসিটিবি নিজেই দরপত্র আহ্বান করে বই ছাপার দায়িত্ব কাঁধে নেয়। ফলে বছরের বেশিরভাগ সময়ই প্রতিষ্ঠানটির গবেষণা কর্মকর্তারা কাজ করেন ছাপাখানায়, বই ছাপা কেমন হচ্ছে তা তদারকিতে। ছাপা হওয়া বই ঠিক মতো ট্রাকে উঠছে কি না, তার নজরদারিতে। কারিকুলাম উন্নয়নে নিয়োজিতদের কীভাবে ছাপা তদারকি থেকে দূরে রাখা যায়-সে ব্যাপারে কোনো কার্যকর উদ্যোগও নিচ্ছে না এনসিটিবি।

এনসিটিবির সদস্য (পাঠ্যপুস্তক) অধ্যাপক ফরহাদুল ইসলাম বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, জনবল সংকটের কারণে কারিকুলাম সংশ্লিষ্টদের ও গবেষণা কর্মকর্তাদের মুদ্রণ কাজে সংশ্লিষ্ট রাখা হয়। আবার বিষয়ভিত্তিক যত সংখ্যক গবেষক থাকা দরকার, তা নেই। এ ছাড়া পদায়নের প্রক্রিয়া নিয়েও তিনি প্রশ্ন তোলেন।

এনসিটিবির সদস্য (কারিকুলাম) প্রফেসর মো.মশিউজ্জামান বলেন, বই মুদ্রণ কাজে জড়ানোর কারণে কিছুটা হলেও তো কারিকুলাম কাজে ক্ষতি হচ্ছে। তিনি জানান, এনসিটিবি প্রতিষ্ঠার সময় বই ছাপানো হতো না। ফলে অরগানোগ্রামে এ সংক্রান্ত কোনো জনবল রাখা হয়নি। কিন্তু যখন বই ছাপার কাজ এনসিটিবির ওপর পরে তখন থেকেই কারিকুলামে জড়িতদের মুদ্রণ কাজে জড়ানো হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে নতুন জনবলের প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করেন তিনি।

এনসিটিবির এক কর্মকর্তা জানান, এনসিটিবি একটি শিক্ষা বিষয়ক বিশেষায়িত প্রতিষ্ঠান। গবেষণায় মন আছে এবং যোগ্য এমন কর্মকর্তাদের এখানে পদায়নের দাবি ছিল দীর্ঘদিনের। অথচ তা হচ্ছে না। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কারিকুলাম উন্নয়নের জন্য মেধাবী ও যোগ্য বিষয় ভিত্তিক শিক্ষক প্রয়োজন এনসিটিবিতে। কিন্তু তদ্বিরের চাপে সেটাও সম্ভব হচ্ছে না। এনসিটিবিতে বাংলা বিষয়ের অন্তত ৪ জন শিক্ষক প্রয়োজন। কিন্তু নেই একজনও। প্রয়োজন না থাকলেও দর্শন বিষয়ের ৬ জন শিক্ষক রয়েছেন। ইংরেজি বিষয়ে ৪ জন শিক্ষক প্রয়োজন। অথচ আছেন মাত্র ১ জন। তারা অভিযোগ করেন, ঢাকায় থাকার জন্য অনেকে তদবির করে কারিকুলাম বিশেষজ্ঞ হন। তারা কীভাবে গবেষণা করবেন? কারিকুলাম উন্নয়নে তারা কী ভূমিকা রাখবেন? তারা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ কর্মকর্তাদের আত্মীয়-স্বজন বলেই পরিচিত। এ ছাড়া রয়েছে প্রভাবশালী মন্ত্রী-এমপিদের তদবিরে পদায়ন।

এনসিটিবির শীর্ষপদগুলোতে ছিলেন এমন একাধিক কর্মকর্তা এই প্রতিবেদককে বলেন, এনসিটিবিতে পদায়ন ও কাজের ধরণ পরিবর্তন করতে হবে। অন্যান্য অধিদপ্তর ও বোর্ডে যেভাবে ঢালাওভাবে যে কাউকে পদায়ন করা হয়, এনসিটিবিতেও সেভাবে করা হয়। ঢাকায় থাকার জন্য অন্য কোথাও শূন্য পদ না থাকায় অনেককেই এনসিটিবিকে পদায়ন দেয়া হয়। অথচ এখানে পরীক্ষার মাধ্যমে পদায়ন দেয়া উচিত।

এ প্রসঙ্গে এনসিটিবি চেয়ারম্যান অধ্যাপক নারায়ন চন্দ্র সাহা বলেন, জনবল সংকটের কারণে সবাইকেই মুদ্রণ সংক্রান্ত কাজে যুক্ত করতে হয়। তবে এনসিটিবির নতুন আইন হয়েছে। এর ফলে জনবল বাড়বে। তিনি বলেন, নতুন আইনে গবেষণার জন্য পৃথক একটা উইং রয়েছে। এনসিটিবিতে যাতে যোগ্য লোক পদায়ন পায় সে বিষয়টি মন্ত্রণালয় ভাবছে বলে তিনি জানান।

দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি - dainik shiksha দেশে তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি আকাশে তিনটি ড্রোন ধ্বংস করেছে ইরান, ভিডিয়ো প্রকাশ - dainik shiksha আকাশে তিনটি ড্রোন ধ্বংস করেছে ইরান, ভিডিয়ো প্রকাশ অভিভাবকদের চাপে শিক্ষার্থীরা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছেন - dainik shiksha অভিভাবকদের চাপে শিক্ষার্থীরা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে উঠছেন আমি সরকার পরিচালনা করলে কৃষকদের ভর্তুকি দিবই: প্রধানমন্ত্রী - dainik shiksha আমি সরকার পরিচালনা করলে কৃষকদের ভর্তুকি দিবই: প্রধানমন্ত্রী বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মামলা ১২ হাজারের বেশি - dainik shiksha বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মামলা ১২ হাজারের বেশি শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে - dainik shiksha শিক্ষকদের অবসর সুবিধা সহজে পেতে কমিটি গঠন হচ্ছে শিক্ষকদের শূন্যপদ দ্রুত পূরণের সুপারিশ - dainik shiksha শিক্ষকদের শূন্যপদ দ্রুত পূরণের সুপারিশ ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো ইসরায়েল - dainik shiksha ইরানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালালো ইসরায়েল কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0045309066772461