গাজীপুর সদর উপজেলার এক মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে টাকার বিনিময়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিনামূল্যের (সরকারী) পাঠ্যবই সরবরাহসহ নানা অনিয়মের অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। এজন্য শিক্ষা কর্মকর্তা আনন্দ ভৌমিককে গাজীপুর থেকে প্রত্যাহারসহ বিভাগীয় শাস্তির ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করেছে তদন্ত কমিটি।
জেলা প্রশাসক ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ুন কবীর জানান, ১ জানুয়ারির বই উৎসব পালনের আগে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে উপজেলা শিক্ষা অফিসের মাধ্যমে বিনামূল্যের সরকারী পাঠ্যবই বিতরণ করা হচ্ছিল।
সেসব বই সরবরাহের আগে গাজীপুর জেলা কিন্ডারগার্টেন এ্যাসোসিয়েশনের নেতা ও কর্মীদের মাধ্যমে গাজীপুর সিটির ৫৭ ওয়ার্ডে ৫৭ প্রতিনিধি নিযুক্ত করে গাজীপুর সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কয়েক দফায় টাকা আদায়ের অভিযোগ ওঠে। গত বৃহস্পতিবার জয়দেবপুর সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের গুদাম থেকে বই সরবরাহের আগে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান ও প্রতিনিধিদের কাছে আবারও টাকা দাবি করলে শিক্ষকরা প্রতিবাদে বিক্ষোভ করে। পরে বিভিন্ন জাতীয় পত্রিকায় এ সংক্রান্ত খবর প্রকাশ হয়।
এ প্রেক্ষিতে ওইদিনই গাজীপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা) খন্দকার ইয়াসির আরেফিন, গাজীপুর জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা রেবেকা সুলাতানা এবং গাজীপুর জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার (শিক্ষা) ফারজানা নাসরিনের মাধ্যমে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। সোমবার দুপুরে তারা তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন।
তদন্তে টাকা গ্রহণ ছাড়াও তার বিরুদ্ধে ক্রমাগত নানা দুর্নাম-দুর্নীতি ও অনিয়মের প্রমাণ পাওয়া গেছে। এ ছাড়া একদিনে প্রশাসনকে না জানিয়েই গুদাম থেকে ৭৪২টি প্রতিষ্ঠানে বই সরবরাহ করতে গিয়ে ব্যবস্থাপনার ত্রুটি সৃষ্টি করেছে। যা সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণœ করেছে। প্রতিবেদনে শিক্ষা কর্মকর্তা আনন্দ ভৌমিককে গাজীপুর থেকে প্রত্যাহারসহ বিভাগীয় শাস্তির ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করেছে তদন্ত কমিটি। মঙ্গলবার ওই সুপারিশসহ প্রতিবেদনটি শিক্ষামন্ত্রণালয়ে পাঠানো হচ্ছে।
এদিকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও একাধিক উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা দৈনিকশিক্ষাকে জানান, মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সমিতির নেতা লাবু ও নাহিদা তদবির করছেন আনন্দকে বাঁচাতে। তথ্য মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তাকে দিয়ে সুপারিশ করানো হয় আনন্দের পক্ষে। কিন্তু তথ্য মন্ত্রণালয়ের ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধেই রয়েছে তদবিরবাজির বিস্তর অভিযোগ। এ কথা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সবাই জানে। ওই কর্মকর্তাকে আত্মীয় পরিচয় দেয় লাবু।
াএদিকে প্রশ্নফাঁসের দায়ে অভিযুক্ত সৈয়দ শাহরিয়ার মেনজিসের বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ জমা হয়েছে শিক্ষাা মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরে। মেনজিস নিজ কর্মস্থল ভৈরবে না থেকে বেশিরভাগ সময় ঢাকায় অবস্থান করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।