পাবনায় এবারো সাত দৃষ্টি প্রতিবন্ধী যুবক শিক্ষার আলোয় আলোকিত হবার জন্য শ্রুতি লেখকের সহায়তায় পাবনা শহীদ এম মুনসুর আলী কলেজ ও পাবনা টাউন গার্লস্ স্কুল কেন্দ্র থেকে এইচএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে। দরিদ্র এসব অন্ধরা এ সংগ্রামে শারীরিক প্রতিবন্ধকতার পাশাপাশি যোগ হয়েছে নানা ধরনের আর্থ-সামাজিক প্রতিকূলতা। সব বাধা ও প্রতিকূলতাকে জয় করে সোনালী ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখছেন এই সাত দৃষ্টি প্রতিবন্ধী।
চট্টগ্রাম জেলার রবিউল ইসলাম, নরসিংদী জেলার পেতিপলাশি গ্রামের মো. আবদুল্লাহ, সাভার ঢাকা জেলার ভবানিপুর গ্রামের মো. রবিউল ইসলাম, মাদারীপুরের বাগমাড়া গ্রামের সুমন আহম্মেদ চৌধুরী, পাবনা সাঁথিয়া উপজেলার মাহমুদপুর গ্রামের মো. জামিল হোসেন, পাবনা সুজানগর দুর্গাপুরের মো. মুনসুর আলী ও পাবনা চাটমোহর গৌর নগর গ্রামের মাহবুবুল আলম এই সাত দৃষ্টি প্রতিবন্ধী পাবনার মানব কল্যাণ ট্রাস্টের আশ্রয়ে থেকে এইচএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে। দৃষ্টি প্রতিবন্ধী এ পরীক্ষার্থীরা প্রশ্নপত্রের উত্তর মুখে বলে শ্রুতি লেখকদের শোনান এবং শ্রুতি লেখকরা সেটি লিখে আবার তাদের পড়ে শোনান। এ কারণে তাদের জন্য তিন ঘণ্টার অতিরিক্ত মাত্র ২৫ মিনিট বেশি সময় বরাদ্দ করা হয়েছে। এ সময় যথেষ্ট নয় বলে তারা দাবি করেন।
অন্ধদের লেখাপড়ার জন্য প্রয়োজন ব্রেইল পদ্ধতি। অথচ দেশের অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এ সুযোগ নেই। পরীক্ষার জন্য প্রয়োজন শ্রুতি লেখকের। দরিদ্র এসব অন্ধদের শ্রুতি লেখক সম্মানী তো দূরের কথা লেখা পড়া করার ন্যূনতম আর্থিক ব্যয় নির্বাহ করারও সক্ষমতা নেই। তারপরেও থেমে থাকেনি এসব সংগ্রামী দৃষ্টি প্রতিবন্ধীর শিক্ষা জীবন।
এ সাতজন পরীক্ষার্থীর মত আরো প্রায় ৫২ জন দৃষ্টি প্রতিবন্ধী পাবনার মানব কল্যাণ ট্রাস্টের আশ্রয়ে থেকে ব্রেইল পদ্ধতিতে লেখাপড়া করছেন। এ প্রতিষ্ঠান থেকে ছয়জন ৯ম শ্রেণিতে, ১০ম শ্রেণিতে সাতজন, একাদশে ছয়জন, দুইজন এমএসহ বিভিন্ন শ্রেণিতে তাদের শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।
এ প্রতিষ্ঠানকে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা দেওয়া হলে সারাদেশের দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের সর্বোত্কৃষ্ট শিক্ষালয় হিসেবে গড়ে উঠতে পারে।