প্রশ্নফাঁসের সাথে ফ্রিল্যান্স কোচিং সেন্টারের কেউ জড়িত নন, তাই পাবলিক পরীক্ষার সময় ফ্রিল্যান্স কোচিং সেন্টার খোলা রাখার দাবি জানিয়েছেন এসোসিয়েশন অব শ্যাডো এডুকেশন বাংলাদেশ এর কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ। একই সাথে প্রশ্নফাঁসের শেকড় অনুসন্ধানে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে ঢালাওভাবে কোচিং সেন্টার বন্ধ রাখার নেতিবাচক প্রভাব তুলে ধরেন এসোসিয়েশনের নেতৃবৃন্দ।
আজ বুধবার (২০ মার্চ) রাজধানীর ফার্মগেটে শ্যাডো এডুকেশন (ছায়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান) এসোসিয়েশনের আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. ইমাদুল হক (ই. হক স্যার) ও যুগ্ম-আহ্বায়ক মাহমুদুল হাসান সোহাগসহ অন্যান্যরা সংবাদ সম্মেলনে তাদের বক্তব্য তুলে ধরেন।
নেতারা বলেন, এসএসসি পরীক্ষার সময় ঢালাওভাবে সব কোচিং সেন্টার বন্ধ রাখার ফলে উচ্চমাধ্যমিক, জেএসসি, প্রাথমিক সমাপনী ও ইংরেজি শেখানোর কোচিং শিক্ষার্থীসহ অনেকেই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, যা কাম্য নয়। গত দুই বছর যাবত এসএসসি, এইচএসসি ও জেএসসি পরীক্ষার সময় ফ্রিল্যান্স কোচিং সেন্টারসহ সব ধরনের কোচিং সেন্টার বন্ধ রাখা হচ্ছে। এর ফলে ফ্রিল্যান্স কোচিং সেন্টারগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
লিখিত বক্তব্যে নেতারা আরও বলেন , পাবলিক পরীক্ষার প্রশ্নপত্র প্রণয়ন থেকে শুরু করে মডারেশন, টাইপ করা, ছাপানো ,কেন্দ্রে প্রেরণ এর কোনও কিছুতেই কোচিং সেন্টারের সংশ্লিষ্টতা নেই। এছাড়া পরীক্ষার খাতা পরীক্ষকদের মধ্যে বিতরণ নম্বর প্রদানসহ যত কর্মকাণ্ড আছে তাতেও কোচিং সেন্টারের কোনও ভূমিকা নেই।
২০১৭ খ্রিষ্টাব্দের ডিসেম্বর থেকে ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রশ্নফাঁসের অভিযোগে ১৯০ জন গ্রেপ্তার হয়েছেন। তাদের কেউই কোচিং সেন্টারের সঙ্গে জড়িত নন। তাহলে কেন কোচিং সেন্টারগুলো বন্ধ রাখা হচ্ছে?
সংগঠনটির মুখপাত্র ও উদ্ভাসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহমুদুল হাসান সোহাগ সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘আমরা সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছি। বহুবার চিঠিও দিয়েছি। প্রত্যেক চিঠিতে একটাই দাবি, দেশের সব কোচিং সেন্টার একটি নীতিমালার অধীনে আনা হোক। সরকার নীতিমালা করলেই সেন্টারগুলো একটি প্ল্যাটফর্মে আসতে বাধ্য হতো।’ কোচিং সেন্টারগুলো শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ফি আদায় করে এমন অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘স্বাস্থ্য খাতের মতো শিক্ষাও একটি সেবা। আর সেবার মূল্য আছে। এর মূল্যমানও বিভিন্ন রকমের হবে। আমরা দোষী হব তখনই যখন দেখব, যে টাকা নিচ্ছি তার বিনিময়ে করা অঙ্গীকার পালন করছি না।’
কোচিং বিষয়ে সম্প্রতি হাইকোর্টের দেয়া রায়ে ফ্রিল্যান্স কোচিং চালু রাখা ও কোচিং বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির দেয়া সাম্প্রতিক বক্তব্যের বরাত দিয়ে আসছে ১ এপ্রিল এইচএসসি পরীক্ষার সময় ফ্রিল্যান্স কোচিং খোলা রাখার নির্দেশ দেয়ার আহ্বান জানান নেতারা।
কোচিং সম্পর্কিত সরকারের জারি করা নীতিমালা সরকারি ও এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের জন্য প্রযোজ্য ফ্রিল্যান্স কোচিং সেন্টারের জন্য নয়, যা হাইকোর্ট সুস্পষ্টভাবে বলে দিয়েছেন। এরপর প্রশ্নফাঁস ঠেকানোর অজুহাতে ঢালাওভাবে সব কোচিং সেন্টার বন্ধ রাখা যুক্তিযুক্ত হবে না বলে মত প্রকাশ করেন শ্যাডো এডুকেশন (ছায়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান) এসোসিয়েশনের নেতারা।
সম্প্রতি বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রশ্নফাঁসে অভিযুক্ত ও সিআইডি কর্তৃক গ্রেফতারকৃতদের তালিকায় কোনও ফ্রিল্যান্স কোচিং সেন্টারের কেউ নেই। সদ্য সমাপ্ত এসএসসি পরীক্ষায় টাঙ্গাইলে ধরা পড়া কেন্দ্রসচিব কিন্তু এমপিওভুক্ত শিক্ষক। এমন অনেক উদাহরণ তুলে ধরেন তারা।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, এসোসিয়েশন অব শ্যাডো এডুকেশন বাংলাদেশের আহ্বায়ক ইমাদুল হক, যুগ্মা আহ্বায়ক মাহামুদুল হাসান সোহাগ, শমসে আরা খান ডলি, মো. কামাল পাটোয়ারি, মো. আকমল হোসেন, মো. মাহবুব আরেফিন, পলাশ সরকার প্রমুখ