পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্থিরতা: প্রশাসনের সঙ্গে বিরোধ ভালো লক্ষণ নয় - দৈনিকশিক্ষা

পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্থিরতা: প্রশাসনের সঙ্গে বিরোধ ভালো লক্ষণ নয়

দৈনিক শিক্ষা ডেস্ক |

হঠাৎ করেই কয়েকটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। রোববার চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে ক্যাম্পাস রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। এর জের ধরে ছাত্রলীগের একাংশ কর্তৃক অবরোধের ডাক দেয়ার পর সোমবার দ্বিতীয় দিনের মতো চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কার্যত অচল হয়ে পড়ে।

জানা যায়, মামুলি ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত ৩১ মার্চ ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের কর্মীরা সংঘর্ষে জড়ালে পরদিন বিভিন্ন হলে তল্লাশি চালিয়ে বিপুলসংখ্যক গুলি ও ধারালো অস্ত্র উদ্ধার করে পুলিশ। এ সময় ছয়জনকে গ্রেফতার করা হয়। এ ঘটনার জের ধরেই ঘটেছে রোববারের ঘটনা। ছাত্রলীগের একটি অংশ এখন গ্রেফতারকৃত ছয় কর্মীর মুক্তি, উপাচার্য ও প্রক্টরের পদত্যাগ এবং হাটহাজারী থানার ওসির অপসারণ দাবি করছে। দেখা যাচ্ছে, সংঘর্ষটি ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে শুরু হলেও বিরোধটি এখন গিয়ে দাঁড়িয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে।

বস্তুত এ মুহূর্তে কয়েকটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়েই এ ধরনের পরিস্থিতি বিরাজ করছে। যেমন, উপাচার্যের বিরুদ্ধে অনাস্থা জানিয়ে শিক্ষার্থীরা আন্দোলনে নামায় প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে অচল রয়েছে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়। এদিকে গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে দুই শিক্ষার্থীকে যৌন নিপীড়ন করার অভিযোগ উঠেছে শিক্ষকের বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত শিক্ষকের শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। ওদিকে দিনাজপুরের হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-প্রশাসন দ্বন্দ্বের কারণে গত আড়াই মাস ধরে ক্লাস ও পরীক্ষা হচ্ছে না। ডাকসু নির্বাচনকে ঘিরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েও তৈরি হয়েছিল অস্থিরতা।

যখনই কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে অচলাবস্থা দেখা দেয়, এর মাশুল দিতে হয় মূলত সাধারণ শিক্ষার্থীদের। কারণ এর ফলে সেশনজট সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়। এতে বিপাকে পড়েন শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা। অন্যদিকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ হয় বিঘ্নিত। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের নিজেদের মধ্যে মতাদর্শগত বা স্বার্থের দ্বন্দ্ব নতুন নয়। এ ধরনের পরিস্থিতি সামাল দিয়ে শিক্ষা কার্যক্রম নির্বিঘ্ন রাখার জন্যই পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে রয়েছে স্বায়ত্তশাসিত শক্তিশালী প্রশাসন।

বিশ্ববিদ্যালয়ে যে ঘটনাই ঘটুক না কেন, তা সমাধানের দায়িত্ব মূলত প্রশাসনের ওপরই বর্তায়। সেখানে প্রশাসন নিজেই যদি বিরোধের কারণ হয় অথবা প্রশাসনের বিরুদ্ধে অনাস্থা তৈরি হয়, সেক্ষেত্রে যে প্রশ্নটি বড় হয়ে দেখা দেয় তা হল- কোনো সমস্যা দেখা দিলে এর সমাধান করবে কে? বস্তুত প্রশাসনের সঙ্গে শিক্ষার্থী বা শিক্ষকদের বিরোধ সৃষ্টি মোটেই ভালো লক্ষণ নয়। এ অবস্থার দ্রুত অবসান হওয়া দরকার।

আমরা আশা করব, যেসব বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্থিতিশীলতা দেখা দিয়েছে সেসব প্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে দ্রুত অচলাবস্থার অবসানে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করবে প্রশাসন। যেসব ক্ষেত্রে প্রশাসনের বিরুদ্ধে অনাস্থা তৈরি হয়েছে, সেসব ক্ষেত্রে সরকারকে এর কারণ খতিয়ে দেখে নিতে হবে ব্যবস্থা। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যাতে দলীয় প্রভাবমুক্ত থেকে কাজ করতে পারে, সেদিকেও লক্ষ রাখা দরকার।

সূত্র: যুগান্তর

শিক্ষায় বরাদ্দ বেড়েছে, আরো বাড়বে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha শিক্ষায় বরাদ্দ বেড়েছে, আরো বাড়বে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সমাবর্তনের অজুহাতে সনদ আটকে রাখা যাবে না - dainik shiksha সমাবর্তনের অজুহাতে সনদ আটকে রাখা যাবে না হিটস্ট্রোকে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু - dainik shiksha হিটস্ট্রোকে স্কুলছাত্রীর মৃত্যু চুয়েটে আন্দোলন স্থগিত, সড়কে যান চলাচল শুরু - dainik shiksha চুয়েটে আন্দোলন স্থগিত, সড়কে যান চলাচল শুরু প্রাথমিকের প্রশ্ন ফাঁসে অল্পদিনে কয়েকশ কোটি টাকা আয় - dainik shiksha প্রাথমিকের প্রশ্ন ফাঁসে অল্পদিনে কয়েকশ কোটি টাকা আয় রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়: হাইকোর্ট - dainik shiksha রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়: হাইকোর্ট কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0035831928253174