পরিবেশগত ছাড়পত্রের শর্ত ভঙ্গ ও পাহাড় কাটার অভিযোগে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়কে ৯ লাখ পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। একই সঙ্গে দুটি ফার্নিচার মার্ট ও একটি আইসক্রিম ফ্যাক্টরিকেও জরিমানা করা হয়। সোমবার (৯ মার্চ) চট্টগ্রাম কার্যালয়ে শুনানি শেষে এই জরিমানা করে পরিবেশ অধিদপ্তর। পাহাড় কাটার দায়ে এই প্রথম কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করা হলো।
জরিমানার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম কার্যালয়ের পরিচালক মোহাম্মদ মোয়াজ্জম হোসাইন। তিনি এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছেন, পরিবেশ অধিদপ্তর গতকাল পরিবেশগত ছাড়পত্রের শর্ত ভঙ্গ ও পাহাড় কর্তনের দায়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারকে ৯ লাখ পাঁচ হাজার টাকা, হাটহাজারী উপজেলার শেরেবাংলা ফার্নিচার মার্টকে এক লাখ ৬০ হাজার, একই উপজেলার মেসার্স হানিফ এন্টারপ্রাইজকে এক লাখ ৬০ হাজার এবং ফেনী সদরের মেসার্স সনি আইসক্রিম ফ্যাক্টরিকে ১০ হাজার টাকাসহ মোট ১২ লাখ ৩৫ হাজার টাকা জরিমানা করে। তিনি বলেন, পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ১৯৯৫-এর ৭ ধারায় এই জরিমানা করা হয়।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি অধিদপ্তরের একটি দল বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস পরিদর্শনে গিয়ে বায়োলজিক্যাল সায়েন্স এলাকার পেছনে পাহাড় ও টিলা কাটার প্রমাণ পায়। ওই এলাকায় বিপুলসংখ্যক গাছ কাটারও প্রমাণ পায় তারা। এরপর ২৬ ফেব্রুয়ারি অধিদপ্তরের এক নোটিশে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে শুনানিতে তলব করা হয়। গতকাল অধিদপ্তরের শুনানিতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের এস্টেট শাখার ডেপুটি রেজিস্ট্রার মাহবুব হারুন চৌধুরী এবং ভারপ্রাপ্ত নিরাপত্তা প্রধান মো. বজল হক উপস্থিত ছিলেন।
পরিবেশ অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম অঞ্চলের পরিচালক মোহাম্মদ মোয়াজ্জম হোসাইন বলেন, ‘শুনানিতে উপস্থিত বিশ্ববিদ্যালয়ের দুজন প্রতিনিধি বলেছেন পাহাড় ও গাছ কাটার সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় জড়িত নয়। তাদের প্রশ্ন করেছি, আপনাদের সীমানার মধ্যে পাহাড় ও গাছ কাটা হলো, আপনারা কী মামলা করেছেন? তাঁরা স্বীকার করেছেন, তাঁরা কোনো মামলা করেননি।’
মোহাম্মদ মোয়াজ্জম হোসাইন বলেন, ‘দুই প্রতিনিধি জানিয়েছেন, প্রক্টরিয়াল বডির লিখিত আদেশ পেয়ে তাঁরা শুধু গাছ নেওয়ার জন্য গেট পাস দিয়েছিলেন। যারা গাছ কেটেছে তারাই পাহাড় কেটে রাস্তা করেছে। শুনানি শেষে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে ৯ লাখ পাঁচ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ নির্ধারণ করে তা এক সপ্তাহের মধ্যে পরিশোধ করতে বলা হয়েছে।’