বগুড়ার পুণ্ড্র ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির এক শিক্ষার্থী পুলিশের লাঠির আঘাতে আহত হলে গতকাল শুক্রবার বিকেলে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে মহাসড়ক অবরোধ করেন।
বগুড়ার পুণ্ড্র ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির এক শিক্ষার্থী পুলিশের লাঠির আঘাতে আহত হলে গতকাল শুক্রবার বিকেলে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে মহাসড়ক অবরোধ করেন। বগুড়ায় হাইওয়ে পুলিশের লাঠির আঘাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী আহত হওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে উদ্ভূত পরিস্থিতির মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় বাসস্ট্যান্ড স্থাপনের দাবি জানানো হয়েছে। আহত ছাত্রী টিএমএসএস পরিচালিত পুণ্ড্র ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির বিবিএ প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী।
ছাত্রী আহত হওয়ার ঘটনায় গতকাল শুক্রবার বিক্ষোভ, অবরোধের পর আজ শনিবার সকালে পুণ্ড্র ইউনিভার্সিটির আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বাসস্ট্যান্ড স্থাপনের দাবিতে বগুড়ায় সড়ক ও জনপথ বিভাগের কার্যালয় এবং হাইওয়ে পুলিশের কাছে দুটি স্মারকলিপি পেশ করেন।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র সোহানুর রহমান এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এ কে এম আজাদ-উদ-দৌলা প্রধানের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা স্মারকলিপি পেশ করেছেন।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানান, শহর থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরে বিশ্ববিদ্যালয়টির অবস্থান হলেও যাতায়াতের কোনো সুবিধা নেই। বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত কোনো বাস যায় না। হাজার হাজার শিক্ষার্থী ইজিবাইকে করে বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতে বাধ্য হন। হাইওয়েতে ইজিবাইক চলাচলে বাধা দিয়ে থাকে হাইওয়ে পুলিশ।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, পুলিশ, শিক্ষার্থী ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গতকাল ক্লাস শেষে পুণ্ড্র ইউনিভার্সিটির ছাত্রী তাসমিয়া জাহান বিশ্ববিদ্যালয়ের গোকুল ক্যাম্পাস থেকে একটি ইজিবাইকে চড়ে বগুড়া শহরের দিকে যাচ্ছিলেন। শহরের মাটিডালি এলাকায় হাইওয়ে পুলিশ মহাসড়কে চলাচল নিষিদ্ধ ইজিবাইক থামাতে গিয়ে হাতে থাকা লাঠি দিয়ে গাড়িতে আঘাত করেন। এতে লাঠির আঘাত লাগে ইজিবাইকের যাত্রী তাসমিয়ার। একপর্যায়ে পুলিশ ইজিবাইক ধাক্কা দিয়ে উল্টে দিলে তাসমিয়া পড়ে গিয়ে পায়ে আঘাত পান।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীকে লাঠি দিয়ে আঘাত ও অপদস্থ করার খবর ক্যাম্পাসে ছড়িয়ে পড়লে ঘটনার প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা গতকাল বিকেল চারটার দিকে গোকুল এলাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে মহাসড়ক অবরোধ করেন। এতে মহাসড়কের মহাস্থান থেকে মাটিডালি পর্যন্ত দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। খবর পেয়ে বগুড়া জেলা পুলিশ ও হাইওয়ে পুলিশের কর্মকর্তারা জড়িত পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহারের ঘোষণা দিলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
পুণ্ড্র ইউনিভার্সিটির উপাচার্য এ কে এম আজাদ-উদ-দৌলা প্রধান বলেন, পুলিশ এসে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক শেষে ঘটনার সঙ্গে জড়িত পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহারের ঘোষণা দিলে শিক্ষার্থীরা অবরোধ প্রত্যাহার করে নেন। এর মধ্য দিয়ে বিষয়টি মিটমাট হয়ে যায়।
এ ঘটনার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই) বিভাগের চতুর্থ বর্ষের রকিমুজ্জামান রকি নামের এক শিক্ষার্থী নিজেকে ছাত্রলীগ নেতা পরিচয় দিয়ে পুলিশকে ক্ষমা চাইতে বললে বগুড়া সদর থানা-পুলিশ তাঁকে আটক করে।
বগুড়া সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সনাতন চক্রবর্তী জানান, ওই শিক্ষার্থী মদ্যপান করে মাতলামি করায় তাঁকে আটক করা হয়।
আজ বগুড়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম বদিউজ্জামান জানান, জিজ্ঞাসাবাদের পর গতকাল দিবাগত রাত ১২টার দিকে আটক ছাত্রকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।