পূর্ববিরোধের জেরে সিলেট নগরের টিলাগড় এলাকায় অভিষেক দে দ্বীপ (১৮) নামে ছাত্রলীগের এক কর্মীকে হত্যা করার অভিযোগ উঠেছে আরেক ছাত্রলীগ কর্মীর বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) রাতে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় জড়িত সমুদ্র রায় সৈকত (২০) নামের ওই ছাত্রলীগকর্মীকে আহত অবস্থায় আটক করেছে পুলিশ।
নিহত দ্বীপ গ্রিনহিল এস্টেট কলেজের এইচএসসি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ও সাদিপুর এলাকার বাসিন্দা দিপক দের একমাত্র ছেলে।
জানা যায়, সমুদ্র রায় সৈকতের নেতৃত্বেই হামলার ঘটনা ঘটে। তাঁকে পুলিশ পাহারায় সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। দ্বীপ ও সৈকত দুজনই সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুব ও ক্রীড়াবিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট রণজিত সরকারের অনুসারী ছাত্রলীগের কর্মী বলে জানা গেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় টিলাগড় এলাকায় সরস্বতী পূজার বিরোধ নিয়ে সৈকত ও দ্বীপ তর্কাতর্কিতে জড়িয়ে পড়েন। একপর্যায়ে সাবেক ছাত্রনেতা সঞ্জয় চৌধুরী দুজনকে ডেকে নিয়ে বিষয়টি মীমাংসা করে দেন। রাত সাড়ে ৯টার দিকে হঠাৎ টিলাগড় পয়েন্টসংলগ্ন এলাকায় দুই পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। আশপাশের লোকজন কিছু বুঝে ওঠার আগেই দেশিয় অস্ত্র ও ছুরিকাঘাতে সৈকত, দ্বীপ ও সৌরভ রক্তাক্ত জখম হন। তাঁদের আর্তচিৎকারে লোকজন এগিয়ে আসে। ছুরিকাঘাতে ছাত্রলীগের কর্মী দ্বীপের ঘাড়ের বাঁ পাশ রক্তাক্ত জখম হয়। এ সময় প্রচুর রক্তক্ষরণ হলে তিনি সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়েন। সহপাঠীরা তাঁকে ওসমানী হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক রাত সাড়ে ১০টার দিকে তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় আরেক আহত শুভ কর সৌরভকেও ওসমানী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহত সৌরভ ও সৈকতের বাসা নগরের গোপালটিলা এলাকায়।
জানা গেছে, কয়েক দিন আগে সরস্বতীপূজার সময় স্থানীয় গোপালটিলায় একই সংঘের সঙ্গে পূজা উদযাপন করেন দ্বীপ ও সৈকত। কিন্তু পূজার পরে আয়-ব্যয়ের হিসাব নিয়ে সৃষ্টি হয় দ্বন্দ্ব। পরে আয়-ব্যয়ের হিসাব থেকে সৃষ্ট এ দ্বন্দ্ব গড়ায় সিনিয়র-জুনিয়রে। কয়েক দিন ধরে তাঁদের মধ্যে বিষয়টি নিয়ে কয়েক দফা ঝামেলা হয়েছে। এরই জের ধরে বৃহস্পতিবার রাতে মারামারিতে জড়ায় দুই পক্ষ।
নগরের শাহপরান থানার ওসি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, পূজার টাকা নিয়ে বিবাদে দুই পক্ষ একে অপরের ওপর হামলা চালায়। এ সময় অভিষেক দে দ্বীপ নিহত এবং পাল্টা হামলায় সৈকত আহত হন। চিকিৎসাধীন থাকায় এখনই সৈকতকে জিজ্ঞাসাবাদ করা যাচ্ছে না। ওসি জানান, হত্যার ঘটনায় নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।