হঠাৎ করে ভারত পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করে দেয়ায় এর প্রভাব পড়েছে বাংলাদেশের বাজারে। এতে হিমশিম খাচ্ছে সাধারণ মানুষ। এই পরিস্থিতিতে দিল্লির এক অনুষ্ঠানে রসিকতার সুরেই ভারত সরকারের সমালোচনা করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ভবিষ্যতে রপ্তানি বন্ধের মত সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে ভারত সরকার যেন প্রতিবেশীদের আগে থেকে জানিয়ে প্রস্তুতি নেওয়ার সুযোগটুকু দেয়, সে আহ্বান জানান তিনি।
চার দিনের ভারত সফরের দ্বিতীয় দিন শুক্রবার (৪ সেপ্টেম্বর) নয়া দিল্লির আইটিসি মৌর্য হোটেলে বাংলাদেশ-ভারত বিজনেস ফোরামের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দেয়ার সময় একথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বক্তৃতার এক পর্যায়ে তিনি হিন্দি ভাষায় বলতে শুরু করেন, পেঁয়াজ মে থোড়া দিক্কত হো গিয়া হামারে লিয়ে। মুঝে মালুম নেহি, কিউ আপনে পেঁয়াজ বন্ধ কর দিয়া! ম্যায়নে কুক কো বোল দিয়া, আব সে খানা মে পেঁয়াজ বন্ধ কারদো। (পেঁয়াজ নিয়ে একটু সমস্যায় পড়ে গেছি আমরা। আমি জানি না, কেন আপনারা পেঁয়াজ বন্ধ করে দিলেন। আমি রাঁধুনীকে বলে দিয়েছি, এখন থেকে রান্নায় পেঁয়াজ বন্ধ করে দাও।)
অনুষ্ঠানে উপস্থিত দুই দেশের ব্যবসায়ী প্রতিনিধিরা প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তৃতার সাড়া দেন হাসি আর করতালিতে।
কেবল বাংলাদেশ নয়, দক্ষিণ এশিয়ার অনেক দেশকেই পেঁয়াজের যোগানের জন্য বিশ্বের সবচেয়ে বড় রপ্তানিকারক ভারতের ওপর নির্ভর করতে হয় অনেকাংশে। বৃষ্টি আর বন্যায় এবার পেঁয়াজের ফলন মার খাওয়ায় ভারত সরকার গত ২৯ সেপ্টেম্বর হঠাৎ করেই পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধের ঘোষণা দিলে কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ঢাকার বাজারে প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম দ্বিগুণ বেড়ে ১২০ টাকায় পৌঁছায়। প্রতিদিনের রান্নায় বহুল ব্যবহৃত এই সামগ্রীর এমন দামে ক্রেতাদের মনে তৈরি হয় উদ্বেগ, বাজারে তৈরি হয় অস্থিরতা। এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ সরকার মিশর, তুরস্ক ও মিয়ানমার থেকে পেঁয়াজ আমদানির পাশাপাশি অতিরিক্ত দামে পেঁয়াজ বিক্রি বন্ধ করতে পাইকারি বাজারগুলোতে অভিযান শুরু করে। টিসিবির মাধ্যমে সারা দেশে ট্রাকে ন্যায্য মূল্যে পেঁয়াজ বিক্রি হয়।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ভারতের শিল্প ও রেলপথ মন্ত্রী পিযূস গয়াল, বাংলাদেশের বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, এফবিসিসিআই সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম, অ্যসোসিয়েটেড চেম্বারস অব কমার্স অব ইনডিয়ার (অ্যাসোচাম) সভাপতি বালকৃষাণ গোয়েঙ্কাসহ দুই দেশের ব্যবসায়ী প্রতিনিধিরা।